কালবৈশাখী ঝড়ের তান্ডবে মিরসরাইয়ে ঘরবাড়ি, ফসল জমি, বৈদ্যুতিক খুঁটি ও তারের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সোয়া এক ঘন্টার তাণ্ডবে আহত হয়েছেন ১০ শিক্ষার্থীসহ অন্তত ৩০ জন। সোমবার (৬ মে) দুপুর থেকে শুরু হওয়া ঝড়ো হাওয়ায় উপজেলার বিভিন্ন স্থানে শতাধিক ঘর বাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ক্ষতি হয়েছে বোরো ধান, আম ও কাঠালসহ বিভিন্ন ফলের গাছ। গাছ পড়ে উপজেলা ভূমি অফিসের একটি ভবন ভেঙ্গে গেছে। পেটে শিলা পড়ে, টিনের আঘাত ও বজ্রপাতে আতংকিত হয়ে আহত হয়েছেন ১০ শিক্ষার্থী। উপজেলার মিঠাছরা এলাকায় লাইনে বজ্রপাত হয়ে তিন ইঞ্চি পাইপ ফেটে যাওয়ায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।
জানা গেছে, কাল বৈশাখী ঝড়ে বারইয়ারহাট পৌরসভা, মিরসরাই পৌরসভা, মিরসরাই সদর ইউনিয়ন, মিঠানালা, ওয়াহেদপুর, দুর্গাপুর, খৈয়াছড়া, কাটাছরা ও ইছাখালী ইউনিয়নে বিভিন্ন জায়গায় ব্যাপকভাবে গাছপালা উল্টে গেছে। অনেক জায়গায় গাছ পড়ে ভেঙ্গে গেছে ঘর-বাড়ি। এছাড়া উপজেলার ১৬ ইউনিয়ন ও দুই পৌরসভার বিভিন্ন গ্রামে গাছপালা ভেঙ্গে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। হিঙ্গুলী ইউনিয়নের পূর্ব হিঙ্গুলী গ্রামের শিতিষ সেনের বসতঘর ও রান্নাঘর, রাঙ্গাটিলা আবাসন প্রকল্পের স্বপন ত্রিপুরার বসতঘরসহ শতাধিক ঘর বাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
বারইয়ারহাট জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ওই হাসপাতালে কাল বৈশাখী ঝড়ে আহত হয়ে জোরারগঞ্জ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী লামিয়া, মৌতিমা, রাহি, সাবিহা, তাসলিমা ও ইসরাত চিকিৎসা নিয়েছে। এছাড়া আবুরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী আদিভা ও আলিফা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছে। পেটে শিলা ঢুকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক সিএনজি অটো রিক্সা চালককে প্রেরণ করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩ এর মিরসরাই জোনাল অফিসের ডিজিএম আদনান আহমেদ বলেন, কালবৈশাখী ঝড়ে আমাদের অফিসের আওতাধীন প্রায় ৩০ টি খুটি ভেঙ্গে গেছে। অসংখ্য জায়গায় গাছপালা ভেঙ্গে তার ছিঁড়ে গেছে। এছাড়াও উপজেলার আরও বিভিন্ন এলাকায় প্রায় আরও অর্ধশত বৈদ্যুতিক খুটি ভেঙ্গে যেতে পারে। আমাদের কর্মীরা মাঠে কাজ করে যাচ্ছে, তবে কবে নাগাদ বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হতে এ বিষয়ে কিছু বলা যাচ্ছেনা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহফুজা জেরিন বলেন, কালবৈশাখী ঝড়ে উপজেলাজুড়ে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে এখনো ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা যায়নি। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানদের তালিকা প্রেরণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারপর বেশী ক্ষতিগ্রস্থদের সরকারের পক্ষ থেকে সহায়তা করা হবে।