আইন ও আদালত ডেস্ক: বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার হত্যা মামলার রায় ঘোষণা হবে আজ। এক বছরের মধ্যে মামলাটির বিচার শেষ হতে যাচ্ছে। রায়ে সন্তান হত্যার সর্বোচ্চ বিচার দাবি করেছে নিহত আবরারের পরিবার। দোষীদের ফাঁসি দেখতে চান তারা।
রোববার (২৮ নভেম্বর) সকালে পুরান ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইবুনাল-১ এ রায় ঘোষণা করা হবে। আসামী ২৫ জনের মধ্যে ২২ জনকে এরই মধ্যে আদালতে হাজির করা হয়েছে।
আবরারের ভাই বলেন, মামলার সব আসামিদের যেন সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়, সেই সাথে এই শাস্তি যেন দ্রুত কার্যকর করা হয়।
আবরারের মা বলেন, আর কেউ যেন এভাবে কারো উপর হাত তুলতে না পারে, আর কাউকে যেন এভাবে নির্মম-নিষ্ঠুর ভাবে জীবন দিতে না হয়। আর কোন মা-বাবার বুক যেন খালি না হয়, আর কোন বাবাকে যেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ছেলের লাশ নিয়ে ঘরে ফিরতে না হয়। এজন্য আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি দেয়া হোক।
আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ জানান, মামলায় আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড প্রত্যাশা করছি। তাদের এমন শাস্তি হওয়া দরকার, যাতে আগামীতে কোনা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এমন হত্যাকাণ্ড না হয়।
তিনি আরও বলেন, এ মামলায় ২৫ আসামির মধ্যে ২২ জন কারাগারে রয়েছে। এখনো তিনজন পলাতক। শুনেছি তারা নাকি দেশের বাইরে চলে গেছে। তাদেরও গ্রেপ্তার করে সর্বোচ্চ শাস্তি দিতে হবে।
এর আগে রোববার সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে গ্রেপ্তার থাকা ২২ আসামিকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। তাদের রাখা হয়েছে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের হাজতখানায়।
২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর বুয়েটের ২৫ ছাত্রের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। ২০২০ সালের ২১ জানুয়ারি অভিযোগপত্র আমলে নেন আদালত। একই বছরের ২ সেপ্টেম্বর বিচার শুরু হয় মামলাটির।
এর আগে ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে, বুয়েটের শেরে বাংলা হল থেকে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক্স প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে সিসিটিভি ফুটেজে তাকে হত্যার আলামত মেলে।
এ নিয়ে সেসময় দেশজুড়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। ঘটনার পর ২২ আসামীকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এখনও পলাতক তিন জন।
অভিযোগপত্রভুক্ত ২২ আসামি হলেন মেহেদী হাসান রাসেল, মুহতাসিম ফুয়াদ হোসেন, মো. অনিক সরকার, মেহেদী হাসান রবিন, ইফতি মোশাররফ সকাল, মো. মনিরুজ্জামান মনির, মো. মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, মো. মাজেদুর রহমান মাজেদ, মো. মুজাহিদুর রহমান, খন্দকার তাবাককারুল ইসলাম তানভীর, হোসাইন মোহাম্মদ তোহা, মো. আকাশ হোসেন, মো. শামীম বিল্লাহ, এ এস এম নাজমুস সাদাত, মোর্শেদ অমর্ত্য ইসলাম, মুয়াজ আবু হুরায়রা, মুনতাসির আল জেমি, অমিত সাহা, ইশতিয়াক আহমেদ মুন্না, মো. শামসুল আরেফিন রাফাত, মো. মিজানুর রহমান ও এস এম মাহমুদ সেতু।
পলাতক তিন আসামি হলেন মোর্শেদ-উজ-জামান মণ্ডল জিসান, এহতেশামুল রাব্বি তানিম ও মুজতবা রাফিদ।