হেল্থ ডেস্ক, আজনিউজ২৪: বিশ্বজুড়ে কোভিড-১৯ মহামারি করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৩ কোটি ৩৮ লাখ ৪১ হাজার ছাড়িয়েছে। আর এ মহামারিতে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১০ লাখ ১২ হাজার। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত মারা গেছে ৫ হাজারেরও বেশি মানুষ। করোনা শনাক্ত হয়েছে সাড়ে তিন লাখেরও বেশি রোগী। মহামারী করোনাভাইরাস সংক্রমণরোধের সঙ্কটময় মুহূর্তে সফলভাবে এগিয়ে এসেছেন রাজধানীর ইমপালস হাসপাতালের নাক কান গলা বিভাগের চিকিৎসক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক অধ্যাপক ডা. জাহির আল আমিন। কোভিড-১৯-এর শুরুতে অনেক হাসপাতাল চিকিৎসা সেবা না দিতে পারলেও দেশের বিশিষ্ট নাক কান গলা বিভাগের চিকিৎসক ও ইমপালস হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অধ্যাপক ডা. জাহির আল আমিন কোভিড-১৯ থাবা থেকে বাঁচাতে এগিয়ে এসেছেন।
প্রাণঘাতী কোভিড-১৯ এর প্রথম পর্যায়ে বাংলাদেশের বেসরকারী হাসাতালের মধ্যে ইমপালস হাসপাতালই সর্বোচ্চ স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে সুস্থভাবে ফিরিয়েছেন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা থেকে শুরু করে ১ হাজার ৪০০ জন পুলিশ করোনারোগীকে। দেশপ্রেমী অধ্যাপক ডাক্তার জাহির আল-আমীন। সংক্রমণের সময় আক্রান্ত আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীদেরকে সর্বোচ্চ ২৯১ আইসিইউ বা এইচডিইউ বেডে রেখে সম্পূর্ণভাবে স্বাস্থ্য সেবা দিতে পেরেছে । তিনি আরও বলেন, প্রতিটি বেডের সঙ্গে হাই-ফ্লো-নাজাল ক্যানুলা (এইচএফএনসি), বিদেশি অত্যাধুনিক ভেন্টিলেটর, সিপিএপি বা বিআইপিএপি মেশিন, মনিটর, সেন্ট্রাল অক্সিজেন সুবিধা আছে।
নাক কান গলা বিভাগের চিকিৎসক অধ্যাপক ডাক্তার জাহির আল-আমিন বলেন,গত ৯ মে থেকে শুরু করে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত বাংলাদেশ পুলিশ সদস্য উর্ধ্বতন কমকর্তা মিলিয়ে প্রায় ২ হাজার ৫০০ করোনা রোগী এখান থেকে স্বাস্থ্য সেবা সম্পন্ন করতে পেরেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশক্রমে ইমপালস হাসপাতালের কার্যক্রমে সন্তুষ্ট প্রকাশ করায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্য ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
কোভিড-১৯ করোনাভাইরাস সংক্রমণে থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে তুলতে কি কৌশল অবলম্বন করতে হবে, তা প্রামাণ্য ভিডিও চিত্রে সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন ইমপালস হাসপাতাল লিমিটেডর ব্যবস্থাপনা পরিচালক অধ্যাপক ডাক্তার জাহির আল-আমীন। এ সময় কি কি করণীয় তা আক্রান্ত কিংবা স্বাভাবিক মানুষদেরকেও সচেতন হওয়ার তাগিদ দেন এই নাক, কান ও গলা বিশেজ্ঞ।
৩০৪/ই বীর উত্তম শওকত রোডে গড়ে তোলেন দৃষ্টিনন্দন ইমপালস। সুউচ্চ ভবনে ৪০০ বেডের হাসপাতালটি ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে আনুষ্ঠানিকভাবে পথ চলা শুরু করে। ইমপালস হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য, উদ্দেশ্য এবং কিভাবে ইমপালস হাসপাতাল মানুষের সেবা দিচ্ছে। দেশের জনপ্রিয় অনলাইন ওয়েবপোর্টাল www.auznews24.com-এর প্রতিনিধির সাথে দ্বিতীয় পর্বের ভার্চুয়াল সাক্ষাতকালে এমনাটাই আশার বাণী জানিয়েছেন এই গুণি অধ্যাপকের অধ্যাপক জাহির আল-আমীন।
আজ নিউজ২৪: কী উদ্দেশ্য নিয়ে ইমপালস হাসপাতাল করেছেন আপনারা?
