এডুকেশন ডেস্ক, এইউজেডনিউজ২৪: বিশ্বজুড়ে কোভিড- ১৯ এর মহামারী করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণের জন্য বিভিন্ন দেশের সরকার অনির্দিষ্টকালের জন্য সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছে। আবার শিক্ষা মন্ত্রণালয় স্কুল-কলেজের ছুটির মেয়াদ আগামী ৬ আগস্ট পর্যন্ত বাড়িয়েছে। শঙ্কিত রয়েছেন দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার পরিস্থিতি নিয়ে। এমন পরিস্থিতি ভবিষ্যত নিয়ে পুরোপুরি আতঙ্কে দিন গুণছেন কোমলমতি শিক্ষার্থী থেকে শুরু বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা ও অভিভাবকরা। এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের ফলে পৃথিবীব্যাপী প্রায় ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর শিক্ষা কার্যক্রম প্রভাবিত হয়েছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের সরকার শিক্ষার্থীদের এই মারাত্মক ভাইরাস এর আক্রমণ থেকে রক্ষার কৌশল হিসেবে গত ১৮ই মার্চ থেকে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছে। ইতিমধ্যে প্রায় দুই মাস বন্ধ থাকার পর সরকার গত ৩১ মে থেকে স্বাস্থ্য বিধি মেনে ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করার শর্তে সকল অফিস-আদালত, শিল্প-কারখানা, ও গণ-পরিবহন পুনরায় চালু করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। ফলে, বিভিন্ন পর্যায়ে যে বিষয়টি সবচেয়ে বেশি আলোচিত হচ্ছে সেটি হলো কবে নাগাদ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো পুনরায় তাদের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করবে?
সরকারের সিদ্ধান্তের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় সীমিত পরিসরে গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর খুলে প্রশাসনিক কার্যক্রম শুরু করেছে। তবে, ইতিমধ্যে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) মন্ত্রীপরিষদ বিভাগের সিদ্ধান্তের আলোকে আগামী ১৫ জুন পর্যন্ত সকল সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম চালু না করার বিষয়ে নির্দেশনা জারি করে পুনরায় এ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা স্ব-স্ব বিদ্যালয়ের প্রশাসনের উপর ন্যস্ত করেছে। সুতরাং, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা উৎকণ্ঠিত এই ভেবে যে কবে নাগাদ শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হবে এবং কি ভাবে শুরু হবে? এক দিকে অভিভাবকরা যেমন সন্তানদের শিক্ষা জীবন নিয়ে উদ্বিগ্ন অন্যদিকে কোভিড-১৯ এর সংক্রমণের ঝুঁকির বিষয়টি নিয়েও একই ভাবে শঙ্কিত।
প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে পূর্ববর্তী ফলাফলের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের পরবর্তী শ্রেণিতে প্রমোশন দেবার বিষয়টি সরকার সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করতে পারে। এই সমস্ত শিক্ষার্থীদের তেমন কোন ক্ষতি হবে না কারণ পরিস্থিতির উন্নতি হলে তারা বছরের শেষের দিকে বাৎসরিক চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে। একই সাথে, সরকারের দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষের উচিত সকল শিক্ষার্থীর প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে পারে এমন ধরণের অনলাইন ভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থা চালুর বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা। দেশে বেশীরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেহেতু সনাতন পদ্ধতিতে পাঠ দান করা হয়, এটিকে একটি সফল অনলাইন ভিত্তিক পদ্ধতিকে রূপান্তর করা কঠিন কাজ। কারণ এই পদ্ধতির পরিচালনা করা ব্যয় বহুল। তবে আমাদের চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। যদিও সরকার সংসদ টেলিভিশনের মাধ্যমে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে অনলাইন ভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করেছে। শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর পূর্বে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করতে হবে। অন্যথায়, শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে যা আমাদের আরো বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিবে। আর এটি হলে, শুধুমাত্র অভিভাবকরাই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না, বিষয়টি সরকারের জন্য ক্ষতিকর হবে। আমাদের মাননীয় প্রধান মন্ত্রী ও শিক্ষা মন্ত্রী যথার্থভাবেই এই বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করেছেন বিধায় বিভিন্ন সভায় উল্লেখ করেছেন যে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত নির্ভর করবে কোভিড-১৯ এর সংক্রমণের পরিস্থিতির উন্নতির উপর। কিন্তু, কিছু অতি উৎসাহী ব্যক্তিবর্গ রয়েছেন যারা দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে প্রভাবিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সরকারের উচিত এই ধরণের প্রভাবের বাইরে থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে বাস্তবতার আলোকে যৌক্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা। সূত্র : বিভিন্ন গণমাধ্যম থেকে সংগৃহীত