জানা অজানা ডেস্ক, এইউজেডনিউজ২৪:করোনাভাইরাস জৈব অস্ত্র দাবি করে বক্তব্য রেখেছিলেন ইসরায়েলি ও মার্কিন বিজ্ঞানীরা। ‘জেনেটিক্যালি মডিফায়েড’ এই করোনাভাইরাসের জন্মদাতা চীনের উহানের বায়োসেফটি ল্যাবোরেটরি লেভেল ফোর বলে দাবি করেছিলেন মার্কিন আইনজীবী ও রাসায়নিক মারণাস্ত্র বিরোধী সংগঠনের অন্যতম সদস্য ড. ফ্রান্সিস বয়েল। তিনি বলেছিলেন, শক্তিশালী রাসায়নিক মারণাস্ত্র করোনাভাইরাস, ছড়িয়েছে উহানের ল্যাব থেকেই।
রাসায়নিক অস্ত্র নিরস্ত্রীকরণ সংগঠনেরও অন্যতম নেতা ইউনিভার্সিটি অব ইলিনয়েস কলেজের আইনের অধ্যাপক ড. ফ্রান্সিস বয়েল বলেন, তার উদ্যোগেই ১৯৮৯ সালে ‘বায়োলজিক্যাল ওয়েপনস অ্যান্টি-টেররিজম অ্যাক্ট’ বিল পাশ হয়। নোভেল করোনাভাইরাস যে নিছকই কোনো ভাইরাসের সংক্রমণ নয়, সে বিষয়ে আগেও মুখ খুলেছিলেন ড. ফ্রান্সিস।
চীনের উহানে গবেষণাগার থেকে করোনাভাইরাস ছড়িয়েছে বলে ডেইলি মেইল ২০১৮ সালে চীনের সংবাদপত্র পিপলস ডেইলি চায়নার একটি প্রতিবেদনের কথা তুলে ধরেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘চীনের ভাইরোলজি ইন্সটিটিউট ইবোলার চেয়ে ভয়ংকর এক জীবাণু নিয়ে গবেষণা করছে। মজাদার বিষয় হল, ৩০ মিলিয়ন ডলার খরচ করে বানানো ওই প্রতিষ্ঠানটি বণ্যপ্রাণী বাজার থেকে মাত্র দশ মাইল দূরে রয়েছে।’ আবার অসর্মিথ সূত্রে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে উহানের ওই পরীক্ষাগারের বিজ্ঞানীরা। পরে বাইরে ছড়িয়ে পড়ে।
যদিও বিশেষজ্ঞদের দাবি, প্রাণীদেহ থেকেই মারণ রোগের জীবাণু ছড়িয়েছে। তবুও চীনের গবেষণাগার থেকে জীবাণু ছড়ানো তত্ত্ব উড়িয়ে দিচ্ছে না ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের নেতৃত্বাধীন জরুরিকালীন কমিটি (কোবরা)।
এর আগে হোয়াইট হাউসে টাস্কফোর্স আলোচনা সভায় এমন অভিযোগ জানিয়েছিল। এবার তাদের সঙ্গে সুর মিলালো ব্রিটেন। দেশটিতে করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে জরুরি কমিশন গঠন করেছেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।
ব্রিটেনের সংবাদপত্র ‘ডেইলি মেইল’ কোবরা কমিশনের এক কর্মকর্তাকে উদ্ধৃতি করে লিখেছে, ‘বিজ্ঞানীরা যতই বলুন, উহান প্রদেশের গবেষণাগারে জীবাণু তৈরির তথ্য উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।’
এদিকে ডেইলি মেইলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কোবরা কমিশনের এক সদস্য জানান, উহানের গবেষণাগারে যে এই জীবাণু তৈরি হয়েছিল, সেই সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
বিট্রেনের এমন অভিযোগ ভিত্তিহীন বলেছেন ব্রিটেনের চীনা দূতাবাস। দেশটিতে চীনা রাষ্ট্রদূত জেং রংয়ে বলেছেন, ‘এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। বিশ্বের স্বাস্থ্যের সুরক্ষা নিয়ে চীন চিন্তিত। তাদের স্বার্থে নিরলস পরিশ্রম করে চলেছে। চীন বিশ্বের সমস্ত দেশকে এই মহামারি মোকাবেলায় সাহায্য করছে। কিন্তু সেই চেষ্টাকে অপমান করা হল। চীনেই যদি এই ভাইরাস তৈরি হত, তাহলে সেখানে এত মানুষকে মরতে হত না।’
ইজরায়েলি গোয়েন্দা ও মাইক্রোবায়োলজিস্টদের দাবির সমর্থন জানিয়েই ড. ফ্রান্সিস বয়েল বলেন, উহানের ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজির বায়োসেফটি লেভেল ফোর ল্যাবোরেটরিতে অতি গোপনে রাসায়নিক মারণাস্ত্র বানানোর প্রক্রিয়া চলছে। সেখান থেকেই ছড়িয়েছে এই ভাইরাস। সি-ফুড মার্কেটের ব্যাপারটা নেহাতই চোখে ধুলো দেওয়ার চেষ্টা। আর এই বিষয়টি জানে খোদ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সব জেনেও গোটা বিষয়টাকে কৌশলীভাবে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে।
ড. ফ্রান্সিস বলেন, সার্স ও ইবোলা প্রাণঘাতী হয়ে ওঠার পরে অভিযোগের আঙুল ওঠে এই গবেষণাগারের দিকেই। রোগ প্রতিরোধ নয়, বরং প্রাণঘাতী জৈব অস্ত্র বানাতেই মত্ত গবেষকরা। যার পরিণিতি এই মহামরি। এত মানুষের মৃত্যু।
নোভেল করোনাভাইরাসকে রাসায়নিক মারণাস্ত্র দাবি করেছিলেন মার্কিন সিনেটর টম কটনও। তিনি বলেন, চীন জীবাণুযুদ্ধের জন্য বানাচ্ছিল ওই ভাইরাস। এখন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং কথাটা লুকোতে চাইছেন। কারণ আন্তর্জাতিক আইনে জীবাণুযুদ্ধ নিষিদ্ধ। তারা ওই নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করছিলেন। বিষয়টি জানাজানি হলে শাস্তির মুখে পড়তে হবে।