সাহিত্য ও সংস্কৃতি ডেস্ক : গভীর সংকটে নিমজ্জিত দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গন। বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে বন্ধ হয়ে পড়েছে সব সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড। মঞ্চে আলো জ্বলছে না। মঞ্চকেন্দ্রিক অনুষ্ঠানকে যাঁরা পেশা হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন, তাঁরা কর্মহীন হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। কেউ কেউ পেশা টিকিয়ে রাখতে না পেরে ভিন্ন পেশায় জড়িয়ে পড়ছেন। স্থবিরতার কারণে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছে অনেক সাংস্কৃতিক সংগঠন। যেসব সংস্কৃতিকর্মী ভিন্ন পেশায় যুক্ত হয়ে পড়ছেন, যেসব সংগঠন নিষ্ক্রিয় হয়ে গেছে তারা কি আবার সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে ফিরতে পারবে, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। অনেকে ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কর্মকাণ্ড সচল রাখার চেষ্টা করছেন। কিন্তু মঞ্চের অনুষ্ঠানের বিকল্প হতে পারছে না।
গত বছরের মার্চ মাসে দেশে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ার পর ২৬ মার্চ থেকে দেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর বন্ধ হয়ে যায় থিয়েটার হল ও মঞ্চের অনুষ্ঠান। ফলে বন্ধ হয়ে যায় দেশের সংস্কৃতিচর্চা ও বিনোদনের সব কার্যক্রম। কোথাও কোনো অনুষ্ঠান হচ্ছে না। এমনকি শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে গিয়ে বন্ধ হয়ে যায় দলবদ্ধ অনুষ্ঠানের মহড়াও। অক্টোবর মাসের দিকে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হলে শিল্পকলা একাডেমির থিয়েটার হল ও মিলনায়তনগুলো সপ্তাহের দুই দিনের জন্য খুলে দেওয়া হয়। করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে চলতি বছরের ৩ এপ্রিল থেকে আবারও সব মিলনায়তন বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এরপর অনেক কিছুই চালু করা হলেও অনুষ্ঠানাদির ওপর বিধি-নিষেধ আরোপ বিদ্যমান রয়েছে। আবার কবে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড চালু হবে কেউ বলতে পারছেন না।
নিজেদের চর্চা ধরে রাখা, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড প্রবহমান রাখার জন্য বিকল্প হিসেবে অনেকে ভার্চুয়াল অনুষ্ঠান শুরু করেছেন। বিশেষ করে আলোচনা, সংগীত ও আবৃত্তির অনুষ্ঠান হচ্ছে ভার্চুয়ালি। কিন্তু মঞ্চনাটক ও পথনাটক প্রদর্শনী, যাত্রা, নৃত্যানুষ্ঠান, কনসার্ট—যেগুলো একাধিক শিল্পী-কর্মীর অংশগ্রহণমূলক, সেগুলো সম্পূর্ণই বন্ধ রয়েছে।
করোনাকালীন পরিস্থিতিতে সংগীতশিল্পী ও আবৃত্তিশিল্পীরা অনলাইনের জুম মিটিং এবং ফেসবুক লাইভে নিজেদের ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করছেন। অনলাইনে অনুষ্ঠান আয়োজনকে সংকটকালে একটি সম্ভাবনা হিসেবে দেখছেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। কালের কণ্ঠ’র সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, মহামারির মধ্যে সাংস্কৃতিক অঙ্গন তো বটেই; মানবজাতিই সংকটে আছে। এ অবস্থায় প্রথমত মানুষকে বেঁচে থাকতে হবে, আবার প্রবহমানতাও ধরে রাখতে হবে। এ জন্য ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিকল্প পথ বেছে নেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, শিল্পকলা একাডেমি করোনাকালে ‘করোনার বিরুদ্ধে শিল্প’ কর্মসূচির মাধ্যমে ৬৪ জেলার প্রায় ২০ হাজার শিল্পীকে নিয়ে অনলাইনে অনুষ্ঠান করেছে। এর মাধ্যমে শিল্পীদের কিছুটা হলেও চর্চার মধ্যে রাখা এবং প্রণোদনা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। তিনি বলেন, দেশে প্রায় তিন লাখ মানুষ রয়েছেন, যাঁদের জীবনধারণ সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের ওপর নির্ভরশীল। এই সংকটকালে তাঁদের কাছে পৌঁছতে পারলে ভালো হতো।
