রাজধানী ডেস্ক: ব্যস্ততম নগরী ঢাকার সড়কে যানবাহন নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক সিগন্যাল ব্যবস্থা দীর্ঘ কয়েক বছর যাবৎ অচল। তবে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় ১১০টি সিগন্যাল পয়েন্টের মধ্যে সচল মাত্র একটি। বাকি গুলো ২ বছর ধরে অচল বলে দাবি কর্তৃপক্ষের। অপর দিকে সবশেষ ৬৫৪টি সিগন্যাল পোস্টের প্রায় তিন হাজার রঙিন বাতি মৃত প্রায়। এ পরিস্থিতিতে হাতের ইশারায়ই যানবাহন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টায় দীর্ঘ হয় যানজট।
আর এই ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মীর রেজাউল আলম জানান, ফুটপাত দখল করে রাখা যানজট সৃষ্টির অন্যতম কারন।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিকের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোঃ মুনিবুর রহমান আমার সংবাদকে বলেন, এ বিষয় নিয়ে আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জন-নিরাপত্তা বিভাগের সাথে সমন্বয় করে কাজ করছি।
১১০টি সিগন্যাল পয়েন্টে ও ৬৫৪টি সিগন্যাল পোস্টের সক্ষমতা বাড়াতে আমরা ঢাকার সড়কে আধুনিক ট্রাফিক ব্যবস্থা প্রতিস্থাপন করছি। যানজট নিরসনে ‘ইন্টেলিজেন্স ট্রাফিক সিস্টেম’ নগরীতে চালু করার পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে।
এই পরিকল্পনা কিভাবে বাস্তবায়ন হবে তা জানতে চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এর জন নিরাপত্তা বিভাগ এর সিনিয়র সচিব মোঃ মোস্তাফা কামাল উদ্দীন ও জন-নিরাপত্তা বিভাগ এর অন্য অতিরিক্ত সচিব মোঃ জাহাঙ্গীর আলম (পুলিশ ও এনটিএমসি) এবং মোঃ আবুল ফজর মীর উপ সচিবের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে ডিএমপির এডিসি (ট্রাফিক) মোঃ শফিকুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে আমার সংবাদকে জানান, আমাদের দেশে ট্রাফিক ব্যবস্থা সব সময় থাকে ব্যস্ত। সড়কের আয়তন এক দিকে চাহিদার তুলনায় যেমন ছোট , অন্য দিকে যানবাহনের সংখ্যা বেশি। আর এই কারনে অনেক সময় সড়ক ও মহাসড়কে যানজট দীর্ঘ হয়। তবে ঢাকার যানবাহন এখন পর্যন্ত হাতে নিয়ন্ত্রন ট্রাফিক ব্যবস্থাতেই চলছে। যে কারনে যানজট নিরসন করা যাচ্ছে না।
যানজট নিরসনে ‘ইন্টেলিজেন্স ট্রাফিক সিস্টেম’ নগরীতে চালু করার পরিকল্পনা
তিনি আরো জানান, সড়কে সুষ্ঠ ব্যবস্থাপনার পথে গণপরিবহন রিক্সার পাশাপাশি মানুষের চাপ থাকে নগরীতে, সব মিলে সড়ক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রন করা কঠিন হয়ে পরে। সড়কে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে প্রতিনিয়তো কাজ করে ট্রাফিক সদস্যরা। কখনো রোদ আবার বর্ষায় বৃষ্টি মাথায় নিয়ে দায়িত্বে থাকতে হয় ট্রাফিক বিভাগকে।
যানজট নিরসন একটি চ্যালেঞ্জিং পেশা, নানা ধরনে প্রতিকূল ঘটনার মধ্যে দিয়ে যেতে হয় এবং প্রতিনিয়ত কাজ করতে হয়।তবে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে ট্রাফিক সদস্যদের চেষ্টার কোন ঘাটতি থাকে না বলে জানান ডিএমপির ট্রাফিক এর এই কর্মকতা।
তবে সড়কে গণপরিবহন মালিক চালকদের প্রতিযোগী মনোভাব দূর করা গেলে সড়ক ব্যবস্থাকে আরো সুন্দর করা যায় বলে জানিয়েছেন ট্রাফিক বিভাগের দায়িত্বরত কর্মকর্তরা।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায় দিনের আলো ফুটার সাথে সাথে গাড়ির চাপ ও বেড়ে যায় এই শহরে। সময় ভাগ করে চলে দায়িত্ব দিনের ২৪ ঘন্টার মধ্যে ৩ সিফ্টে ভাগ হয়ে কাজ করেন ট্রাফিক সদস্যরা।
ইন্টেলিজেন্ট ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম
এদিকে সড়ক সড়ক নিরাপত্তায় কাজ শুরু করতে যাচ্ছে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রলায়। এবিষয়ে একটি চুক্তি হয়েছে বিশ্বব্যাংকের সাথে। বিশ্বব্যাংক অর্থ দেয়ার সাথে সাথেই শুরু হবে ‘ইন্টেলিজেন্ট ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম’ -এর কাজ । এর মধ্য দিয়ে প্রযুক্তির মাধ্যমে দেশের সব সড়ক-মহাসড়ক সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। ফলে কোনো ঘটনা ঘটলে সঙ্গে সঙ্গে সেটি জানা ও দেখা যাবে এবং ব্যবস্থা নেয়া যাবে।
এ জন্য সারা দেশের মহাসড়কে হাজারো সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হবে। গাড়ির গতি পরীক্ষার জন্য থাকবে গতি নির্ধারক সেন্সর-যুক্ত ক্যামেরা। সেগুলো থেকে পাওয়া ছবি ও তথ্য কেন্দ্রীয়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে।
মহাসড়কের বিভিন্ন জায়গায় ডিজিটাল বোর্ডও বসানো হবে। সেখানে যানজট বা সড়কের পরিস্থিতি জানতে পারবেন চালক ও যাত্রীরা।
সূত্র : দৈনিক আমার সংবাদ