ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক, এইউজেডনিউজ২৪: মধ্যপ্রাচ্য শান্তি পরিকল্পনা ‘ডিল অব দ্য সেঞ্চুরি’ ঘোষণা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রস্তাবিত নতুন পরিকল্পনায়, বিতর্কিত জেরুজালেম অখন্ডভাবে ইসরাইলের রাজধানী থাকবে। মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) হোয়াইট হাউসে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বিনইয়ামিন নেতানিয়াহুকে পাশে নিয়ে এ পরিকল্পনা ঘোষণা করেন তিনি। পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রতিষ্ঠায় এ প্রস্তাব করেন ট্রাম্প।
হোয়াইট হাউসের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবে পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের দখলকে যুক্তরাষ্ট্র স্বীকৃতি দেবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বিনিময়ে চার বছরের জন্য ইসরায়েল দখলকৃত এলাকার সম্প্রসারণ বন্ধ রাখবে। এ সময়টিতে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলবে। ট্রাম্পের এ পরিকল্পনায় দ্বি-রাষ্ট্রনীতির আওতায় স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেয়া হলেও অবিভক্ত জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে।
একইসঙ্গে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে পূর্ব জেরুজালেমে ইসরাইলি বসতি স্থাপনকেও। ট্রাম্পের এ পরিকল্পনাকে স্বাগত জানিয়েছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বিনইয়ামিন নেতানিয়াহু। তবে একে ‘ষড়যন্ত্র’ অ্যাখ্যা দিয়ে শান্তি পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করেছেন ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। মার্কিন এ প্রস্তাবের প্রতিবাদে ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছেন ফিলিস্তিনিরা। ২০১৪ সালে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন আলোচনা কোনো মীমাংসা ছাড়াই বন্ধ হয়ে যায়। সেই আলোচনা নতুন করে আবার শুরু হবে কি না, সে বিষয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবে কিছু স্পষ্ট করা হয়নি।
মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, ফিলিস্তিন প্রস্তাবটি নিয়ে সংশয়ী থাকবে, সে বিষয়ে তারা নিশ্চিত। তবে ধীরে ধীরে তারা আলোচনার জন্য রাজি হবে।
একটি রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি আদায়ে ফিলিস্তিনের যে দীর্ঘদিনের লড়াই, সে পথে এই পরিকল্পনা বেশ বড়সড় বাধা হয়েই সামনে এসেছে। প্রস্তাবটি নিয়ে ইসরায়েল কেমন প্রতিক্রিয়া দেখাবে, তা এখনো নিশ্চিত নয়। নির্বাচন সামনে থাকায় দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বেশ চাপে রয়েছেন।
রয়টার্স জানায়, ৮০ পৃষ্ঠার এ পরিকল্পনার ৫০ পৃষ্ঠাই ব্যয় করা হয়েছে রাজনৈতিক পরিকল্পনা উপস্থাপনের জন্য, যা মঙ্গলবার ঘোষণা করা হয়েছে। পরিকল্পনার বাকি ৩০ পৃষ্ঠা গত বছরের জুলাইয়েই প্রকাশ করা হয়েছিল। যেখানে মূলত অর্থনৈতিক পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়। ৫ হাজার কোটি ডলারের সেই পরিকল্পনাটি তৈরিতে মুখ্য ভূমিকা রেখেছিলেন ট্রাম্প জামাতা ও উপদেষ্টা জ্যারেড কুশনার।
পরিকল্পনায় ট্রাম্প প্রশাসন একটি সম্ভাব্য মানচিত্রও তুলে ধরেছে, যেখানে বর্তমানে ফিলিস্তিন নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলের দ্বিগুণ অঞ্চল ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে। পরিকল্পনাটি সম্পর্কে ডোনাল্ড ট্রাম্প নেতানিয়াহুর পাশাপাশি তার রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী বেনি গান্টজকে অবহিত করেছেন। বিষয়টি নিয়ে শুরুতেই আপত্তি জানিয়ে রেখেছে ফিলিস্তিন। আর হামাস সব ধরনের দখলদারি প্রতিরোধ করার ঘোষণা আগেই দিয়ে রেখেছে।