দুর্গাপূজার ছুটি বৃদ্ধি, সারাদেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় জড়িতদের বিচারসহ আট দফা দাবিতে মশাল মিছিল করেছে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এতে অংশ নেন বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট-এর নেতৃবৃন্দসহ শতাধিক হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন। সংগঠনের নির্বাহী মহাসচিব পলাশ কান্তি দে’র নেতৃত্বে এতে আরো উপস্থিত ছিলেন প্রধান সমন্বয়কারী ড. সোনালী দাসসহ প্রমূখ নেতৃবৃন্দ।
শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে মশাল মিছিল নিয়ে রাজু ভাস্কর্য-টিএসসির মেট্রোরেল স্টেশন হয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান সংলগ্ন রমনা কালী মন্দিরে গিয়ে শেষ করেন তারা।
এ সময় তারা, ‘জয় শ্রীরাম’, ‘সনাতনীদের একশন-ডাইরেক্ট একশন’, ‘আমার মন্দিরে হামলা কেন-প্রশাসন জবাব চাই’, ‘সকল কথার এক কথা-মানতে হবে আট দফা’- ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
মশাল মিছিলে অংশ নেওয়া হিমেল ধর নামের একজন বলেন, সারাদেশে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ওপর হামলা হচ্ছে। মন্দিরে হামলা হচ্ছে। আমরা এসব আর দেখতে চাই না।
মিছিলকারীরা বলেন, আমাদের ৮ দফার মধ্যে রয়েছে, সরকার পতনের পর সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনাগুলো দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে বিচার করা, সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা, সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টকে হিন্দু ফাউন্ডেশনে উন্নীত করা, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টকেও ফাউন্ডেশনে উন্নীত করা, দেবোত্তর সম্পত্তি পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ আইন প্রণয়ন, অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন যথাযথ বাস্তবায়ন এবং দুর্গাপূজায় ছুটি পাঁচ দিন করা।
সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার দাবিতে বিকাল থেকে শাহবাগ মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ করে বেশ কিছু সংগঠন। বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদ, জাগো হিন্দু পরিষদ, আর্য প্রতিনিধি সভা বাংলাদেশ, বাংলাদেশ সনাতন কল্যাণ জোট, জাতীয় হিন্দু মহাসংঘ ও ইসকনসহ সংহতি জানিয়ে তাতে অংশ নেয়। এরআগে, সকালে একই দাবিতে শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে সংগঠনগুলো। সাম্প্রদায়িক হামলার বিচার ও সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা আইন ও কমিশন গঠন করার বিষয়ে সরকারের আশ্বাস না পাওয়া পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলবে বলে জানান হিন্দু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাজন কুমার মিশ্র। তিনি বলেন, আমরা সরকারের কাছে আমাদের দাবির বিষয়ে স্মারকলিপি দিয়েছি, কিন্তু সরকার আমাদের দাবির বিষয়ে কর্ণপাত করেনি। তাই আমরা শাহবাগ অবরোধ করতে বাধ্য হয়েছি। দাবি না মানা পর্যন্ত আমাদের বিক্ষোভ চলবে। সন্ধ্যায় শাহবাগ থেকে বের হয় মশাল মিছিল।