জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ জানিয়েছেন, গত ১০ অক্টোবর যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর গাজায় অন্তত ৬৭ জন শিশু নিহত হয়েছে। ইউনিসেফের মুখপাত্র রিকার্ডো পিরেস জেনেভায় শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, নিহত শিশুদের মধ্যে রয়েছে দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসের এক বাড়িতে ইসরাইলি বিমান হামলায় মারা যাওয়া নবজাতক কন্যাশিশু। এছাড়াও, এর এক দিন আগে ইসরাইলি বাহিনীর বিভিন্ন স্থানে চালানো হামলায় আরও সাত শিশু প্রাণ হারিয়েছে।
পিরেস বলেন, “এগুলো কেবল সংখ্যা নয়। প্রতিটি শিশু ছিল একটি পরিবার, একটি স্বপ্ন, একটি জীবন। হঠাৎ করেই সহিংসতায় সব শেষ হয়ে গেছে।”
জাতিসংঘ জানায়, ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় সংঘটিত যুদ্ধের পর থেকে মোট ৬ হাজার ৪০০ ফিলিস্তিনি শিশু নিহত হয়েছে।
যুদ্ধবিরতির মধ্যেও ইসরাইলি বাহিনীর তাণ্ডব অব্যাহত। শুক্রবার গাজা উপত্যকার তুফ্ফাহ ও শুজাইয়ার মতো উত্তরের এলাকায় ৩০০ মিটার পর্যন্ত ঢুকে পড়েছে ইসরাইলি সাঁজোয়া যান। গাজা সিটি কর্তৃপক্ষ বলছে, ইয়েলো লাইন পশ্চিম দিকে ঠেলে সামরিক এলাকা ইচ্ছাকৃতভাবে সম্প্রসারণ করা হচ্ছে, যার ফলে নিরাপদ ভেবে থাকা পরিবারগুলো আবারও বাস্তুচ্যুত হচ্ছে।
পূর্ব জেরুজালেমের কাফর আকাবে ফিলিস্তিনি কিশোরদের গুলি করে হত্যা করেছে ইসরাইলি বাহিনী। নাবলুসের কাছে এক বাসিন্দাকে তার বাড়িতে ঢুকে গুলি করা হয়েছে এবং লাশ দ্রুত স্থানান্তর করা হয়েছে। রেড ক্রিসেন্টের সদস্যদের ঘটনাস্থলে প্রবেশের অনুমতিও দেওয়া হয়নি।
সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, তুবাস, জর্ডান ভ্যালি এবং বেথলেহেমসহ বিভিন্ন এলাকায় রাতভর অভিযান চালানো হয়েছে। গ্রেফতার, টিয়ার গ্যাস ব্যবহার এবং অসুস্থ মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি অবৈধ ইসরাইলি বসতিস্থাপনকারীরা হুওয়ারা ও আবু ফালাহ এলাকায় ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে।
ইউনিসেফের এই সতর্কবার্তা নতুন করে মনে করিয়ে দিয়েছে, গাজার শিশুরা এখনও সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে, এবং শান্তি কার্যকর হওয়া সত্ত্বেও সহিংসতা থামেনি।

