ইলন মাস্কের মালিকানাধীন নিউরালিংকের তৈরি ব্রেন চিপ মস্তিষ্কে স্থাপন করে নতুন জীবন ফিরে পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষাঘাতগ্রস্ত এক তরুণ। চিপটির মাধ্যমে তিনি এখন কারও সাহায্য ছাড়া কম্পিউটার নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন, ভিডিও গেম খেলছেন, এমনকি ঘরের বিভিন্ন যন্ত্র চালু বা বন্ধও করছেন।
অ্যারিজোনার ইউমা শহরের বাসিন্দা নোল্যান্ড আরবগ ২০১৬ সালে এক দুর্ঘটনায় কাঁধের নিচ থেকে সম্পূর্ণ পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়েন। গত জানুয়ারিতে ফিনিক্সের ব্যারো নিউরোলজিক্যাল ইনস্টিটিউটে তাঁর মস্তিষ্কে নিউরালিংকের পরীক্ষামূলক ব্রেন কম্পিউটার ইন্টারফেস (বিসিআই) প্রতিস্থাপন করা হয়। প্রায় দুই ঘণ্টার ওই অস্ত্রোপচারে রোবটের সহায়তায় মস্তিষ্কের মোটর কর্টেক্সে (যে অংশ শরীরের নড়াচড়া নিয়ন্ত্রণ করে) কয়েনের মতো আকারের চিপ বসানো হয়। এর সঙ্গে যুক্ত করা হয় এক হাজারের বেশি সূক্ষ্ম ইলেকট্রোড। চিপটি মস্তিষ্কের স্নায়ু সংকেতকে ডিজিটাল নির্দেশনায় রূপান্তর করে। ফলে শরীর না নড়িয়েই এখন মনে মনে ভেবে কম্পিউটারের কার্সর নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি ইন্টারনেট ব্রাউজ করাসহ গেম খেলতে পারছেন নোল্যান্ড আরবগ। শুধু তা–ই নয়, নতুন করে কলেজে ভর্তিও হয়েছেন তিনি।
নোল্যান্ড আরবগের মতে, নিউরালিংকের তৈরি ব্রেন চিপ তাঁর জীবনে নতুন পথ খুলে দিয়েছে। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি আবার নতুন করে সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছি। হয়তো সম্ভাবনা সব সময়ই ছিল, কিন্তু এখন সেটি পূর্ণ করার মতো পথ পেয়েছি।’ নিউরালিংকের মানব পরীক্ষায় তিনিই প্রথম অংশগ্রহণকারী ছিলেন। নিউরালিংকের ব্রেন চিপ তারহীন এবং ব্যাটারিচালিত। তাই কয়েক ঘণ্টা পরপর চার্জ দিতে হয়, যার জন্য বিশেষ ধরনের চার্জিং কয়েল টুপিতে যুক্ত করে ব্যবহার করতে হয় নোল্যান্ড আরবগকে।
মস্তিষ্ক ও কম্পিউটারের সরাসরি যোগাযোগের প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণা চলছে প্রায় ৫০ বছর ধরে। নব্বইয়ের দশকের শেষ দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান পরীক্ষামূলকভাবে বিসিআই প্রযুক্তি উন্নয়নে কাজ করছে। তবে ঝুঁকি থাকার পরও নোল্যান্ড আরবগ শুরু থেকেই পরীক্ষায় অংশ নিতে আগ্রহী ছিলেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘কিছু ভুল হলেও জানতাম, এতে ভবিষ্যতে অন্য কারও উপকার হবে।’
সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে