
প্রশ্ন হল, এই সঙ্কট কতোটা গভীরভাবে আঘাত করতে পারে বাংলাদেশকে?
২০২১-২২ অর্থবছর শেষে জিডিপি বা অর্থনীতির আকার দাঁড়িয়েছে ৪৬৫ বিলিয়ন ডলারে। একই সময়ে, ৮২ বিলিয়নের আমদানি, ৫২ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আর ২১ বিলিয়নের রেমিট্যান্স আয়ে, বহির্খাতের মোট আকার ছিল ১৫৫ বিলিয়ন। যা জিডিপির সাড়ে ৩৫ শতাংশ। অর্থাৎ, সহজ করে বললে, পুরো অর্থনীতির এক তৃতীয়াংশ সমপরিমাণ সরাসরি যুক্ত বহির্বাণিজ্য ও সেবার সাথে। ফলে, সেখানকার যে কোন সঙ্কট যে ভোগাবে দারুণভাবে, তাতে সন্দেহ নেই একটুও।
সিপিডির বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ২০০৭ থেকে ২০০৯ এর যে বিশ্বমন্দা তা সেটা আসলে ছিল আর্থিক এবং অর্থনৈতিক সংকট। এবার পণ্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে সংকটের সৃষ্টি হয়েছে। দুটোর চরিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন।
অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, যেভাবে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে ইউরোপ-আমেরিকাতে সেখানে ভোক্তা ব্যয় দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। আর ভোক্তা ব্যয় দুর্বল হলে মন্দা আসবেই। তবে আমি মনে করি, আমরা কিছুটা স্বস্তির জায়গায় আছি কারণ আমরা এত মৌলিক জিনিস উৎপাদন করি যেটা খুব বড় মাপের মূল্যস্ফীতি না হলে আমাদের উপর আঘাত ফেলবে না।
অর্থনৈতিক মন্দার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় ইউরোপ আর আমেরিকার দেশগুলো। যেগুলোর সাথেও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। কেননা, রপ্তানি আয়ের চার ভাগের তিনভাগই আসে ওই দুই অঞ্চল থেকে। একইসাথে, প্রবাসী আয়েও দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উৎস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ফলে, মন্দার কারণে দেশগুলোতে বেকারত্ব বাড়লে কিংবা উচ্চ মূল্যস্ফীতিতে ক্রয় ক্ষমতা কমলে বড় ধাক্কা আসবে বাংলাদেশে।
যদিও, মন্দার খানিকটা সুফল পেয়ে থাকে উঠতি অর্থনীতির দেশগুলো; জ্বালানিসহ আমদানি নির্ভর পণ্যের চাহিদা কমে গেলে।