স্পোর্টস ডেস্ক, এইউজেডনিউজ২৪: বৃষ্টি বিরতিতে ৭ ওভার কমে আসা ম্যাচে জিম্বাবুয়েকে ৩৪২ রানের লক্ষ্য দিয়েছে বাংলাদেশ। সিলেটে তৃতীয় ওয়ানডেতে ৪৩ ওভারে ৩ উইকেটে ৩২২ রান তোলে টাইগাররা। বৃষ্টি আইনে সফরকারীদের পরিবর্তিত লক্ষ্য দাঁড়ায় ৪৩ ওভারে ৩৪২। জিম্বাবুয়েকে ৩৪২ রানের টার্গেট দিলো বাংলাদেশ
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে টস হেরে ব্যাটে নেমে শুক্রবার সাবধানী শুরু করে বাংলাদেশ। পাওয়ার প্লেতে তামিম-লিটন তোলেন ১০ ওভারে ৫৩ রান। ধীরে ধীরে হাত খুলতে থাকেন দুজনে।
বাংলাদেশ-৩২২/৩ (৪৩)
রানের গতি বাড়িয়ে দুজনে যখন এগোচ্ছিলেন বড় সংগ্রহের দিকে, ৩৩.২ ওভারের সময় নামে বৃষ্টি। ততক্ষণে উদ্বোধনীতে পৌনে দুইশত রানের জুটি গড়ে ফেলেছেন লিটন দাস ও তামিম ইকবাল। গড়েছেন ওপেনিংয়ে জুটির রেকর্ড।
প্রথম ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান লিটন পথে ক্যারিয়ারের তৃতীয় শতক তুলেছেন। ১১৪ বলে ১৩ চারে তিনঅঙ্কে নাম লেখান। ১০২ রানে অপরাজিত থেকে বৃষ্টি বিরতির পর মাঠে আসেন লিটন। ফিরে চালান তাণ্ডব।
ডাবল সেঞ্চুরির আশাও জাগিয়েছিলেন লিটন। শেষপর্যন্ত পারেননি। ১৪৩ বলে ১৬ চার ও ৮ ছক্কায় ফিরেছেন ১৭৬ রান করে। ওয়ানডেতে বাংলাদেশের কোনো ব্যাটসম্যানের এটিই সর্বোচ্চ সংগ্রহ। গত ম্যাচে তামিমের ১৫৮ রানকে টপকে গেছেন। গত ম্যাচে তামিমের ৭ ছক্কা ছাড়িয়ে ইনিংসে সর্বোচ্চ ৮ ছক্কার দেশি রেকর্ডও গড়েছেন ডানহাতি ওপেনার।
অন্যপ্রান্তে গত ম্যাচে দেড়শ ছাড়ানো ইনিংস খেলা তামিম ক্যারিয়ারের ১৩তম সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন। ৬০ পঞ্চাশ ছুঁয়ে ৯৮ বলে শতক, শেষে ১২৮ রানে অপরাজিত থাকেন। ৭ চার ও ৬ ছক্কায় ১০৯ বলে সাজানো ইনিংস। ব্যাক টু ব্যাক সেঞ্চুরি।
প্রথমবার কোনো ওয়ানডেতে সেঞ্চুরি পেলেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার। তাদের হয়েছে দুই রেকর্ড। উদ্বোধনীতে বিদ্যুৎ-অপির ২১ বছর আগের রেকর্ড ভেঙেছেন তামিম-লিটন জুটি। ১৯৯৯ সালের ২৫ মার্চ, ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে মেরিল কাপের ম্যাচে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১৭০ রানের ওপেনিং জুটি গড়েছিলেন শাহরিয়ার হোসেন বিদ্যুৎ ও মেহরাব হোসেন অপি।
দুই দশক আগের রেকর্ড টপকে তামিম-লিটন সিলেটে লিখলেন নতুন ইতিহাস। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই ওপেনিং জুটিতে ছাড়িয়ে গেলেন সবাইকে। বিচ্ছিন্ন হওয়ার আগে দুজনে যোগ করেন ২৯২ রান।
তাতে তামিম-লিটন গড়েছেন ওয়ানডেতে যেকোনো উইকেটে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের জুটির রেকর্ডও। দুজনে বিচ্ছিন্ন হয়েছেন তিনশর কাছে। এর আগে ২০১৭ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সাকিব আল হাসান ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ২২৪ রানের জুটিটি ছিল টাইগারদের যেকোনো উইকেটে সর্বোচ্চ।
শেষদিকে মাহমুদউল্লাহ ৩ ও অভিষিক্ত আফিফ ৪ বলে ৭ রানে ফেরেন।
এই ম্যাচ দিয়ে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক অধ্যায়ের সমাপ্তি টানছেন মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা। অধিনায়ক হিসেবে ওয়ানডেতে ৫০তম জয়ের সামনেও দাঁড়িয়ে ৩৬ বছর বয়সী মহাতারকা। সেটি ছুঁতে পারলে তিন ওয়ানডের সিরিজে সফরকারীদের হোয়াইটওয়াশ করেই থামবে টাইগাররা।
বৃহস্পতিবার ওয়ানডে দলের নেতৃত্ব ছেড়ে দেয়ার কথা জানান মাশরাফী। লাল-সবুজদের অধিনায়ক হিসেবে শুক্রবার শেষবার টসে নেমেছিলেন টাইগার ক্রিকেটের বহু সাফল্যের সারথি। তার অধীনে এই ম্যাচের আগ পর্যন্ত ৮৭ ম্যাচ খেলে বাংলাদেশ জিতেছে ৪৯টিতে। সাফল্যের হার ৫৭.৬৪ শতাংশ।
স্কোর: বাংলাদেশ ৩২২/৩ (৪৩) তামিম ১২৮*, লিটন ১৭৬, মাহমুদুল্লাহ ৩, আফিফ ৭; মুম্বা ৩/৬৯।