ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক, এইউজেডনিউজ২৪: ভারতের সংশোধিত নাগরিক আইন (সিএএ), এনআরসি এবং এনপিআর-এর বিরোধিতা করে মুম্বাইয়ের ঐতিহাসিক আজাদ ময়দানে সমাবেশ করেছে কয়েক হাজার প্রতিবাদী। উপস্থিত আন্দোলনকারীদের মধ্যে বড় অংশই ছিলেন নারী।
শনিবারের ওই প্রতিবাদ সভা থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহ এর বিরুদ্ধে উর্দু কবি ফয়েজ আহমদের কবিতা ‘হাম দেখেঙ্গে’ উদ্ধৃত করে স্লোগান তোলা হয়। সিএএ, এনআরসি এবং এনপিআর বিরোধী স্লোগান দেন তারা। মহামোর্চা নামে একটি সংগঠন এই প্রতিবাদ সভার আয়োজন করেছিল।
মুম্বায়ের পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে দলে দলে লোক এই প্রতিবাদ সভায় জমায়েত হয়। হাতে জাতীয় পতাকা নিয়ে ‘মোদি-শাহ সে আজাদি, এনআরসি, এনপিআর সে আজাদি’ স্লোগান তোলেন প্রতিবাদী মানুষেরা। উপস্থিত নাগরিকরা সিএএ, এনসারসি ও এনপিআর-এর স্বার্থে কোনও নথি দেখাবেন না, এমন সঙ্কল্পও গ্রহণ করেন। এমনকি চলতি সংসদের অধিবেশনে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বিলোপ করার দাবি তোলেন তারা। এসময় ঘুরিয়ে ফিরিয়ে সব প্রতিবাদী ‘হাম দেখেঙ্গে’ কবিতার পংক্তি আওরান। মহিলারা আবার, নিজেদের ‘ঝাঁসির রানী’ আর ‘জিজা বাঈয়ের মেয়ে’ বলে নিজেদের তুলে ধরেন। এই প্রতিবাদ সভায় অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুত, সমাজকর্মী তিস্তা সেতালবাদ এবং ওই সংগঠনের আহ্বায়ক অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি কোলসে পাটিল উপস্থিত ছিলেন। এদিকে, ভারতে নাগরিকত্ব আইনের বিরোধীতা করে পথে নেমেছিল দিল্লির জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
এ সময় শিক্ষার্থীদের ওপর দিল্লি পুলিশের হামলার অভিযোগ ওঠে। এবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে ঢুকে পুলিশি হামলার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ওই ভিডিওতে জামিয়ার লাইব্রেরিতে ঢুকে অধ্যয়নরত ছাত্রদের ওপর পুলিশকে পৈশাচিক হামলা চালাতে দেখা গেছে।বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ও সাবেকদের নিয়ে গঠিত জামিয়া কো-অর্ডিনেশন কমিটির পক্ষ থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ৪৯ সেকেন্ডের ওই ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে। লাইব্রেরির সিসিটিভি ফুটেজ ঘেঁটে সেটি বের করা হয়েছে বলে জানা গেছে। ভিডিওতে দেখা গেছে, বই-খাতা খুলে পড়াশোনা করছেন শিক্ষার্থীরা। হঠাৎ লাইব্রেরির মধ্যে মারমুখী পুলিশ বাহিনী দেখে হুলস্থুল পড়ে যায় চারিদিক।
মারধর থেকে বাঁচতে অনেকেই টেবিলের নীচে আশ্রয় নিয়েছেন। কেউ আবার দেওয়ালের সঙ্গে লেগে ছিলেন। তবে কেউ পুলিশের সেই নির্যাতন থেকে রেহাই পাননি। মুখ ঢেকে পুলিশ এলোপাথারি বেধড়ক পেটাতে থাকে ছাত্রদের।
জামিয়া কো-অর্ডিনেশন কমিটি বিবৃতি প্রকাশ করে বলেছে, ‘এই সিসিটিভি ফুটেজ শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি নৃশংসতার প্রমাণ। এতে প্রমাণিত হয়, কীভাবে রাষ্ট্রের পোষা সন্ত্রাসবাদীরা লাইব্রেরিতে ঢুকে পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেয়া পড়ুয়াদের ওপর নৃশংস অত্যাচার চালিয়েছে।’
এদিকে ভিডিওটি সামনে আসার পর নতুন করে দিল্লি পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এই বিষয়ে দিল্লি পুলিশ জানায়, তাদের অপরাধ দমন শাখা জামিয়া কাণ্ডের তদন্ত করছে। ভিডিওটি পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।