হেল্থ ডেস্ক:
রাজধানীর বেইলি রোডে একটি ভবনে ভয়াবহ আগুনে নারী-শিশুসহ প্রাণ গেছে অন্তত ৪৫ জনের। আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। তাদের ঢাকা মেডিকেল, শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বেশিরভাগের অবস্থাই আশঙ্কাজনক।
বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে নয়টার কিছু পরে নিচ তলার একটি দোকানে আগুনের সূত্রপাত। মুহূর্তের ভেতর আগুন ছড়িয়ে পড়ে দোতালায় থাকা কাচ্চিভাই, খানাজ, ইলিয়নসহ ভবনটির সব দোকানে। প্রাণ বাচাঁতে এদিক সেদিক ছুটতে থাকে শিশু নারী পুরুষ সবাই। ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট প্রায় ২ ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ইলেকট্রিক ক্রেনের মাধ্যমে ভবন থেকে জীবিত নামিয়ে আনা হয় প্রায় ৭৫ জনকে।
ফায়ার সার্ভিস জানায়, ভবনের নিচতলার একটি দোকান থেকে আগুন লাগে। কালো ধোঁয়ার আচ্ছন্ন হয়ে যায় পুরো ভবন। যাতে শ্বাসকষ্টে প্রাণহানি বেড়েছে। ভবনটিতে বেশকিছু ফাস্টফুড ও রেস্টুরেন্ট ছিল। নিহতদের বেশিরভাগই রাতের খাবার খেতে গিয়েছিলেন সেখানে।
এদিকে, রাত যত বাড়তে থাকে স্বজনের খোঁজে শতশত মানুষ ভিড় করে বেইলী রোড়ের আগুন লাগা ভবনের সামনে। এই যখন অবস্থা তখন ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে ট্রলি নিয়ে অপেক্ষা মরদেহের জন্য। ফায়ার সার্ভিসের বিশাল এক গাড়ি ভর্তি লাশ আনা হয় সেখানে। একে একে ৩৩ জনের মরদেহ নামানো হয়। অন্যদিকে বার্ন ইউনিটে নেয়া হয় আরও ১০ জনের মরদেহ। পরে আরও একজনের মরদেহ আনা হয় ঢাকা মেডিকেলে।
অগ্নিকাণ্ডে নিহত ৪৫ জনের মধ্যে চারজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন- আলিশা, নাহিয়ান, লামিয়া ও তানজিলা। তাদের মরদেহ অন্য মরদেহগুলোর সঙ্গে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে রয়েছে। জানা গেছে, নিহতদের মধ্যে তিন শিশু ছাড়াও ১৯ জন নারী রয়েছেন।
এ সময় ঢাকা মেডিকেলে আসেন পুলিশ প্রধান, ডিএমপি কমিশনার, জন প্রতিনিধিসহ আরও অনেকে। আইজিপি জানান, যতদ্রুত সম্ভব আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
এদিকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে সভাপতি করা হয়েছে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরীকে। এছাড়া কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে রয়েছেন ঢাকা বিভাগের উপপরিচালক মো. ছালেহ উদ্দিন। এছাড়া সংশ্লিষ্ট জোনের ডিএডি, সিনিয়র স্টেশন অফিসার এবং ওয়ারহাউজ ইন্সপেক্টরকে কমিটির সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে।