একসময়ে দিনে প্যাকেটের পর প্যাকেট সিগারেট খেয়ে ফাঁকা করে দিতেন। এখন ছুঁয়েও দেখেন না। আবার অনেকে মনে করেন, সিগারেট ছাড়া আর চাঁদকে ছোঁয়া—একই রকম কঠিন। তাদের মধ্যে কেউ-কেউ ‘ধূমপান’ ছাড়ার বিষয়টির সঙ্গে ‘অসম্ভব’ শব্দটিও যোগ করেছেন। কিন্তু এমন কেউ কেউ আছেন, যারা সিগারেট থেকে চিরতরে সরিয়ে নিয়েছেন নিজেদের। সে তালিকায় আছেন তাবত বলিউড সেলিব্রিটিদের নামও।
রজতাভ দত্ত
সিগারেট একেবারে ছেড়ে দিয়েছেন আমাদের বাংলার অভিনেতা রজতাভ দত্ত। একসময় এমনও ছিল, সিগারেট ছাড়া চলতে পারতেন না টালিপাড়ার জনপ্রিয় এ অভিনেতা। কিন্তু এখন তিনি তামাকমুক্ত জীবন কাটাচ্ছেন।
দিনে ১০০ সিগারেট খেতেন শাহরুখ খান
হিন্দি ছবির দুনিয়ায় যে তারকার ধূমপানের স্বভাব নিয়ে প্রচুর আলোচনা হয়েছে, তিনি আর কেউ নন বলিউড বাদশাহ শাহরুখ খান। তিনি ছিলেন চেইন স্মোকার। প্রচুর সিগারেট খেতেন। এমনও শোনা যায়, তিনি নাকি নিয়মিতই বিদেশে গিয়ে ফুসফুস ওয়াশ করিয়ে আসতেন। সেই শাহরুখ ৬০ ছোঁয়ার আগেই ছেড়ে দিলেন নিজের প্রিয় ‘কু’ স্বভাবটি।
এক জন্মদিনের পার্টিতে ঘোষণা করলেন, আর তামাক ছোঁবেন না। শাহরুখ জানিয়েছিলেন, দিনে কম করে হলেও ১০০ সিগারেটে টান দিতেন। তাতে পরবর্তী সময়ে তার শ্বাসের সমস্যাও দেখা দিয়েছে। ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সিগারেট ছাড়ার পরও শ্বাসকষ্ট থেকে পুরোপুরি মুক্তি পাননি কিং খান। সেই তিনি সিগারেট ছেড়ে দেবেন, কল্পনাও করতে পারেননি অনেকে। কিন্তু তিনি পেরেছেন। শাহরুখ মনে করেন ‘অসম্ভব’ বলে কিছুই নেই। কিং খানের এমন পদক্ষেপ সম্পর্কে জেনে অনুপ্রাণিত বহু অনুরাগী। শোনা যায়, তার ভক্তদের অনেকেই সিগারেট ছেড়েছেন।
সালমান খান:
ট্রাইজেমিনাল নিউরালজিয়া নামের এক ধরনের অসুখের কারণে সিগারেট ছাড়েন বলিউড সুপারস্টার সালমান খান।
নিয়মিত ধূমপানের কারণে শরীর খারাপ হতে শুরু করেছিল তারও। তিনিও ছিলেন শাহরুখের মতোই চেন স্মোকার। শরীরের কারণেই সিগারেট খাওয়া ত্যাগ করেছেন ভাইজান। সালমানের ট্রাইজেমিনাল নিউরালজিয়া নামের এক অসুখ হয়েছিল। সিগারেট থেকেই হয়েছিল। ফলে সুস্থ জীবন পেতে আগেই ত্যাগ করেন এই কু-অভ্যাস। এখন তিনি ভালো আছেন। সিগারেট থেকে দূরেও আছেন। ঠোঁটের কোণে আর ধরাননি সাদা কাঠি।
অর্জুন রামপাল: তার মনে হয়েছিল শরীরটা নিয়ে ছিনিমিনি খেলছেন
বোর্ডিংয়ে পড়ার সময়ে বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে সিগারেট খেতে শুরু করেন অর্জুন রামপাল। ২০২০ সালের প্যান্ডেমিক-আবহে চারদিকে যখন ফুসফুস নিয়ে সবাই চিন্তায়, অর্জুন হঠাৎই ঠিক করলেন আর কোনো দিনও ধূমপান করবেন না। সেই ছাড়লেন, আর ধরেননি। এক সাক্ষাৎকারে অর্জুন বলেও ছিলেন, ‘করোনার সময় মনে হলো, নিজের ফুসফুস ও শরীরটা নিয়ে ছিনিমিনি খেলছি। তাই ছেড়ে দিলাম। আর ধরিনি সেই নেশা।’
কঙ্কনা সেন শর্মা: মা হওয়ার পর সিগারেট ছাড়েন
মা হওয়ার পর সিগারেট ছেড়ে দিয়েছেন অভিনেত্রী কঙ্কনা সেন শর্মাও। তার আগে বহু বছর সিগারেটের নেশা করেছিলেন। কিন্তু ২০১১ সালে ছেলে হারুনের জন্মের পর কঙ্কনা সিদ্ধান্ত নিলেন আর ধূমপান করবেন না। তারপর থেকে আর সিগারেট ছুঁয়েও দেখেননি অপর্ণা সেনের কন্যা। স্বীকার করেছেন, এই সিদ্ধান্ত তাকে আরও ভালো জীবন পেতে সাহায্য করেছে।
সাইফ আলি খান: হার্ট অ্যাটাকের পর ভয় পেয়ে যান
৩৬ বছর বয়সে হার্ট অ্যাটাক হয় সাইফ আলি খানের। ২০০৭ সালে ঘটে এমন ঘটনা। বুকে তীব্র যন্ত্রণার পর অ্যাটাক হয়েছিল। ভীষণ ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন অভিনেতা। তৎক্ষণাৎ সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, আর কোনো দিনও সিগারেট ছোঁবেন না তিনি।
হৃতিক রোশন: তিনি নিজে কৃষ হলে পৃথিবীর থেকে নির্মূল করতেন তামাক
সিগারেট স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকারক-এমন সতর্ক বাণীর অর্থ বোঝার পর সিগারেট ছেড়েছিলেন হৃতিক রোশনও। ২০২০ সালে নিজেকে নন-স্মোকার হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন অভিনেতা। প্যান্ডেমিকের আবহে এমন ঘোষণা করে করোনার মতো সিগারেটকেও ‘ভাইরাস’-এর তকমা দিয়েছিলেন হৃতিক।
টুইট করে লিখেছিলেন, ‘আমি যদি সত্যি-সত্যি কৃষ হতাম, সবার প্রথমে সিগারেটকেই পৃথিবীর বুক থেকে নির্মূল করে দিতাম।’