মিয়ানমারের উত্তর-মধ্যাঞ্চলের একটি স্কুল ও গ্রামে দেশটির সামরিক বাহিনীর হামলায় ৭ শিশুসহ ১৩ জন নিহত হয়েছেন। স্কুল প্রশাসক ও স্থানীয় একজন সাহায্যকর্মী সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) এ তথ্য জানান। আর মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজ।
গণতন্ত্রপন্থী বিদ্রোহী এবং তাদের সহযোগীদের ওপর সামরিক সরকারের হামলায় মিয়ানমারে প্রায়ই বেসামরিক হতাহতের ঘটনা ঘটে। তবে সাগাইং অঞ্চলের তাবায়িন শহরে গত শুক্রবারের (১৬ সেপ্টেম্বর) হেলিকপ্টার হামলায় নিহত শিশুর সংখ্যা সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের পর যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি বলে মনে করা হচ্ছে।
শুক্রবারের হামলাটি দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়ের উত্তর-পশ্চিমে প্রায় ১০০ কিলোমিটার (৭০ মাইল) দূরে অবস্থিত তাবায়িনের লেট ইয়েট কন গ্রামে ঘটেছে, যেটি ডেপাইন নামেও পরিচিত।
স্কুলের প্রশাসক মার মার জানান, গ্রামের ওপর দিয়ে ঘোরাফেরা করা চারটি এমআই-৩৫ হেলিকপ্টারের মধ্যে দুটি হেলিকপ্টার থেকে মেশিনগান দিয়ে স্কুলে হামলা চালানো শুরু হয়। এসময় তিনি শিক্ষার্থীদের নিচতলার একটি ক্লাসরুমে নিরাপদে লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করেন।
তিনি সোমবার মোবাইল ফোনে বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে (এপি) বলেন, ‘শিশু শিক্ষার্থীরা তো কোনো ভুল করেনি। আমি কখনই ভাবিনি যে তাদেরও মেশিনগানের গুলিতে নির্মমভাবে হত্যা করা হবে।’
মার মার আরও বলেন, তারা (সেনা সদস্যরা) এক ঘণ্টা ধরে স্কুল কম্পাউন্ডে গুলি চালিয়েছে, এক মিনিটের জন্যও থামেনি। তখন প্রার্থণা করা ছাড়া আমাদের আর কিছুই করার ছিল না।
হেলিকপ্টার হামলা বন্ধ হলে প্রায় ৮০ জন সৈন্য গ্রামে প্রবেশ করে এবং স্কুলের পাশে থাকা বৌদ্ধ বিহারের ভবন লক্ষ্য করেও গুলি চালাতে শুরু করে। এতে ৭ শিক্ষার্থী নিহত হয়। এছাড়া হামলায় গ্রামের আরও ৬ বাসিন্দা প্রাণ হারিয়েছেন।
শুধু তাই নয়, ৯ আহত শিশু এবং তিনজন শিক্ষকসহ ২০ জনেরও বেশি লোককে সৈন্যরা ধরে নিয়ে গেছে। তাদের মধ্যে দুজনকে সরকারবিরোধী পিপলস ডিফেন্স ফোর্সের সদস্য বলে অভিযুক্ত করা হয়েছে।