লেবাননে সাড়ে তিন হাজার হিজবুল্লাহ যোদ্ধাকে হত্যা করেছে বলে দাবি করেছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) প্রতিরক্ষা বাহিনীর বরাতে এই তথ্য জানিয়েছে টাইমস অব ইসরায়েল।
এক প্রতিবেদনে সংবাদমাধ্যমটি বলছে, আইডিএফের অনুমান তাদের হামলায় ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজা যুদ্ধের পর থেকে গত ১৪ মাসের লড়াইয়ে প্রায় সাড়ে তিন হাজার হিজবুল্লাহ সদস্য নিহত হয়েছে। এদের বেশিরভাগই গত সেপ্টেম্বর থেকে চলা দক্ষিণ লেবাননে স্থল আক্রমণের সময় মারা গেছেন।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর বলেছে, সাড়ে তিন হাজার যোদ্ধা নিহতের পাশাপাশি, এসব হামলায় গুরুতর এবং মাঝারিভাবে আহত হয়েছেন প্রায় সাত হাজার যোদ্ধা। যারা এখন লড়াই করতে অক্ষম। তবে ইসরায়েলের এই দাবির বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি হিজবুল্লাহ। লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে নিয়মিত হতাহতের পরিসংখ্যান জানানো হলেও তাদের মধ্যে ঠিক কতজন হিজবুল্লাহ সদস্য তা কখনো উল্লেখ করা হয় না।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘ সময় ধরে সংঘর্ষ চলার পর বুধবার (২৭ নভেম্বর) লেবাননে যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে। এক বছরের বেশি সময় পাল্টাপাল্টি হামলা শেষে যুদ্ধবিরতিতে একমত হয় ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহ। স্থানীয় সময় ভোর ৪টা থেকে (বাংলাদেশ সময় সকাল ৮টা) কার্যকর হয় এই যুদ্ধবিরতি। প্রাথমিক অবস্থায় এ চুক্তির মেয়াদ থাকবে ৬০ দিন। পরবর্তীতে এটি আবারও বৃদ্ধি করা হবে।
এর আগে মঙ্গলবার ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি হওয়ার কথা জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তার মতে, যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সের মধ্যস্থতায় এই চুক্তি সম্ভব হয়েছে। হোয়াইট হাউসে বক্তব্য দেয়ার সময় বাইডেন বলেন, ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা ১০-১ ভোটে এই চুক্তি অনুমোদন করেছে। তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং লেবাননের তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতির সঙ্গে কথা বলেছেন।
তিনি বলেন, এই চুক্তি স্থায়ী যুদ্ধবিরতির জন্য তৈরি করা হয়েছে। হিজবুল্লাহ ও অন্যান্য সন্ত্রাসী সংগঠন ইসরায়েলের নিরাপত্তাকে আর হুমকির মুখে ফেলতে পারবে না। উভয় পক্ষের বেসামরিক জনগণ শিগগিরই নিরাপদে তাদের নিজ নিজ কমিউনিটিতে ফিরে যেতে পারবে। প্রাথমিক অবস্থায় এ চুক্তির মেয়াদ থাকবে ৬০ দিন। পরবর্তীতে এটি আবারও বৃদ্ধি করা হবে। এ চুক্তির মধ্য দিয়ে লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর সঙ্গে ইসরায়েলের এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলমান রক্তক্ষয়ী সংঘাতের অবসান ঘটতে যাচ্ছে বলে আশা করা হচ্ছে। এই সংঘাতে হাজার হাজার সামরিক ও বেসামরিক মানুষ হতাহত হয়েছেন।