ভিয়েতনামের সহায়তায় এখন পর্যন্ত ভিয়েতনাম যুদ্ধে নিখোঁজ ৭৪০ জন মার্কিন সেনার মরদেহ শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। এসব মরদেহ তাঁদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তরের অধীন ডিফেন্স পিওডব্লিউ–এমআইএ অ্যাকাউন্টিং এজেন্সির পরিচালক কেলি ম্যাককিগ এই তথ্য জানিয়েছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার ভিয়েতনামের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন রাষ্ট্রীয় নথিপত্র ও আর্কাইভ বিভাগ পরিচালিত ন্যাশনাল আর্কাইভস সেন্টার-৩ পরিদর্শনে গিয়ে ম্যাককিগ এ কথা বলেন।
ম্যাককিগ বলেন, ২০২৫ সাল একাধিক ঐতিহাসিক ঘটনার বর্ষপূর্তির বছর। এই বছরই ভিয়েতনামের একত্রকরণের ৫০ বছর, ভিয়েতনাম-যুক্তরাষ্ট্র কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ৩০ বছর এবং বিশেষভাবে যুক্তরাষ্ট্র প্রথমবারের মতো নিখোঁজ সেনাদের সন্ধানে ভিয়েতনামে একটি দল পাঠানোর ৪০ বছর পূর্ণ হচ্ছে।
এই মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, ১৯৭৩ সালে প্যারিস শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের পরপর ভিয়েতনামের পক্ষ থেকে যুদ্ধে নিখোঁজ সেনাদের সন্ধানে একটি বিশেষ সংস্থা গঠন করা হয়। সেই সময় থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের নিখোঁজ সেনাদের খোঁজে ভিয়েতনাম সক্রিয়ভাবে সহায়তা করে আসছে।
ভিয়েতনামের এই নিরলস সহায়তার জন্য, বিশেষ করে যুদ্ধে নিখোঁজ মার্কিন সেনাদের পরিবারের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন কেলি ম্যাককিগ। তিনি বলেন, ভিয়েতনামের এই সহানুভূতিশীল ও অব্যাহত সহযোগিতা যুক্তরাষ্ট্র-ভিয়েতনাম সামগ্রিক কৌশলগত অংশীদারত্বের মূল স্তম্ভ হয়ে উঠেছে। এর কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে নিখোঁজ সেনাদের সন্ধানে ভিয়েতনামের অবদান।
অবশ্য ম্যাককিগ স্বীকার করেন, ভিয়েতনাম যুদ্ধে এখনো ১ হাজার ১৫৭ মার্কিন সেনার কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি ও তথ্যের ঘাটতির কারণে এ মামলার সমাধান অত্যন্ত কঠিন হয়ে উঠেছে।
মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের অধীন ডিফেন্স পিওডব্লিউ–এমআইএ অ্যাকাউন্টিং এজেন্সির পরিচালক ম্যাককিগ বলেন, তথ্য সংগ্রহ এই অনুসন্ধান কার্যক্রমের প্রথম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। অনেক সময় এমন তথ্যই অনুসন্ধানকারী দলকে সঠিক জায়গায় পৌঁছাতে বা সঠিক সাক্ষীর সঙ্গে কথা বলতে সাহায্য করে।
ভিয়েতনামের স্টেট রেকর্ডস অ্যান্ড আর্কাইভস ডিপার্টমেন্টের পরিচালক ডাং থান টুং বলেন, যুদ্ধকালে নিখোঁজ সেনাদের সন্ধানে ভিয়েতনামের আর্কাইভ বিভাগ শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, ফ্রান্সের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে, যাতে নিখোঁজ সেনাদের পরিবারের চাহিদা অনুযায়ী তথ্য সরবরাহ করা যায়।
ডাং থান টুং আরও বলেন, এই প্রক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তথ্য আদান-প্রদান ও সহযোগিতা আগামী দিনেও সক্রিয়ভাবে অব্যাহত থাকবে।