জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগামে প্রাণঘাতী সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে ভারতে পাকিস্তান সরকারের অফিসিয়াল এক্স (পূর্বে টুইটার) অ্যাকাউন্টটি স্থগিত করা হয়েছে।
এনডিটিভি জানিয়েছে, বুধবারে পহেলগামে সংঘটিত ওই হামলায় ২৬ জন নিহত হন। এই ঘটনার পর নয়াদিল্লি একাধিক কঠোর প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে বহুল আলোচিত ১৯৬০ সালের সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিতকরণ এবং পাকিস্তানি কূটনৈতিকদের বহিষ্কার।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা নিরাপত্তা কমিটির (সিসিএস) বৈঠকে এই পদক্ষেপগুলো চূড়ান্ত হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল।
বুধবার সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রী জানান, দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের মাত্রা কমিয়ে আনা হয়েছে। এখন থেকে ভারত ও পাকিস্তান উভয় দেশের হাইকমিশনে কর্মীর সংখ্যা ৫৫ থেকে কমিয়ে ৩০-এ নামিয়ে আনা হবে যা ১ মে’র মধ্যে কার্যকর হবে।
ভারত পাকিস্তানি হাইকমিশন থেকে প্রতিরক্ষা, নৌ ও বিমান উপদেষ্টাদের বহিষ্কার করেছে। তাদের ‘অবাঞ্ছিত ব্যক্তি’ ঘোষণা করে এক সপ্তাহের মধ্যে দেশ ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, ভারত ইসলামাবাদে নিজের হাইকমিশন থেকেও সামরিক উপদেষ্টাদের প্রত্যাহার করবে।
পাশাপাশি সার্ক ভিসা অব্যাহতি প্রকল্প স্থগিত করা হয়েছে এবং এই প্রকল্পের অধীনে ইস্যু করা সব ভিসা বাতিল করা হয়েছে। আটারি সীমান্তে অবস্থিত একমাত্র কার্যকর স্থল ক্রসিং পয়েন্টও সাময়িকভাবে বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে সিসিএস। ১ মে’র আগে বৈধ কাগজপত্র নিয়ে ভারতে অবস্থানকারী পাকিস্তানি নাগরিকদের ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ সিদ্ধান্ত হলো সিন্ধু জল চুক্তির স্থগিতকরণ। বিক্রম মিশ্রী জানান, পাকিস্তান যদি আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদে তার সমর্থন প্রত্যাহার না করে, তবে এই চুক্তি পুনরায় কার্যকর করা হবে না। সিসিএস বৈঠকের আগে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেন, পহেলগাম হামলার অপরাধীদের উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে। ভারত শুধু প্রকাশ্যে নয়, পর্দার আড়ালে থাকা ষড়যন্ত্রকারীদেরও বিচারের আওতায় আনবে।