সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের মেয়ে নাফিসা জুমাইনা মাহমুদ ও তাঁর স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা ১২১টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
এ ছাড়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) গাজী হাফিজুর রহমানের (লিকু) স্ত্রী রহিমা আক্তারের সম্পদ ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁর ছয়টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন বুধবার এ আদেশ দেন।
এর আগে গত ২৩ জুন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ ও তাঁর স্ত্রী নুরান ফাতেমার ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।
এর আগে গত ১৬ জানুয়ারি হাছান মাহমুদ, তাঁর স্ত্রী নুরান ফাতেমা, মেয়ে নাফিসা জুমাইনা মাহমুদসহ তাঁদের ছয়টি কোম্পানির নামে থাকা মোট ৮১টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দেন আদালত।
হাছান মাহমুদ ও তাঁর পরিবারের সদস্য ছাড়া যে ছয়টি কোম্পানির ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ হয়েছে, সেগুলো হচ্ছে দ্য বিসমিল্লাহ মেরিন সার্ভিসেস লিমিটেড, একাডেমি অব মেরিন এডুকেশন অ্যান্ড টেকনোলজি লিমিটেড, বিসমিল্লাহ মেরিন সার্ভিস, জেএএস লিমিটেড, বিসমিল্লাহ মেরিন সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড হোল্ডিংস লিমিটেড এবং অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশ সোলারস পাওয়ার লিমিটেড।
দুদকের পক্ষ থেকে আদালতকে জানানো হয়, বিগত সরকারের সাবেক মন্ত্রী ও বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকার সংসদ সদস্যদের বিভিন্ন অনিয়ম ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অনুসন্ধান করছে দুদক।
দুদকের পক্ষ থেকে আদালতকে জানানো হয়েছে, হাছান মাহমুদ ও তাঁর পরিবারের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ৬টি কোম্পানিতে ৭৫৩ কোটি ৩০ লাখ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে। বর্তমানে এসব কোম্পানির ব্যাংক হিসাবে ২৪ কোটি ৬৬ লাখ টাকা জমা আছে। এখন এসব টাকা উত্তোলনের চেষ্টা করছেন। আদালত শুনানি নিয়ে এসব ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দেন।
উল্লেখ্য, ৭ জুলাই সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) গাজী হাফিজুর রহমানের (লিকু) সম্পদ ক্রোকের আদেশ দেন আদালত।
দুদকের তথ্য অনুযায়ী, উত্তরায় গাজী হাফিজুর রহমানের একটি প্লট ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এর বাইরে তাঁর তিনটি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
এর আগে গত ১৪ জানুয়ারি জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের অভিযোগে গাজী হাফিজুর রহমানের (লিকু) বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।
অর্থ পাচার প্রতিরোধ আইনের একটি মামলায় বলা হয়েছে, গাজী হাফিজুর রহমান লিকুর ৩৩টি ব্যাংক হিসাবে ১৪৪ কোটি ৫৯ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে। এ ছাড়া হাফিজুর রহমানের স্ত্রী রহিমা আক্তারের ৯টি ব্যাংক হিসাবে ১২ কোটি ৭৪ লাখ ১৩ হাজার টাকা লেনদেনের তথ্য পেয়েছে দুদক।