ইসমাইল হোসেন রবিন, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুরে যৌতুক না পেয়ে হাত-পা বেঁধে রুমা আক্তার (২০) নামে এক গৃহবধূকে বেদম মারধর করা হয়৷ একপর্যায়ে তার মাথার সামনের অংশের চুল কেটে ন্যাড়া করে দেয় স্বামী মো. হাসান ও ননদ পাখি বেগম। ঘটনার পর থেকেই পাষণ্ড স্বামী হাসান পলাতক রয়েছে। সোমবার (২১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সদর উপজেলার চররমনী মোহন ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড মধ্য চররমনী গ্রাম থেকে ওই গৃহবধূ রুমাকে উদ্ধার করা হয়। স্থানীয় ইউপি সদস্য মনির হোসেন ঘটনাস্থল থেকে তাকে উদ্ধার করে।এর আগে রোববার (২০ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা থেকে রাতভর তার ওপর অমানবিক নির্যাতন চালায় পাষণ্ড স্বামী ও ননদ। গৃহবধূকে চররমনী মোহন ইউনিয়নের মজুচৌধুরীর হাট এলাকায় এক আত্মীয়ের (রুমার আত্মীয়) বাড়িতে রাখা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, রুমা ভোলা সদর উপজেলার ইলিশা ইউনিয়নের পূর্ব দিশাপুর গ্রামের আলমগীর হোসেনের মেয়ে।৩ বছর আগে লক্ষ্মীপুরের মধ্য চররমনি গ্রামে মো. কাঞ্চনের ছেলে হাসানের সঙ্গে রুমার পারিবারিক ভাবে বিয়ে করেন। হাসান পেশায় জেলে। বিয়ের পর থেকে কারণে অকারণে হাসান তার স্ত্রীকে মারধর করতো। প্রায়ই তাদের পারিবারিক দ্বন্দ্ব লেগে ছিল। রোববার সন্ধ্যায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে হাসান ও তার বোন পাখি বেগম তাকে (রুমা) এলোপাতাড়ি মারধর করে। হাত-পা বেঁধে রাতভর মারধর শেষে একপর্যায়ে রুমার মাথার সামনের চুল কেটে দেয় তারা। পরে হাত-পা বাঁধা অবস্থাতেই তাকে রেখে স্বামী পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে সোমবার বিকেলে ইউপি সদস্য মনির তাকে (রুমা) উদ্ধার করে।
রুমা আক্তার বলেন, হাসান আমার পরিবারের কাছ থেকে এর আগে ৫০ হাজার টাকা যৌতুক নিয়েছে। এখন আবার ৩ লাখ টাকা দেওয়ার জন্য মা-বাবার কাছে বলার জন্য আমাকে চাপ দেয়। টাকা চাইতে পারবো না ও তাকে কোন টাকা দেওয়া হবে না বললেই আমার হাত-পা বেঁধে মারধর করে। পরে আমার মাথার সামনের চুল কেটে ন্যাড়া করে দেয়। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।
ইউপি সদস্য মনির হোসেন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল গিয়ে ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করি। তার স্বামী পালিয়ে গেছে। গৃহবধূর পরিবারকে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসিম উদ্দিন বলেন, ঘটনাটি কেউ আমাদেরকে জানায়নি। ঘটনাটি বিস্তারিত জানতে পুলিশ পাঠানো হচ্ছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
