পলিটিক্যাল ডেস্ক: আজ ১৭ নভেম্বর মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর মৃত্যুবার্ষিকী। বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) টাঙ্গাইলে নানা আয়োজনে পালিত হচ্ছে মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর ৪৬তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৭৬ সালের এই দিনে ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (পিজি) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
টাঙ্গাইলের সন্তোষে তাকে চির নিদ্রায় শায়িত করা হয় ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক বাংলায় গ্রামভিত্তিক রাজনীতির প্রবর্তক মাওলানা ভাসানীকে। তিনি ভারতীয় উপমহাদেশের স্বনামধন্য ধর্মগুরু এবং গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।
জানা যায়, ১৮৮০ সালের (১২ ডিসেম্বর) সিরাজগঞ্জের ধানগড়া গ্রামে মওলানা ভাসানীর জন্ম। সিরাজগঞ্জে জন্ম হলেও মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী তার জীবনের সিংহভাগই কাটিয়েছেন টাঙ্গাইলের সন্তোষে। মওলানা ভাসানী তার কৈশোর-যৌবন থেকেই রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। দীর্ঘদিন তিনি তৎকালীন বাংলা-আসাম প্রদেশ মুসলিম লীগের সভাপতি ছিলেন। লাইন-প্রথা উচ্ছেদ, জমিদারদের নির্যাতন বিরোধী আন্দোলন- সারাজীবনই তিনি সাধারণ মানুষের কল্যাণে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন। তার উদ্যোগে ১৯৫৭ সালে টাঙ্গাইলের কাগমারীতে অনুষ্ঠিত ঐতিহাসিক কাগমারী সম্মেলন বাংলাদেশের রাজনীতিতে মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তিনি সর্বদলীয় ওয়ার কাউন্সিলের উপদেষ্টা ছিলেন। স্বাধীনতার পর তার সর্বশেষ কীর্তি ছিল- ফারাক্কা লং মার্চ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অত্যন্ত স্নেহ করতেন মওলানা ভাসানী। বঙ্গবন্ধুও তাকে শ্রদ্ধা করতেন পিতার মতো। শিক্ষা অনুরাগী ও গ্রাম-বাংলার নির্যাতিত মানুষের জন্য আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন মহান এই নেতা।
তার ৪৬তম মৃত্যুবার্ষিকীতে মজলুম জননেতা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর মাজারে শ্রদ্ধা জানাতে ঢল নেমেছে মানুষের। বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) সকালে সন্তোষে মওলানা ভাসানীর মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং মোনাজাতের মধ্য দিয়ে দিনব্যাপী কর্মসূচির উদ্বোধন করেন মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. ফরহাদ হোসেন।
এরপর মওলানা ভাসানীর পরিবার, আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা-শিক্ষার্থী, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও মওলানা ভাসানীর ভক্ত অনুসারীরা মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং মোনাজাত করেন।
দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন সংগঠন দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি পালন করছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে আলোচনা সভা, মিলাদ, দোয়া মাহফিল, ওরস, দুঃস্থদের মাঝে খাবার বিতরণসহ আরও বিভিন্ন আয়োজন।