প্রকল্প বাস্তবায়ন ও বাজেট সহায়তার নামে বিভিন্ন উৎস থেকে অর্থ ধার করে থাকে সরকার। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে, জুন শেষে রাষ্ট্রীয় এসব ঋণের পরিমাণ ছাড়িয়েছে ৮৩ বিলিয়ন ডলার। যা তিন মাসে বেড়ে গেছে সোয়া চার বিলিয়নের ওপরে। তবে, এই ঋণ বৃদ্ধির পাশাপাশি এখন বড় চাপ তৈরি হয়েছে পরিশোধের ক্ষেত্রে।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে বিদেশি ঋণ এসেছে সাড়ে ৪৫ কোটি ডলার। বিপরীতে পরিশোধ করতে হয়েছে ৫৯ কোটি। অর্থাৎ, ধারের টাকা শোধ করতে হয়েছে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে ভর্তুকি দিয়ে। কেবল তাই নয়, রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রভাবে এই দুই মাসে বিদেশ থেকে প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে মাত্র ২ কোটি ডলার। যা বছর ব্যবধানে কমেছে ৯৮ শতাংশ। যদিও এতে উদ্বিগ্ন হওয়ার তেমন কিছু দেখছেন বিশ্লেষকরা।
এ বিষয়ে পলিসি রিচার্চ ইন্টিস্টিটিউট (পিআরআই) চেয়ারম্যান জাঈদি সাত্তার বলেন, জুলাই-আগস্ট মাসে যে ঘটনাগুলো ঘটেছে এর ফলে বিদেশিরা চলে গেছে। এখন স্থিতিশীলতা বিরাজ করছে, প্রতিশ্রুতিগুলো আবার বেড়ে যাবে।
অর্থনীতিবিদ ড. শাহাদাত হোসেন সিদ্দীকি বলেন, দেশের ভিতরে অস্থিরতা দেখে বিদেশিরা স্টপ হয়ে গেছে। তারা ঋণ দেবে কিনা, সেটা নিয়ে ভাবছে। একটু বিলম্ব করছে।
তথ্য অনুযায়ী, সবশেষ অর্থবছরে বিদেশি ঋণের পরিষেবা বাবদ মোট ব্যয় করতে হয়েছে ৩৩৫ কোটি ডলার। অথচ, সাত বছর আগেও এই অঙ্ক ছিল মাত্র ১১২ কোটি। অর্থাৎ, ৭ বছরে চাপ বেড়েছে ৩ গুণ। অন্যদিকে, মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিবৃতির পরিশোধসূচি অনুযায়ী, ২০২৬-২৭ নাগাদ এই পরিমাণ ৩১৬ কোটি ডলার বলা হলেও, তা ছাড়িয়ে গেছে ৩ বছর আগেই। এমন অবস্থায় সামনের দিনের ঋণের চাপ সামলাতে সরকারকে সতর্ক পদক্ষেপের পরামর্শ অর্থনীতিবিদদের।
প্রসঙ্গত, অর্থবছরের দুই মাসে ঋণের আসল হিসাবে পরিশোধ হয়েছে সাড়ে ৪১ কোটি ডলার। বিপরীতে, সুদের পেছনে ব্যয় হয়েছে ১৭ কোটি।