ভারতের মণিপুর রাজ্যের বিষ্ণুপুর জেলায় রাজ্যের প্রথম মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িসহ দুটি স্থানে রকেট হামলা চালিয়েছেন বিদ্রোহীরা। শুক্রবারের (০৬ সেপ্টেম্বর) এ ঘটনায় রাজ্যের সাবেক মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে একজন নিহত এবং অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এর আগে গত কয়েক দিন ধরে কয়েক দফায় ড্রোন ব্যবহার করে হামলা চালায় বিদ্রোহীরা।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, দেশটির অভ্যন্তরীণ সংঘাতের ইতিহাসে আগে কখনো এত ব্যাপক পরিমাণে ড্রোন হামলা চালায়নি কোনো বিদ্রোহী গোষ্ঠী। দেড় বছরের বেশি সময় ধরে মণিপুরে সংঘাত চলছে। জাতিগত এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত অন্তত দুই শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং শনিবার (০৭ সেপ্টেম্বর) মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক ডেকেছেন।
মণিপুর পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে স্থানীয়ভাবে তৈরি একটি লঞ্চার ব্যবহার করে ময়রাং শহরে সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মাইরেম্বাম কোইরেং সিংয়ের বাড়িতে রকেট হামলা চালানো হয়। রকেটটি সাবেক মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সীমানায় আঘাত হানে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, বাড়ি থেকে কয়েক ইঞ্চি দূরে রকেটটি আছড়ে পড়ে। এ ঘটনায় ৭২ বছর বয়সী কে রাবেই সিং নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া সাবেক মুখ্যমন্ত্রীর পাঁচ আত্মীয় আহত হয়েছেন।
এদিন ভোরেও বিষ্ণুপুর জেলার ত্রংলাওবি গ্রামে বেশকিছু রকেট হামলা হয়। তবে ওই হামলায় হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি। একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কুকি জনগোষ্ঠী–অধ্যুষিত চূড়াচাঁদপুরের পাহাড় থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরের কোনো এলাকা থেকে রকেটগুলো ছোড়া হচ্ছে। তার কথায়, ‘এই প্রথম আমরা মণিপুরে বিদ্রোহীদের নিজেদের তৈরি রকেট হামলা চালাতে দেখলাম। রকেটগুলো মোটামুটি চার ফুট লম্বা।’
এদিকে মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং বলেছেন, ড্রোনের ব্যবহার প্রমাণ করে যে রাজ্যে ত্রাসের আবহাওয়া তৈরি হয়েছে এবং সন্ত্রাসী হামলা চলছে। নিরাপত্তা বাহিনী উচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে জানিয়েছে তিনি বলেন, উপত্যকার জেলাগুলোর বিভিন্ন অঞ্চলে তাদের মোতায়েন করা হয়েছে। বিশেষ করে এই মুহূর্তে তারা চূড়াচাঁদপুর সীমান্তবর্তী বিষ্ণুপুর ও কাংপোকপি জেলার সীমান্তবর্তী ইম্ফল থেকে পশ্চিমের দিকে যেতে শুরু করেছে।
অন্যদিকে বিস্ফোরক বহনকারী ড্রোন ব্যবহার করে আক্রমণের বিষয়টি তদন্তের জন্য পুলিশ, সেনাবাহিনী ও আধা সামরিক বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ১৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এই কমিটি সাম্প্রতিক হামলা নিয়ে তাদের প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা রয়েছে।