ইসলাম ও ধর্ম ডেস্ক, আজনিউজ২৪: একজন সম্মানিত অতিথির মতোই উষ্ণ আন্তরিকতায় রমজানকে বরণ করা হয় নাইজেরিয়ায়। রমজানের চাঁদ ওঠার পর আনন্দ মাহফিল হয় সেখানে এবং পুণ্য ও বরকতের মাস রমজানকে স্বাগত জানিয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়কে বের হয় আনন্দ মিছিল। মাহফিল ও মিছিলে বিশেষ ধর্মীয় সংগীত পরিবেশিত হয়।
নাইজেরিয়ান মুসলিম সমাজ রমজানের জন্য মানসিক ও বস্তুগত উভয়ভাবে রমজানের জন্য প্রস্তুত হয়ে থাকে। রজব মাসের চাঁদ দেখার পর থেকে রমজানের প্রস্তুতি শুরু হয় নাইজেরিয়ায়। রমজানের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি কিনে রাখে। সঙ্গে সঙ্গে প্রস্তুত হয় আমলের জন্যও। রমজানের আগেই তারা দিনে রোজা ও রাতে তাহাজ্জুদের আমল শুরু করে। সর্বত্র অপার্থিব প্রশান্তি বিরাজ করে। রমজান নাইজেরিয়ানদের কাছে পুণ্য ও আত্মীয়তার বন্ধন সুদৃঢ় করার মাস। রমজানে প্রত্যেকে আত্মীয়-স্বজন ও আপনজনের সঙ্গে দেখা করে এবং তাদের উৎসাহিত করে রমজানের ধর্মীয় পবিত্রতা, গাম্ভীর্য ও শিক্ষা মান্য করে চলতে। নাইজেরিয়ায় অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে তারাবি আদায় করা হয়। বেশির ভাগ মসজিদে আসরের পর নসিহত, কোরআন তিলাওয়াত ও কোরআনের তাফসির হয়। কোথাও কোথাও এসব মজলিস হয় এশার নামাজের পর।
ইফতারের সামান্য আগে নাইজেরিয়ান পরিবারগুলো পরস্পরের মধ্যে ইফতার বিনিময় করে। ইফতার আয়োজনে তারা ‘হুম’ ও ‘কোকো’ নামক পানীয় পছন্দ করে, যা গম ও চিনি দিয়ে তৈরি করা হয়। সামান্য ইফতার গ্রহণ করে তারা মাগরিবের নামাজ আদায় করতে যায়। নামাজ শেষে রাতের খাবার গ্রহণ করে। এ সময়ের আয়োজনে থাকে গোশত, ভাত ও আলু। খাবার শেষে তারা চা পান করে। নাইজেরিয়ান মুসলিমদের আরেকটি ইফতার সংস্কৃতি হলো প্রতিবেশী কয়েক ঘরের লোক কোনো বাড়ির আঙিনায় একত্র হয়ে ইফতার করা। এ ছাড়া তারা রমজানে ‘আসিদাহ’, ‘দাউয়্যাহ’, ‘উনজুঝি’ ও ‘লুবিয়া’ নামক খাবারগুলো বেশ জনপ্রিয়।
তারাবি আদায় করতে পুরুষরা মসজিদে যায় এবং শিশুরা ঘরে আলাদা জামাত করে। তারাবি শেষ করে তারা আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে দেখা করতে যায়। এটি নাইজেরিয়ান সমাজের সৌন্দর্য। নারীরা রমজানে হরেক রকম খাবার তৈরি করে। আর যাঁরা ধর্মীয় জ্ঞান রাখেন, তাঁরা মেয়েদের ইসলামী আচার-আচরণ ও শিষ্টাচার শিক্ষা দেন। আবার কোনো কোনো পুরুষ তাঁদের সঙ্গে স্ত্রীকে মসজিদে নিয়ে যান। রমজানের শেষাংশে জাকাত ও ফিতরা আদায় করেন।