ভিউয়ে রেকর্ড গড়েছে ‘দুষ্টু কোকিল’। মাত্র এক বছরে দুই চ্যানেল মিলিয়ে ইউটিউবে গানটির দর্শক ভিউ ৫০ কোটি পার হয়ে গেছে। এর মধ্যে চরকির ইউটিউব চ্যানেলে গানটির দর্শক ভিউ ৩৪ কোটি ৯৯ লাখ ৪৮ হাজারের বেশি। এসভিএফ ইউটিউব চ্যানেলে ছাড়িয়েছে ১৫ কোটি ৯ লাখ ভিউ। অফিশিয়ালি মুক্তি পাওয়ার পর দুটি চ্যানেলে মোট ভিউ ৫০ কোটির বেশি। এত কম সময়ে ইউটিউবে দেশীয় বাংলা সিনেমার কোনো গানে এটি নতুন রেকর্ড। গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন ঢাকার দিলশাদ নাহার কনা ও কলকাতার আকাশ সেন। গানটির গীতিকার ও সুরকারও আকাশ সেন। গত বছর পবিত্র ঈদুল আজহায় মুক্তি পায় রায়হান রাফীর তুফান। সে বছরের ২০ জুন অফিশিয়ালি দুটি ইউটিউব চ্যানেলে মুক্তি পায় এ ছবির গান ‘দুষ্টু কোকিল’। গানটির চিত্রায়ণে দেখা যায়, একটি পানশালায় এই গানে পারফর্ম করছেন মিমি চক্রবর্তী, তাঁকে দেখেই প্রেমে পড়ে যান নায়ক শাকিব খান।
গানটি ৫০ কোটি ভিউর মাইলফলক ছোঁয়ায় উচ্ছ্বসিত আকাশ সেন। কলকাতা থেকে হোয়াটসঅ্যাপে জানান, এত কম সময়ে এত মানুষের ভালোবাসা, যেকোনো সংগীতশিল্পীর জন্যই অনেক বড় পাওয়া। আকাশ সেন বলেন, ‘দেখুন, একদিন আমি থাকব না। গানটা থাকবে। এত মানুষের ভালোবাসার উত্তর দেওয়ার ভাষা আমার নেই। গানটি শুধু বাংলাদেশে নয়, কলকাতাসহ ভারতের অন্যান্য রাজ্যের মানুষও পছন্দ করেছেন। এমনকি ব্যাংকক থেকেও বন্ধুরা কল করে জানিয়েছেন, সেখানকার নানান পার্টিতে এ গান বেজেছে। এর চেয়ে বড় পাওয়া আর কী হতে পারে।’
গানটি তৈরির পেছনের গল্পও শোনালেন আকাশ সেন, ‘আমার বাড়ির পাশে একটি আমগাছ আছে। বসন্তকালে সেখানে সারা দিন কোকিল ডাকাডাকি করে। এক কোকিল আরেক কোকিলকে মুগ্ধ করতেই এভাবে ডাকাডাকি করে। এভাবে সবার সামনে কোকিল প্রেম নিবেদন করে বলেই তাকে দুষ্টু বলা হয়েছে। এই মজা থেকেই গানের জন্ম।’
গানটি কিন্তু অন্য একটি সিনেমার জন্য তৈরি করেছিলেন আকাশ। কিন্তু সে সিনেমার প্রযোজকের পছন্দ না হওয়ায় গানটি নিজের কাছে রেখে দেন তিনি। গায়িকা কনা গানটি রায়হান রাফীকে শোনান। পরিচালক সিনেমার জন্য গানটি পছন্দ করেন।
এ মাইলফলকের পুরো কৃতিত্ব দর্শকদের দিয়েছেন আকাশ সেন। তাঁর কথায়, ‘শ্রোতারাই সবকিছু।’ তিনি বলেন, ‘জীবনে প্রথম গান যখন বানিয়েছিলাম, সেদিনও মনে হয়েছিল, একটা মঞ্চে দাঁড়িয়ে অনেক শ্রোতাকে গানটি শোনাচ্ছি। শ্রোতারা নতুন গানটি শুনে রোমাঞ্চিত হচ্ছেন। তো আমি যে গানই বানাই না কেন, পরিচালক-প্রযোজক থেকে হয়তো আইডিয়াটা নিই, কিন্তু আমার সামনে থাকেন সেই লাখো কোটি শ্রোতা; তাঁদের আবেগ, পছন্দই আমার মাথায় কাজ করে। গানটির মাধ্যমে এত শ্রোতার কাছে যে আমি পৌঁছাতে পেরেছি, এটাই আমার কাছে বড় আনন্দের।’
গানটির দৃশ্যধারণ হয়েছিল কলকাতায়। শুটিংয়েও উপস্থিত ছিলেন আকাশ সেন। শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে বলেন, ‘শুটিংয়ের দুই দিন আগেই রায়হান রাফী আমাকে নিমন্ত্রণ করেন। সেখানে গিয়েই শাকিব খান ভাইকে মেসেজ করি। সারা দিন তাঁর সঙ্গে ছিলাম। তিনি আমাকে এত ভালোবাসা ও আদর দিয়েছেন, ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। সারা জীবন আমার মনে থাকবে।’
গানটি দর্শকের এত পছন্দ হওয়ায় শিল্পী কনাও ভীষণ খুশি। তিনি বলেন, ‘অনেক আনন্দিত ও কৃতজ্ঞ। এটি অনেক বড় আনন্দের খবর। এই গান বাংলা সিনেমার গানে নতুন মাত্রা দিয়েছে। সব শ্রোতার প্রতি অনেক অনেক ভালোবাসা। এই পুরো কৃতিত্ব আপনাদের।’