লেখা থেকে ভিডিও তৈরি করতে সক্ষম কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির ‘সোরা’ অ্যাপ উন্মুক্তের পাঁচ দিনেরও কম সময়ে ১০ লাখবারের বেশি ডাউনলোড হয়েছে বলে জানিয়েছে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওপেনএআই। প্রতিষ্ঠানটির দাবি, নিজেদের তৈরি জনপ্রিয় চ্যাটবট চ্যাটজিপিটির তুলনায় কম সময়ে সোরা অ্যাপ এই মাইলফলক স্পর্শ করেছে। সোরা অ্যাপটি এখনো যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাপ স্টোরে শীর্ষস্থান দখল করে আছে।
সোরা অ্যাপ ব্যবহারকারীর দেওয়া সংক্ষিপ্ত নির্দেশনা বা প্রম্পট থেকে সর্বোচ্চ ১০ সেকেন্ডের বাস্তবসম্মত ভিডিও তৈরি করতে পারে। আর তাই ব্যবহারকারীদের কাছে অ্যাপটি দ্রুত জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এ বিষয়ে ওপেনএআইয়ের সোরা প্রকল্পের প্রধান বিল পিবলস এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে জানান, অ্যাপটি এখনো কেবল উত্তর আমেরিকার আমন্ত্রিত ব্যবহারকারীদের জন্য উন্মুক্ত। তবু ব্যবহারকারীর আগ্রহ ও ডাউনলোডের হার প্রত্যাশার চেয়েও দ্রুত বাড়ছে।
বাজারের আসার পরপরই জনপ্রিয়তা পেলেও সোরা অ্যাপ নিয়ে বিতর্কও তৈরি হয়েছে। মেধাস্বত্ব আইন লঙ্ঘনের পাশাপাশি প্রয়াত জনপ্রিয় ব্যক্তিদের চেহারা বা রূপ ব্যবহার করে ভিডিও তৈরির সুযোগ থাকায় সোরা অ্যাপকে নিয়ে তীব্র সমালোচনা হচ্ছে অনলাইনে। অ্যাপটি ব্যবহার করে তৈরি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সহজেই শেয়ার করা যায়। ফলে টিকটক, এক্স ও ইনস্টাগ্রামের মতো প্ল্যাটফর্মে সোরায় তৈরি ভিডিও পোস্ট করছেন ব্যবহারকারীরা। এর মধ্যে কিছু ভিডিওতে প্রয়াত সংগীতশিল্পী মাইকেল জ্যাকসন ও টুপাক শাকুরের মতো তারকাদের কৃত্রিম ভিডিও রয়েছে।
সোরা অ্যাপের মাধ্যমে তৈরি অনেক ভিডিওতেই চলচ্চিত্র, টেলিভিশন সিরিজ ও ভিডিও গেমের বিভিন্ন চরিত্রকে দেখা গেছে। এ বিষয়ে সিএনবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, একটি ভিডিওতে ওপেনএআইয়ের প্রধান নির্বাহী স্যাম অল্টম্যানকে দেখা গেছে পোকেমন চরিত্রদের সঙ্গে। যেখানে তিনি হাস্যরসের ছলে বলছেন, ‘আশা করি নিন্টেন্ডো আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করবে না।’ অন্য এক ভাইরাল ভিডিওতে তাকে দেখা যায় গেমের জনপ্রিয় চরিত্র পিকাচুকে গ্রিল করে খেতে।
সোরা অ্যাপের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে ওপেনএআইয়ের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্বদের চিত্রায়ণকে ‘মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অংশ’ হিসেবে দেখা যেতে পারে। তবে সম্প্রতি প্রয়াত জনপ্রিয় ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে তাদের অনুমোদিত প্রতিনিধি চাইলে সেই চিত্র বা ভিডিও ব্যবহার বন্ধের অনুরোধ জানাতে পারবেন।