ইসরায়েলের এক বছরের আগ্রাসনে ইতোমধ্যে ধ্বংসস্তূপে পরিণত ফিলিস্তিনের গাজা। ক্ষুধা-তৃষ্ণায় পর্যুদস্ত গাজাবাসী এখনও প্রতিদিন স্বজন হারানোর বেদনায় কাতরায়। এবার সেই একইরকম রোষানলে যেন পড়েছে মধ্যপ্রাচ্যের আরেক দেশ লেবানন। সম্প্রতি পেজার ও ওয়াকি-টকি বিস্ফোরণে ব্যাপক হতাহতের এক সপ্তাহ না যেতেই ইসরায়েলি বিমান হামলার কবলে পড়ল দেশটি। গত শনিবার থেকে শুরু হওয়া এই সিরিজ হামলা এখনও অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। সবশেষ হামলায় আরও ৭২ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী। সেইসঙ্গে আহত হয়েছেন আরও ৪০০ মানুষ।
টানা পাঁচদিন ধরে দফায় দফায় চলা এ বিমান হামলায় লেবাননে এরই মধ্যে নিহতের সংখ্যা ৬০০ ছাড়িয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, বুধবার লেবাননে ইসরায়েলি হামলায় আরও ৭২ জন নিহত হয়েছেন বলে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। এর মধ্যে ইসরায়েলি বিমান হামলায় দক্ষিণ লেবাননে ৩৮ জন, পূর্ব বেকা অঞ্চলে ১২ জন এবং রাজধানী বৈরুতের উত্তর ও দক্ষিণের তিনটি শহরে আরও ২২ জন নিহত হয়েছেন।
লেবানিজ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, বুধবারের হামলায় আরও প্রায় ৪০০ জন আহত হয়েছেন।
এ অবস্থায় ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর প্রধান হার্জি হালেভি লেবাননের সীমান্তে অবস্থানরত সেনাদের হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে সম্ভাব্য স্থল আক্রমণের জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেছেন। পরিস্থিতি বিবেচনায় মনে হচ্ছে, লেবাননে মৃত্যুর মিছিল সহসাই থামছে না।
এদিকে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্য একটি পূর্ণ মাত্রার বিপর্যয় দেখছে। একইসঙ্গে তেহরান এটা বলেও সতর্ক করেছে, ইসরায়েল যদি আর সংঘাত বাড়ায় তবে সব উপায়ে লেবাননকে সমর্থন করবে ইরান।
এছাড়া বুধবার ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে ৭২ জন নিহত হওয়ার পর লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, ইসরায়েলের বোমা হামলায় দেশটিতে নিহতের সংখ্যা পাঁচদিনেই ৬২০ ছাড়িয়ে গেছে।
লেবাননের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, লেবাননে ইসরায়েলের ব্যাপক বোমা হামলার কারণে ইতোমধ্যে প্রায় ৫ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে বলেছেন, তারা ইসরায়েল এবং হিজবুল্লাহর মধ্যে ২১ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে কাজ করছে।