উত্তর : জনবসতিপূর্ণ দেশের চিকিৎসাব্যবস্থায় ভালো কিছু করার ইচ্ছা নিয়ে ইম্পাল্স হাসপাতালের যাত্রা। দেশ ও বিদেশে অবস্থানরত বেশ কিছু চিকিৎসক এবং অন্যান্য পেশার লোকজন মিলে গড়ে তোলা হয়েছে এই হাসপাতাল। রোগীদের কেন আমাদের স্বাস্থ্যসেবার প্রতি ভয়, কেন তারা বিদেশে চিকিৎসার জন্য চলে যাচ্ছে? স্বজন-পরিজন ছেড়ে বিদেশে নিঃসঙ্গ অবস্থায় ভৌতিক পরিবেশে একজন রোগী হাজির হন সেখানে। সেখানকার সামাজিক পরিবেশটা অবশ্যই রোগীবান্ধব নয়। তার পরও কেন রোগীরা বিদেশে যান? আমরা এর উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছি। কারণ হিসেবে আমরা দেখেছি, দেশের চিকিৎসাব্যবস্থার প্রতি রোগী অথবা অভিভাবকদের যথেষ্ট আস্থা নেই। হাসপাতালে বৈরী আচরণ, চিকিৎসক-নার্স থেকে শুরু করে জুনিয়র কর্মীরাও রোগীর সঙ্গে খারাপ আচরণ করে থাকে। আমরা খারাপ ব্যবহারে অভ্যস্ত হয়ে গেছি। এ অবস্থা থেকে চিকিৎসাব্যবস্থাকে বের করে আনতে আমরা ইমপালস গড়েছি। অবশ্যই আমাদের সেবার মানসিকতা রয়েছে। দেশে অবস্থানরত ও বিদেশের কিছু চিকিৎসক ও অন্যান্য পেশাজীবী মিলে আমরা এটা করেছি। মানসম্পন্ন চিকিৎসা ও সেবা দেয়া এবং বিদেশে আমাদের লব্ধজ্ঞান এ দেশের কল্যাণে ব্যয় করার উদ্দেশ্যেই এ হাসপাতাল গড়া। আমরা এ হাসপাতালকে বিশ^ মানের করতে চাই। ইতোমধ্যে সিঙ্গাপুর থেকে একটি টিম আমাদের হাসপাতালটি ঘুরে গেছে। আরো টিম আসবে। উদ্দেশ্যে একটাই, তাহলো এখানে দেশবাসীকে মানসম্পন্ন চিকিৎসাসেবা দেয়া।
আজ নিউজ২৪ : কী কী সুবিধা থাকছে ইমপালস হাসপাতালে?
উত্তর : সাশ্রয়ী মূল্যে সর্বোচ্চ সেবার নিশ্চয়তা, ২৪ ঘণ্টা বিশেষ চিকিৎসক দিয়ে বিশ^মানের চিকিৎসা, চিকিৎসার সর্বস্তরে আন্তরিকতা, আইসিইউ, সিসিইউ, এনআইসিইউ, ডায়ালাইসিস, ইমারজেন্সি সেবা দেয়া হচ্ছে। এখানে লন্ডন, আয়ারল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র ও সিঙ্গাপুরে অবস্থানরত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মাধ্যমে টেলিকনফারেন্সের মাধ্যমে সুপরামর্শ পাওয়ার ব্যবস্থাও আছে। এখানে এক্সরে ৩০ মিনিটে পাওয়া যায়, রক্ত ও অন্যান্য ল্যাবরেটরি টেস্ট রিপোর্ট পাওয়া যায় এক ঘণ্টার মধ্যে। ইউরিন, সিটি স্ক্যান, এমআরআই অথবা আল্ট্রাসাউন্ড টেস্ট রিপোর্ট পাওয়া যায় এক ঘণ্টা অথবা কিছু বেশি সময়ের মধ্যে।
আজ নিউজ২৪ : দেশে আরো অনেক হাসপাতাল আছে, ওদের সাথে ইমপালসের পার্থক্য কিভাবে করবেন?
