ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক: রাজধানী কাবুলের আশপাশের গুরুত্বপূর্ণ শহরের দখল নিয়েছে তালেবান। এতে প্রাণ বাঁচাতে ঘর-বাড়ি ছাড়ছেন অনেক সাধারণ মানুষ। এ অবস্থায় নিজ দেশের নাগরিকদের নিরাপদে ফেরাতে তৎপর পশ্চিমারা। আর জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে জরুরি অধিবেশন ডাকতে রাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে আশরাফ ঘানি সরকার।
অবিশ্বাস্য গতিতে আফগানিস্তান দখলে নেমেছে তালেবান যোদ্ধারা। সীমান্ত পাড়ি দিয়ে দেশ ছাড়ছেন মন্ত্রী গভর্নর ও সেনাবাহিনী। নিরাপত্তার হুমকিতে সাময়িকভাবে দেশটির দূতাবাস বন্ধ করে দিচ্ছে ডেনমার্ক, সুইজারল্যান্ড, নরওয়েসহ অনেক দেশ। নিজ দেশের নাগরিক ও কূটনীতিকদের দেশে ফিরিয়ে নিচ্ছে ফ্রান্স ও ফিনল্যান্ড।
জাতিসংঘ শরনার্থী সংস্থা বলছে, গেলো মে মাসের পর দেশটিতে প্রায় আড়াই লাখ মানুষ বাড়িঘর ছেড়েছে। দেশটিতে ভয়ানকভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে, শঙ্গা জাতিসংঘের।
জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেন, আফগানিস্তান নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। এর খেসারত দিতে হচ্ছে সাধারন মানুষকে। শুধু গত মাসেই, হেলমান্দ, কান্দাহার ও হেরাতসহ বিভিন্ন প্রদেশে এক হাজার বেসামারিক মানুষের প্রাণ গেছে। ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে দেশটিতে।
আফগানিস্তানে সংকটের জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করছে রাশিয়া। আর বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ দুঃসময়ে দেশটির মাটি থেকে সেনা সরানোর সিদ্ধান্তের চরম খেসারত দিতে হচ্ছে।
জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পল মিলার বলেন, তালেবানের এত দ্রুত দখলদারিত্ব বিস্ময়কর। এদের সাথে পেরে ওঠার মতো পর্যাপ্ত রসদ আফগান বাহিনীর নেই। মনে হচ্ছে, দেশটি থেকে সেনা না সরানোই ভালো। এটি মারাত্মক ভুল সিদ্ধান্ত। যা আর সংশোধন করার সুযোগ থাকবে না।
আফগানিস্তানের প্রাণকেন্দ্র কান্দাহার দখল হওয়া বিভিন্ন এলাকায় ‘কট্টোর আইন’ চালু করেছে তালেবান। ফের পুনরাবৃত্তি ঘটতে চলেছে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সালের তালেবান শাসনকাল।
এক আফগান নাগরিক বলেন, ‘এটা এমন যেন একটি পাখি দীর্ঘ সময় ব্যয় করে একটি বাসা বানালো, আর নিমিষেই তা ধংস হয়ে গেলো। সব নিঃশেষ হয়ে গেলো। এদেশের হাজার হাজার নাগরিকের সাথে এমনটাই হচ্ছে।’
ভয়াবহ গৃহযুদ্ধ এড়াতে তালেবানকে রাষ্ট্র পরিচালনায় অংশীদার করার প্রস্তাব দিয়েছে ঘানি সরকার। তবে ক্ষমতা ভাগাভাগি নিয়ে এখনও কিছু জানায়নি এ গোষ্ঠি।