মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট মঙ্গলবার (০৫ নভেম্বর) হবে। ভোটের আগের দিন সোমবার (০৪ নভেম্বর) তাই স্বাভাবিকভাবে ব্যস্ত সময় পার করেছেন দুই প্রধান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প ও কমলা হ্যারিস। দুজনই গুরুত্বপূর্ণ এই দিনে অন্যতম প্রধান দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্য পেনসিলভানিয়ার বিভিন্ন স্থানে প্রচারণা চালিয়েছেন। দুজনই নিজেদের জয়ের ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন। যদিও অধিকাংশ জনমত জরিপে অত্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনের আভাস দেয়া হয়েছে।
রাইটার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এবারের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারাভিযানে চোখ ধাঁধানো ঘটনা দেখা গেছে। সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে দুবার হত্যাচেষ্টা হয়েছে। তিনি তার ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। অন্যদিকে সবাইকে অবাক করে দিয়ে এবার ডেমোক্রেটিক পার্টির টিকিট নিয়ে নেন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস। ৮১ বছর বয়সী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নিজ দলের চাপের মুখে পুনর্নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালে সামনে আসেন কমলা। ধরেন দলের হাল। বিশ্লেষণ সংস্থা অ্যাডইমপ্যাক্ট-এর মতে, এবারের নির্বাচনে ভোটার টানতে গত মার্চ থেকে ২ দশমিক ৬ বিলিয়নের বেশি ডলার খরচ হয়েছে।
তারপরও বিভিন্ন জনমত জরিপে দেখা যাচ্ছে, ৭৮ বছর বয়সী ট্রাম্প এবং ৬০ বছর বয়সী কমলা হ্যারিস কার্যত সমান সমান অবস্থানে রয়েছেন। মঙ্গলবার ভোট শেষ হলেও বিজয়ীর নাম কয়েক দিন পর্যন্ত জানা নাও যেতে পারে। যদিও ট্রাম্প ইতিমধ্যে ইঙ্গিত দিয়েছেন যে তিনি পরাজয়ের বিরুদ্ধে লড়াই করবেন। ২০২০ সালেও বাইডেনের কাছে হেরে এমনটা তিনি করেছিলেন।
সোমবার উভয় প্রার্থী পেনসিলভানিয়ায় আসেন। নির্বাচনে ভোট দেননি এমন ভোটারদের নিজ নিজ পক্ষে ভোট দেয়ার আহ্বান জানান। সাতটি দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যের মধ্যে এই রাজ্যে সবচেয়ে বেশি ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট। তাই নির্বাচনের ফলাফল নির্ধারণে এই রাজ্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
এদিন পিটসবার্গে এক বড় সমাবেশে হাজির হন ট্রাম্প। নির্বাচনের দিনের কয়েক ঘণ্টা আগে ভোটারদের কাছে তার প্রচারাভিযানের চূড়ান্ত বার্তা দেন। বলেন, ‘আমরা চার বছর ধরে এর জন্য অপেক্ষা করছি।’ পিটসবার্গের বক্তৃতায় অর্থনৈতিক বিষয়ের ওপর জোর দিয়ে ট্রাম্প বলেন, কমলা হ্যারিস নির্বাচিত হলে দেশের জন্য অর্থনৈতিক দুর্দশা ডেকে আনবেন।
অন্যদিকে অলেন্টাউনে নিজের জয়ের ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন কমলা। সকল আমেরিকানের জন্য প্রেসিডেন্ট হওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। শহরের গুরুত্বপূর্ণ পুয়ের্তো রিকান সম্প্রদায়ের প্রতি আবেদন জানান তিনি। গত সপ্তাহে ট্রাম্পের একটি সমাবেশে তাদের নিয়ে অপমানজনক মন্তব্য করে বসেন এক কৌতুক অভিনেতা। এ নিয়ে তাদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
তারপর মানুষের দুয়ারে দুয়ারে যান কমলা। পিটসবার্গে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন। সেখানে পপ তারকা কেটি পেরি পারফরম্যান্স করেন। কমলা বলেন, আগামীকাল নির্বাচনের দিন। এবারের গতিধারা আমাদের পক্ষে। আমরা জানি আমেরিকাতে একটি নতুন প্রজন্মের নেতৃত্বের সময় এসেছে। এবং কোনো ভুল করবেন না, আমরা জয়ী হব।
এরপর ফিলাডেলফিয়ায় সেলিব্রিটি-ভরা এক অনুষ্ঠানের কমলার বলেন, লড়াই এখনো শেষ হয়নি। আমাদের অবশ্যই শক্তভাবে শেষ করতে হবে। আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি যে যারা আমার সাথে একমত নন তাদের কথা শুনব। কারণ, আপনি দেখেন, আমি বিশ্বাস করি না যে যারা আমার সাথে একমত নন তারা শত্রু। আমি তাদের টেবিলে আসন দেব।
সোমবার রাতের শেষ সমাবেশে তিনি আরও বলেন, আজ রাতেই, তারপরে আমরা শেষ করব যেমনটা শুরু করেছিলাম, আশা, শক্তি ও আনন্দ নিয়ে।