ছোট-বড় নানা চরিত্রে দেখা গেলেও আগে সেভাবে পরিচিতি পাননি আনিয়া সিং। তবে ‘দ্য ব্যা***ডস অব বলিউড’-এর হাত ধরে এখন আলোচনায় এই তরুণ অভিনেত্রী। বিশেষ করে জেন-জি প্রজন্মের হৃদয় জয় করেছেন আনিয়া। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে নিজের অভিনীত চরিত্র ও শাহরুখ খানকে ঘিরে কিছু অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়েছেন তিনি। যশ রাজ ফিল্মসের ‘কয়েদি ব্যান্ড’ ছবির মাধ্যমে মূল নায়িকা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন আনিয়া। এরপর খো গায়ে হাম কাহাঁ ও স্ত্রী ২ ছবিতে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে তাঁকে দেখা গেছে। এই দুই ছবিতে তাঁর অভিনয় প্রশংসা কুড়িয়েছিল। ওটিটিতেও একাধিক সিরিজে অভিনয় করে দর্শকের মনে দাগ কাটেন তিনি। সব মিলিয়ে কোনো চরিত্রই আনিয়াকে খ্যাতির আলোয় আনতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত সেটি সম্ভব হয়েছে ‘দ্য ব্যা***ডস অব বলিউড’ সিরিজে ‘আসমান সিং’-এর ম্যানেজার চরিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে। বললে বাড়াবাড়ি হবে না, সিরিজে তাঁর অভিনীত ‘সানিয়া’ চরিত্রকে দর্শকেরা উজাড় করে ভালোবাসছেন।
জুম অনলাইনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আনিয়া বলেন, ‘একজন শিল্পী হিসেবে আমি চ্যালেঞ্জ নিতে ভালোবাসি। নতুন নতুন চরিত্র সৃষ্টি করতে ভালোবাসি। কোনো চরিত্রকে পর্দায় তুলে ধরার পুরো প্রক্রিয়া আমি ভীষণ উপভোগ করি। চরিত্রটির জন্য যে মানসিক প্রস্তুতি নিতে হয়, সেটাও আমার ভালো লাগে। কোনো চিত্রনাট্য পড়ার সময় যদি মনে হয় এর অংশ হতে চাই, তখনই আমি হ্যাঁ বলি। কখনো আবার কোনো বিশেষ পরিচালকের সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছা বা এক নতুন দুনিয়ার অংশ হওয়ার আকাঙ্ক্ষা থেকেই প্রকল্প করি। ‘স্ত্রী ২’ আর ‘খো গায়ে হাম কাহাঁ’র ক্ষেত্রেও তা–ই হয়েছিল।’
‘খো গায়ে হাম কাহাঁ’ ছবিতে কনটেন্ট ক্রিয়েটর ‘লালা’ চরিত্রে অভিনয়ের প্রসঙ্গে আনিয়া বলেন, ‘আমার অভিনীত সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং চরিত্র হলো লালা। কনটেন্ট ক্রিয়েটর এখন সর্বত্র, তাই চরিত্রটা আপাতদৃষ্টে সহজ মনে হতে পারে। কিন্তু লালা আমার থেকে একেবারেই ভিন্ন। সেটে যাওয়ার সময় অনেকবার ভয় হতো, চরিত্রটা ঠিকভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারব কি না। কিন্তু মজার বিষয় হলো, সেটে গিয়ে সত্যিই আমি যেন লালায় রূপান্তরিত হয়ে গিয়েছিলাম।’
‘স্ত্রী ২’ ছবিতে আনিয়াকে ‘চিট্টি’ নামের এক তরুণীর চরিত্রে দেখা গেছে। এই দুটি চরিত্রে অভিনয়ের জন্য ভাষার আলাদা প্রস্তুতি নিতে হয়েছিল।
আনিয়া বলেন, ‘আমি মোটেও তাদের মতো কথা বলি না। তাই আলাদা করে তাদের ভাষা শিখতে হয়েছে। তবে বাস্তবে লালা আর চিট্টির মতো অনেক মানুষের সঙ্গেই কথা বলেছি। কারণ, এখন সোশ্যাল মিডিয়া একটা বড় মাধ্যম। এখানে মানুষ একরকম ভাবমূর্তি তৈরি করে। কিন্তু বাস্তবে তারা কেমন, তা আমরা অনেক সময় জানিই না।’ নেটফ্লিক্সের দ্য ব্যা***ডস অব বলিউড দিয়ে পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন বলিউড সুপারস্টার শাহরুখ খানের ছেলে আরিয়ান খান। মুক্তির পর থেকেই সিরিজটি দর্শকের মন জয় করেছে। অভিষেকেই আরিয়ান প্রমাণ করেছেন, কিং খানের তিনি প্রকৃত উত্তরসূরি। অনেকের মতে, বাবার মতো তিনিও সাফল্যের সিঁড়ি বেয়ে এগিয়ে যাবেন। সিরিজে বলিউডের চাকচিক্যময় দুনিয়ার পাশাপাশি লুকানো অন্ধকার দিকও তুলে ধরা হয়েছে। এ সিরিজেই গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন আনিয়া।
এ কাজের সুবাদে শাহরুখ খানকে কাছ থেকে দেখার সুযোগ পান আনিয়া। কিং খান সম্পর্কে নিজের অনুভূতি জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘সুপারস্টার শাহরুখের বাইরেও বাবা হিসেবে উনি আমাকে বেশি ছুঁয়েছেন। নিঃসন্দেহে শাহরুখ খান অনেক বড় সুপারস্টার। কিন্তু আমি কেবল তাঁকে বাবা হিসেবে দেখতাম। কয়েক বছর আগে আমি বাবাকে হারিয়েছি। সন্তানদের সঙ্গে শাহরুখ স্যারের গভীর সম্পর্ক বারবার আমাকে আমার বাবার কথা মনে করিয়ে দিত। তখন বাবাকে ভীষণভাবে মিস করতাম। শাহরুখ স্যার তাঁর সন্তানদের প্রতি অদ্ভুত রকম যত্নশীল।’
শাহরুখের ব্যক্তিত্বের আরেকটা দিকও আনিয়াকে ভীষণভাবে অনুপ্রাণিত করেছে। তিনি বলেন, ‘আপনি কে, কোথা থেকে এসেছেন, শাহরুখ স্যারের কাছে সেটার কোনো গুরুত্ব নেই। তিনি সব সময় সামনের মানুষকে বিশেষ অনুভব করাবেন। আর তিনি জানেন কীভাবে মানুষকে যথাযথ গুরুত্ব দিতে হয়।’
দর্শক-সমালোচকের মতে, দ্য ব্যা***ডস অব বলিউড-এর সাফল্যের পর আনিয়ার সামনে খুলে যাবে আরও অনেক সুযোগের দরজা। আর সেখান থেকে তিনি লিখবেন আরও অনেক সাফল্যের গল্প।