জানা গেছে, শিল্পকলা একাডেমির দিবসভিত্তিক রুটিন অনুষ্ঠানগুলো ভার্চুয়ালি আয়োজন করা সম্ভব হলেও অন্যান্য কর্মকাণ্ড সম্ভব হচ্ছে না। করোনাসংক্রমণের কারণে শিল্পকলা একাডেমির সবচেয়ে বড় সাংস্কৃতিক আয়োজন ‘দ্বিবার্ষিক এশীয় চারুকলা প্রদর্শনী, যেটি গত ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা সেটি এখনো হতে পারেনি। ‘বার্ষিক জাতীয় চারুকলা প্রদর্শনী’ আয়োজনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হলেও সেটি আয়োজন করা সম্ভব হচ্ছে না। একইভাবে ‘তৃতীয় বাংলাদেশ স্বল্পদৈর্ঘ্য ও প্রামাণ্য চলচ্চিত্র উৎসব ২০২১’ আয়োজনও কয়েকবার পেছানো হয়েছে। সর্বশেষ এ আয়োজনটির তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী বছরের ১৮-২৫ মার্চ। এই সময়ে করোনাকালীন বিধি-নিষেধ প্রত্যাহার করা না হলে এই উৎসবটিও নির্ধারিত সময়ে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত হবে বলে জানানো হয়েছে।
সংগীত সংগঠন সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ রায়ও মনে করেন, এই করোনাকালে ভার্চুয়াল আয়োজন সংস্কৃতিকর্মীদের কাছে অনেকটা আশীর্বাদের মতো এসেছে। সংগীতশিল্পীদের নিয়ে প্রায় সবগুলো দিবসভিত্তিক অনুষ্ঠান ভার্চুয়ালি আয়োজন করছেন তিনি। কিন্তু এই আয়োজনগুলোকে মঞ্চের বিকল্প ভাবতে পারছেন না। তিনি বলেন, ‘আমরা অনলাইনে যে আয়োজন করছি তা অবশ্যই মঞ্চের বিকল্প হিসেবে নয় বরং সংস্কৃতিকে বেগবান রাখার দায়িত্বে। কোনোটাই কোনোটার বিকল্প নয়। ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের দর্শক-শ্রোতা বিশ্বের যেকোনো স্থান থেকে যুক্ত হতে পারে। আর মঞ্চের দর্শক-শ্রোতা তো নির্দিষ্টসংখ্যক। মঞ্চে একজন শিল্পী তাঁর পূর্ণ নৈপুণ্য দেখাতে পারেন, ভার্চুয়ালি নয়। মঞ্চে দর্শকদের রি-অ্যাকশন বোঝা যায়, ভার্চুয়ালি এই সুযোগ কম। গানের ক্ষেত্রে অসুবিধা আরো অনেক। যন্ত্রসংগতে ঘাটতি, নেটের অসহযোগিতা ও পেশাদারি থাকে।’
আবৃত্তিশিল্পীরা সবচেয়ে বেশি সক্রিয় অনলাইন অনুষ্ঠান নিয়ে। বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আহকাম উল্লাহ জানিয়েছেন, করোনাকালে নিয়মিত অনলাইন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ঢাকা সিটির ৮০টি আর সারা দেশে ৪০০টির মতো আবৃত্তি সংগঠনকে সক্রিয় রাখা সম্ভব হচ্ছে।
শিল্পী-কর্মীর অংশগ্রহণমূলক অনুষ্ঠানের চর্চা সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। বিশেষ করে মঞ্চনাটক, পথনাটক, যাত্রাপালার কার্যক্রম সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। এ প্রসঙ্গে নাট্য নির্দেশক নাসির উদ্দীন ইউসুফ বলেন, ‘করোনাকালে শিল্পী বা তরুণ শিল্পকর্মীরা তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে অনলাইনে নানা ধরনের কার্যক্রম সফলভাবে চালাচ্ছেন। এর ফলে শিল্পসমাজ মতবিনিময়ের মধ্য দিয়ে এক ধরনের ঐক্য গড়ে উঠছে। কিন্তু নাটক তো অনলাইনে হওয়ার শিল্প নয়। একমাত্র মঞ্চনাটকেই তাত্ক্ষণিকভাবে ঘটে দর্শকের গ্রহণ ও প্রত্যাখ্যানের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া। মঞ্চনাটক এভাবেই তার স্বকীয়তা নিয়ে বেঁচে আছে। এর কোনো বিকল্প নেই।’
বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সেক্রেটারি জেনারেল কামাল বায়জিদ জানান, দীর্ঘ সময় থেকে কার্যক্রম বন্ধ থাকার কারণে ফেডারেশনভুক্ত ৩৪২টি নাট্য সংগঠনের মধ্যে ৪০-৫০টি খুবই নাজুক অবস্থার মধ্যে রয়েছে। এরা আর কখনো মঞ্চে ফিরতে পারবে কি না, সন্দেহ।
করোনা পরিস্থিতির কারণে দেড় বছর থেকে বন্ধ রয়েছে যাত্রাপালা প্রদর্শনী। যাত্রাভিনেতা ও গবেষক মিলন কান্তি দের তথ্য মতে, দেশের প্রায় পাঁচ হাজার পেশাদার যাত্রাশিল্পী রয়েছেন, যাঁরা যাত্রা মৌসুমের আয় দিয়ে সারা বছর জীবন ধারণ করেন। কিন্তু গত প্রায় দুই মৌসুম থেকে যাত্রা প্রদর্শনী না হওয়ায় পেশাদার যাত্রাশিল্পীরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
মঞ্চে আলো না জ্বলার কারণে বিপাকে আছেন স্টেজ শো করা পেশাদার সংগীতশিল্পীরাও। গানের মৌসুমে প্রতি মাসে আঁখি আলমগীরের মতো কণ্ঠশিল্পী গড়ে ১৫টি, কণার মতো শিল্পী ১০টির মতো স্টেজ শো করে থাকেন। সেগুলো এখন বন্ধ। কণ্ঠশিল্পী পরিষদ বাংলাদেশের যুগ্ম আহ্বায়ক শিল্পী কুমার বিশ্বজিতের ধারণা, ছোট-বড় মিলিয়ে পাঁচ শতাধিক কণ্ঠশিল্পী আছেন সংগীতাঙ্গনে। স্টেজ শো-ই এই শিল্পীদের মূল আয়ের জায়গা। কিন্তু দেড় বছর ধরে স্টেজ শো বন্ধ থাকায় এসব শিল্পী কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। এতে ২০০ কোটি টাকার আয় থেকে শিল্পীরা বঞ্চিত হয়েছেন বলে তাঁর ধারণা। একইভাবে বিপাকে আছে দেশের বাউলশিল্পীরা, যাঁরা গান গেয়েই জীবন ধারণ করেন।
সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ থাকার কারণে শিল্পীদের পাশাপাশি কলাকুশলী যাঁরা এটাকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন, তাঁরাও কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। বিশেষ করে যন্ত্রশিল্পী, রূপসজ্জাকর, শব্দ ও আলোক নিয়ন্ত্রণের কলাকুশলীরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকার কারণে যে স্থবিরতা নেমে এসেছে, তা কাটিয়ে সাংস্কৃতিক অঙ্গন আবার স্বাভাবিক পর্যায়ে ফিরতে পারবে কি না, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডকে কেন্দ্র করে যাঁরা পেশা হিসেবে নিয়েছিলেন তাঁরা আর সেই পেশায় ফিরতে পারবেন কি না, তা নিয়ে শঙ্কাও দেখা দিয়েছে।
বাংলাদেশ পথনাটক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আহম্মেদ গিয়াস মনে করেন, যে সংস্কৃতিকর্মীরা করোনাকালে বিরূপ অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছেন। যেকোনো মানুষের সংকটে যে সংস্কৃতিকর্মীরা সবার আগেই এগিয়ে যেতেন এবার তাঁরা দেখলেন তাঁদের বিপদে কেউ এগিয়ে আসেনি। তাই অনেকেই গ্রামে ফিরে গেছেন। অনেকে বাধ্য হয়ে ভিন্ন পেশায় জড়িয়েছেন। যে কর্মী জীবন বাঁচাতে অন্য পেশায় চলে গেছেন, তিনি কি আবার সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে ফিরে আসতে পারবেন? না এলে তো একটা সংকট দেখা দেবে।
গবেষক মিলন কান্তি দে মনে করেন, সংকট গভীর থেকে গভীরতর হচ্ছে। যে যাত্রাশিল্পী মানমর্যাদা নিয়ে এত দিন যাত্রাপালা করে জীবন ধারণ করেছেন, এখন তিনি বাধ্য হয়ে অন্য পেশা বেছে নিচ্ছেন, তিন কি আর শিল্পের ধারায় ফিরতে পারবেন?