উত্তর : আমাদের এখানে সবই স্বচ্ছ। সব কিছু লিখিত আকারে আছে। রোগীরা সব কিছু দেখেই তাদের সেবা নেবেন। এখানে কোনো হিডেন প্রাইস (অপ্রকাশিত খরচ) নেই। চিকিৎসা অথবা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর জানতে পারেন যে এ টেস্টগুলো লাগবে অথবা লেগেছে। এ ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। রোগীরা বাধ্য হয়ে অনিচ্ছায় বাড়তি খরচ দিতে বাধ্য হন এমনটা এখানে নেই। এক টাকার চিকিৎসাসেবা নেয়ার পর ১০ টাকা বিল করা হয় না। কখনো এ ধরনের হওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই। আমি এ পদে দায়িত্ব পালন করা পর্যন্ত কখনোই হবে না। অন্যান্য হাসপাতালের সাথে ইমপালসের এটাই পার্থক্য।
আজ নিউজ২৪ : বাংলাদেশে অনেক ভালো হাসপাতাল আছে। সেখানে উন্নত মানের চিকিৎসাও দেয়া হয়। এর পরও রোগীরা বিদেশ চলে যাচ্ছে। বিদেশগামীদের ফেরাতে ইমপালস কী করতে পারে?
উত্তর : ইমপালসের চারটি বৈশিষ্ট্য। স্বচ্ছতা, রোগীকে প্রাধান্য দেয়া (পেশেন্ট ইজ অলওয়েজ রাইট), রোগীরা কখনোই খারাপ আচরণের শিকার হবে না এবং উন্নত মানের চিকিৎসা ও সেবা। এটি একটি করপোরেট হাসপাতাল, চিকিৎসাবিজ্ঞানের সর্বশেষ প্রযুক্তি এখানে আমরা বসিয়েছি। এ ছাড়া বিদেশের বিখ্যাত চিকিৎসকদের সাথে স্কাইপের মাধ্যমে আমরা নিয়মিত যোগাযোগ করে থাকি। সব ধরনের সুবিধা আমাদের এখানে থাকছে। আগেই বলেছি, আমাদের রয়েছে স্বচ্ছতা। ফলে রোগীরা এখানে এসে প্রকৃত চিকিৎসাটাই পাবেন, কখনোই প্রতারিত হবেন না। সঠিক চিকিৎসা পেলে, প্রতারিত না হলে যেসব রোগীরা বিদেশ চলে যান তারা আমাদের এখানে আবারো আসবেন। রোগীদের আস্থায় আনতে পারলে তারা বিদেশ যাবেন না। বিদেশে গেলে রোগীদের অনেক কষ্ট হয়। রোগীরা কাক্সিক্ষত হাসপাতাল পায় না, তারা সেখানে পরিবার-পরিজন ছাড়া থাকেন। একজন হয়তো সাথে যান কিন্তু সেই একজনেরও কাজ থাকে। আমরা এখানে উন্নত মানের চিকিৎসা ও সেবার নিশ্চয়তা দিতে চাই। এটা করতে পারলে আর রোগীরা বিদেশ যাবেন না।
আজ নিউজ২৪ : প্রাইমারি, সেকেন্ডারি এবং টার্শিয়ারি রোগী সেবা প্রায় সব হাসপাতালই দিয়ে থাকে। আপনারা কি সবগুলো সেবা দেবেন?
