স্পোর্টস ডেস্ক,এইউজেডনিউজ২৪: শান মাসুদ ও বাবর আজমের সেঞ্চুরিতে রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে দ্বিতীয় দিন শেষে বড় লিডের মঞ্চ গড়েছে পাকিস্তান। দিনভর বাংলাদেশের বোলারদের ভুগিয়ে ৭ উইকেট হাতে রেখে ১০৯ রানে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় দিন শেষ করেছে স্বাগতিকরা। প্রথম ইনিংসে জমিয়েছে ৩ উইকেটে ৩৪২ রান।
ঠিক ১০০ করে শান মাসুদ ফিরলেও ২ রানে জীবন দেয়া বাবর আজমকে ফেরাতে পারেনি সফরকারীরা। ১৪৩ রানে অপরাজিত আছেন এ মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যান। আবু জায়েদ রাহি ২টি ও তাইজুল ইসলাম ১টি করে উইকেট নিয়েছে।
বাংলাদেশ-২৩৩, পাকিস্তান-৩৪২/৩ (৮৭.৫) (দ্বিতীয় দিন শেষে)
বাবরের এই দেয়াল হয়ে টিকে থাকার পেছনে আছে সুযোগ হাতছাড়ার হতাশা। প্রতিপক্ষের যে উইকেটটি সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত হতে পারে, সেটি তুলে নেয়ার সুযোগ শুরুতেই পেয়েছিল টাইগাররা। কাজে লাগাতে পারেনি। ক্যাচ নিতে পারেননি ইবাদত। ক্যারিয়ারের পঞ্চম শতক তুলে নিয়েছেন বাবর। ১৯ চার ও এক ছয়ে ১৯২ বলের ইনিংস গড়ে দেড়শর কাছে দিনশেষ করেছেন।
জীবন যখন পান, বাবর তখন সবে ২ রানে। নেমে টানা ১৪ বল রান নিতে পারেননি। খোলস ঝেড়ে নড়েচড়ে দাঁড়ানোর আগেই বেড়িয়ে মারতে যেয়ে বাতাসে ভাসালের বল। টানা ডট বল খেলার চাপটাই হয়ত ঝেটিয়ে দিতে চেয়েছিলেন! বড় শটে ব্যাটে-বলে হল না ঠিকমতো। তাইজুলের বলে মিডঅফে ভাসল ক্যাচ, অনেকটা দৌড়ে তাতে হাত ছোঁয়ালেও তালুতে জমাতে পারেননি ইবাদত। পাকিস্তানের রান তখন ১০৭। পরে শানকে নিয়ে ১১২ রানের জুটি গড়ে দলীয় সংগ্রহ দুইশ পার করেছেন বাবর। পথে শান মাসুদ তুলেছেন সেঞ্চুরি। ওয়ানডে ঢংয়ে ৫৪ বলে ফিফটির পর টেস্ট মেজাজে ফিরে ১৫৮ বলে ছুঁয়েছেন শতক। তাইজুলের অসাধারণ এক ফুল লেংথ ডেলিভারিতে ড্রাইভ খেলতে যেয়ে বোল্ড হয়েছেন।
অথচ বাংলাদেশ একটি শিশুতোষ ভুল না করতে তিনঅঙ্কের ঘরে যাওয়া হয় না শানের! তখন ৮৬ রানে তিনি, রুবেলের বলে উইকেটের পেছনে লিটনের গ্লাভসে জমা পড়েছিলেন। কিন্তু বল যে স্বাগতিক ওপেনারের ব্যাট ছুঁয়ে গেছে সেটি বুঝতে পারেননি উইকেটরক্ষক লিটন, বোলার রুবেল বা নিকটের কোনো ফিল্ডারই। টিভি রিপ্লেতে স্নিকো মিটারের বিশ্লেষণ দেখে ভুল ভাঙে বাংলাদেশের। ততক্ষণে যা দেরি হওয়ার হয়ে গেছে।
সকালটা অবশ্য অন্যরকম ছিল। প্রথমদিনে প্রথম সেশনে বাংলাদেশের তিন ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়েছিল পাকিস্তান। দ্বিতীয় দিনে প্রথম সেশনে সফরকারীরা ফেরায় স্বাগতিকদের দুই ব্যাটসম্যানকে। জোড়া সাফল্য আনেন আবু জায়েদ রাহি।
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে ২৩৩ রানে অলআউট হয়ে যাওয়ার পর শুক্রবার আলোক স্বল্পতায় আর নামতে পারেনি পাকিস্তান। শনিবার শুরু থেকে ব্যাট করে বড় সংগ্রহের দিকে তারা। দিনের দ্বিতীয় ওভারে আবিদ আজমকে উইকেটের পেছনে লিটনের গ্লাভসে জমা করে প্রথম সাফল্য আনেন রাহি।
টাইগার পেসারের অফস্টাম্পের অনেকটা বাইরে করা বলে খোঁচা দিয়ে ফেরেন অভিষেকের পর টানা তৃতীয় টেস্টে সেঞ্চুরির আশায় থাকা পাকিস্তান তারকা। আগের দুই টেস্টেই একটি করে শতক তুলেছেন আবিদ।
শুরুর ধাক্কা সামলে আরেক ওপেনার শান মাসুদ ও আজহার আলি ৯১ রানের জুটিতে হতাশা বাড়ান। দ্বিতীয় স্পেলে এসে তখন আবারও ত্রাতা সেই রাহিই। জমে ওঠা জুটিটি ভাঙেন তিনি, স্বাগতিক অধিনায়ককে শান্তর ক্যাচ বানিয়ে। রাহির বলে ড্রাইভ খেলতে গিয়ে স্লিপে ধরা পড়েন ৩৪ রান করা আজহার।
শান তার আগেই ফিফটি তুলে নিয়েছেন ওয়ানডে ঢংয়ে, পরে সেঞ্চুরি। তাকে অনুসরণ করেছেন বাবরও। একই পথে আছেন আসাদ শফিক। বাবরের সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন ১৩৭ রানের জুটি গড়ে ৬০ রানে অপরাজিত থেকে দিনশেষ করেছেন।