কণ্ঠশিল্পী কুমার বিশ্বজিতেরও একই শঙ্কা। ছয় মাস, এক বছর—এ রকম চলতে থাকলে অনেক শিল্পীই সংসার চালাতে অন্য কাজ খুঁজে নেবেন।
বিশ্বজিৎ রায়ের মতে, প্যান্ডামিকের সময় সংস্কৃতিকর্মীরা সবচেয়ে অবহেলিত ও কর্মহীন ছিলেন। সরকারি পর্যায়ে গত বছর এককালীন পাঁচ হাজার টাকা করে পেয়েছিলেন, এ বছর কিছুই পাননি। এই অবস্থায় সংস্কৃতিপ্রাণ কর্মীদের মধ্যে যে হতাশা বিরাজ করছে, তা অসহনীয়। সংগঠন টিকে থাকে সংস্কৃতিকর্মীদের নিয়ে। যাঁরা নিঃস্বার্থভাবে সংগঠনের জন্য শ্রম দেন, তাঁদের বাঁচিয়ে না রাখলে সংগঠন বাঁচবে না।
নাসির উদ্দীন ইউসুফের মতে, বিগত শতাব্দীর মহামারি বদলে দিয়েছিল পৃথিবী; ঠিক তেমনি করোনা বদলে দিয়েছে আমাদের একুশ শতকের জীবনযাপনের রীতি-সংস্কৃতি। ভবিষ্যতে করোনা প্রতিষেধক নিয়ে মানুষ হয়তো ফিরবে স্বাভাবিক জীবনযাপনে; কিন্তু যে পরিবর্তন ও অভিজ্ঞতা মানুষ এই মহামারি থেকে অর্জন করবে, তা নিশ্চিত বদলে দেবে সংস্কৃতি।
করোনাকালীন সংকটে গত বছর দেশের প্রায় ১০ হাজার সংস্কৃতিসেবীকে এককালীন পাঁচ হাজার টাকা করে সহায়তা দিয়েই দায়িত্ব শেষ করেছে সরকার। এ প্রসঙ্গে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ বলেন, দেশে কয়েক হাজার সাংস্কৃতিক সংগঠন নিজ নিজ অবস্থান থেকে সংস্কৃতিচর্চায় নিয়োজিত রয়েছে। এসব দলের বেশির ভাগ সদস্যই ছোট চাকরি, ব্যবসা, টিউশনি কিংবা মিডিয়ায় কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। আবার অনেকে রয়েছেন ছাত্র ও বেকার। করোনা সংকটের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এই সংস্কৃতিসেবী ও পরিবারগুলো ব্যাপক আর্থিক অনটনের মধ্যে দিন যাপন করছে। এরা যেকোনো সংকট-সমস্যায় মানুষের সহায়তায় এগিয়ে যায়। কিন্তু এখন নিজেরাই সমস্যায় পড়েছে, যেটা কাউকে বলতেও পারছে না আত্মমর্যাদার কারণে। সরকারেরই উচিত এই সংস্কৃতিসেবীদের বিপদের সময় পাশে দাঁড়ানো এবং নিয়মিত ভাতার ব্যবস্থা করা।