উত্তর : প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা দেয়ার দায়িত্ব সরকারি হাসপাতাল বা সরকারকেই নিতে হবে। বেসরকারি হাসপাতাল প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা দিতে পারবে না। আমরা সেকেন্ডারি ও টার্শিয়ারি সেবা দেবো। আমাদের সামর্থ্য সীমিত, আমাদের টিকে থাকতে হলে কিছু মুনাফা করতেই হবে। সে কারণে আমরা প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা দিতে পারব না। সব সময় যে পারব না তা নয়, আমরাও দেবো তবে আমরা সেকেন্ডারি ও টার্শিয়ারি সেবায় বেশি জোর দেবো।
আজ নিউজ২৪ : কিছু চিকিৎসক নিজের মেধা না খাটিয়ে রোগী এলেই বিশাল একটা পরীক্ষা-নিরীক্ষার স্লিপ ধরিয়ে দেন। পরে এসব পরীক্ষার রিপোর্ট দেখে তিনি চিকিৎসা করেন। রোগীকে আবার আসতে হয় চিকিৎসকের কাছে। এভাবে একজন রোগী চিকিৎসককে দু’বার ফি দিতে বাধ্য হন। তা ছাড়া কিছু চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফি থেকে কমিশনও খেয়ে থাকেন। এ ব্যাপারে ইমপালস হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য কী?
উত্তর : রোগী অথবা অভিভাবকেরা এমনিতেই প্রচণ্ড অশান্তিতে থাকেন। অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হয় ক্রিটিক্যাল কন্ডিশনের রোগীদের অভিভাবকদের। আমরা এখানে সব ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা রেখেছি। এখানকার ভর্তি রোগীদের বাইরে যেতে হবে না। রোগীদের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে অনেক চিকিৎসকই কিছু অনৈতিক চর্চা করে থাকেন। এখানে এ ব্যাপারে আমরা খুবই সচেতন। মেধা খাটানোর জন্য আমরা চিকিৎসকদের উদ্বুদ্ধ করে থাকি। তারা যেন একেবারেই পরীক্ষা-নিরীক্ষার ওপর নির্ভরশীল না হয়ে পড়েন সেদিকে আমাদের নজর থাকবে। এ ছাড়া চিকিৎসকেরা আউটডোরে রোগী দেখেও যেন আকাশ-পাতাল ব্যবধানের ফি না ধরনের সে ব্যাপারে আমরা ম্যানেজন্টের পক্ষ থেকে চিকিৎসকদের উদ্বুদ্ধ করে থাকি। তার পরও আমি বলব, চিকিৎসকেরাও মানুষ, তারা সমাজের বাইরের কেউ নন, কিছু ভুল হয়ে যেতেই পারে। বেশি পরীক্ষা-নিরীক্ষা দেয়া অথবা পরীক্ষা-নিরীক্ষা ফি থেকে কমিশন খাওয়াকে আমরা অবৈধ মনে করি।
আজ নিউজ২৪ : এখানে কী কী অস্ত্রোপচার হচ্ছে?
উত্তর : সব ধরনের অস্ত্রোপচারের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি আমাদের আছে। একদিন হয়তো আপনারা শুনবেন যে এখানে সফল লিভার (যকৃৎ) প্রতিস্থাপন হয়েছে। লিভার প্রতিস্থাপনের জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, অপারেশন থিয়েটার, অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি আমাদের রয়েছে। কিডনি অপারেশন, কিডনি প্রতিস্থাপন তো এ দেশে এখন আর বড় কোনো ব্যাপার নয়। এ জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুতি আমাদের রয়েছে। এ ছাড়া বাইপাস অথবা ওপেন হার্ট সার্জারির জন্যও আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। লিভার বাদে ইতোমধ্যে কার্ডিয়াক ও কিডনি অপারেশন ছাড়া অন্য সব জটিল অপারেশন করে ফেলেছি এখানে।
আজ নিউজ২৪ : একটা বিশাল ভবনের মধ্যে এ হাসপাতাল গড়া হয়েছে। এ ধরনের ভবনে সাধারণত মেডিক্যাল কলেজও থাকে। আপনারা মেডিক্যাল কলেজ করবেন কি না?
