আমাদের সৌরজগতের মধ্যে থাকা রহস্যময় এক আন্তনাক্ষত্রিক বস্তুর পরিচয় নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী আভি লোয়েবের মতে, ৩আই/অ্যাটলাস নামের বস্তুটি নিজস্ব আলো তৈরি করছে। একটি যানবাহনের হেডলাইট জ্বালিয়ে দেওয়ার মতো মনে হচ্ছে বিষয়টি। বস্তুটির উৎস ও পরিচয় বর্তমানে একটি রহস্য। গত ২১ জুলাই হাবল স্পেস টেলিস্কোপ ব্যবহার করে বস্তুটির ছবি তোলা হয়। সেই ছবিতে দেখা যাচ্ছে, সূর্যের দিকে মুখ করে থাকা বস্তুটির এক পাশে আলোকিত অঞ্চল রয়েছে। এটি কোনো স্পটলাইটের মতো নির্গত কোনো রশ্মি বা লেজার নয়। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী ১৭ ডিসেম্বর বস্তুটি পৃথিবীর সবচেয়ে কাছাকাছি পৌঁছাবে।
রহস্যময় আন্তনাক্ষত্রিক বস্তুটির বিষয়ে বিজ্ঞানী আভি লোয়েব বলেন, সূর্যের আলোতে উত্তপ্ত হওয়ার কারণে বস্তুটির পৃষ্ঠ থেকে ধুলা বেরিয়ে আসছে। সেই কারণে এই আভা দেখা দিতে পারে। তবে দূরত্বের সঙ্গে সঙ্গে এই আভার উজ্জ্বলতা তীব্রভাবে কমে যাচ্ছে। বিষয়টি সূর্যালোক প্রতিফলিত করার সময় সাধারণ ধূমকেতুর আচরণের সঙ্গে মেলে না। বস্তুটি কোনো কৃত্রিম বস্তু হতে পারে। বস্তুটির মধ্যে হয়তো শক্তির একটি শক্তিশালী উৎস রয়েছে। লাখ লাখ মাইল দূর থেকে আমরা যে আলো দেখতে পাই, তা উৎপন্ন করতে সক্ষম বস্তুটি। বস্তুটি পারমাণবিক শক্তিচালিত একটি মহাকাশযানও হতে পারে।
সাধারণত ধূমকেতুর চারপাশ ধুলা ও গ্যাসের কারণে আলোকিত হয়। সূর্যের আলো প্রতিফলিত করে ধূমকেতু। এই আলো সমানভাবে ছড়িয়ে পড়ে। ধূমকেতুর কেন্দ্র থেকে দূরে সরে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আলো ম্লান হয় না। বিজ্ঞানীরা প্রথমে মনে করেছিলেন, ১২ মাইল লম্বা রহস্যময় বস্তুটির উজ্জ্বলতা একই ধরনের হবে। তবে বস্তুটির আলো কমে যাচ্ছে। এসব থেকে ইঙ্গিত মিলছে, বস্তুটি ধূমকেতু নয়, অন্য কোনো মাধ্যম থেকে আলো আসছে।
বিজ্ঞানী লোয়েব ও তাঁর সহকর্মী এরিক কেটো জানিয়েছেন, যদি বস্তুটি নিজস্ব আলো তৈরি করে, তাহলে ১২ মাইল লম্বা হবে না। আরও ছোট, অর্থাৎ ৩০০ ফুট লম্বা হতে পারে। বস্তুটির উজ্জ্বলতা ও পরিচয় পৃথিবীর কাছাকাছি না আসা পর্যন্ত বিস্তারিত জানা যাবে না।