উত্তর : মেডিক্যাল কলেজের জন্য আমরা খুব বেশি আগ্রহী নই। টিচিং হাসপাতাল কিন্তু বেস্ট হাসপাতাল হয় না। আমরা বেস্ট হাসপাতাল বানাতে চাই ইমপালসকে। তবু সময়ের প্রয়োজনে হয়তো আমরা মেডিক্যাল কলেজের দিকে যেতে পারি। যা কিছুই করি না কেন, আমাদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা থাকবে উন্নত মানের চিকিৎসা দিয়ে দেশকে এগিয়ে নেয়া।
এর আগে, মরণঘাতী কোভিড-১৯ করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রাদুর্ভাবের সময় গত জুন মাসে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত অনুগ্রহ ও উদারতায় করোনায় আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসার লক্ষ্যে রাজধানীর ইমপালস হাসপাতাল বন্দোবস্ত করেছিলেন । ঐ মূহূর্তে হাসপাতালটি প্রাথমিকভাবে আড়াই মাসের জন্য ভাড়া করেন। শুধুমাত্র করোনায় আক্রান্ত ১ হাজারেরও বেশি পুলিশ সদস্যদের নিবিড় চিকিৎসা দেওয়ার জন্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট এ হাসপাতালটি তখন ব্যবহারের জন্য খুলে দেয়া হয়। পরবর্তীতে বাংলাদেশ পুলিশে দায়িত্ব থাকা এসব করোনা আক্রান্ত আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী কর্মকর্তাসহ পুলিশ সদস্যরা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ইমপালস হাসপাতাল থেকে। এছাড়াও করোনা রোগীদের বাঁচাতে মরিয়া হয়ে কাজ করতে গিয়ে কোভিড-১৯-এ প্রাণ দিতে হলো এই হাসপাতালের তিনি ডাক্তারকে। তারা হলেন – প্রফেসর জলিলুর রহমান খান, ডাক্তার মহশিন কবির এবং ডাক্তার বজলুর রহমান। হাসপাতালের ভেতর ও বাইরে সার্বক্ষণিক করোনা প্রতিরোধ ব্যবস্থা চালুর পাশাপাশি পিপিই, মাস্ক, আই গ্লাভস, আই প্রটেক্টর, স্যানিটাইজার বলেন সব স্টাফকেই তা সরবরাহ করার জন্য কর্তৃপক্ষ সার্বক্ষণিক দৃষ্টিগোচর রয়েছেন।
বিশিষ্ট চিকিৎসক জাহির আল আমিন রাজধানীর ইমপালস হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। জীবনের বেশিরভাগ সময় কাটিয়েছেন যুক্তরাজ্য বা গ্রেট ব্রিটেনে। উচ্চশিক্ষার পর ব্রিটেনেই সুনামের সাথে প্র্যাকটিস করেছেন দীর্ঘ সময় ধরে। বিদেশী আরাম আয়েশ, আভিজাত্য ও অর্থ প্রাচুর্য ছেড়ে চলে আসেন দেশ, মাটি ও মানুষের কথা ভেবে। রোগী সেবা দেয়ার জন্য তিনি যোগদান করেন বারডেম হাসপাতালে। ঠিক ঐ মুহূর্তে একই সাথে আরো দায়িত্ব পালনের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে থাকেন। দেশী ও বিদেশী উদ্যোক্তাদের সমন্বয়ে শুরু করেন ঢাকার তেজগাঁওস্থ ইমপালস হাসপাতাল। এ দেশের মানুষের আধুনিক ও মানসম্পন্ন সেবা দেয়াই তার এবং তার টিমের উদ্দেশ্য।