সারাদেশ ডেস্ক, এইউজেডনিউজ২৪: করোনা আতংকে দেশবাসী যখন দিশেহারা, তখন এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ীরা লাগামছাড়া। বাজারগুলোতে বেড়েই চলেছে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমুল্যের দাম। বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসের প্রভাবে অস্থির হয়ে পড়েছে রাজধানীর নিত্যপণ্যের বাজার। মহামারীর আশংকায় মানুষের মধ্যে খাবার মজুদের হিড়িক পড়েছে। আর এ সুযোগকে কাজে লাগিয়েই দাম বেড়েছে প্রায় প্রতিটি নিত্য পণ্যের। নিয়মি ক্রেতারা বাজারে এসে পড়ছেন বিপাকে। দুযোর্গ হোক বা উৎসব, প্রয়োজনের তুলনায় সরবরাহের ঘাটতি দেখিয়ে দাম বাড়ান ব্যবসায়ীরা। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরবরাহে কোন ঘাটতি নেই। কিন্তু পাইকারী বাজারে দাম বেশি।
গত চারদিন আগেও যে পিয়াজ ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে তা এখন বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা। আদা রসুনের দামও বেড়েছে কেজি প্রতি ৩০ থেকে ৪০ টাকা। সব রকমের মুরগীর মুরগীরও দাম বেড়েছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। তবে স্থিতিশীল গরুর মাংসের দাম।
গত তিনদিনে চালের দাম কেজিতে ৬ টাকা থেকে ৭টাকা দাম বেড়েছে। ক্রেতারা বলছেন, বাজারে সংকট না থাকলেও সরকারের তদারকির অভাবেই এমন দাম বাড়াচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। তবে, স্বস্তি রয়েছে সবজির বাজারে। নতুন আসা সবজির দাম কিছুটা বেশি হলেও শিম, টমেটো, বাঁধাকপি, মিষ্টি কুমড়া, চিচিঙ্গা, বরবটি বিক্রি হচ্ছে আগের দামেই।
করোনা ভাইরাসের কারণে লকডাউন হওয়ার আতঙ্কে দিনাজপুরে চালসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম হু হু করে বাড়ছে। দু’দিনের ব্যবধানে প্রতি কেজি চাল ৬ থেকে ৮টাকা এবং পেঁয়াজ ও রসুন প্রতিকেজি ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়েছে। এতে সাধারণ মানুষ পড়েছে চরম বিপাকে।
সরজমিনে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, করানো ভাইরাসের কারণে লকডাউন আতঙ্কে মানুষ প্রয়োজনের তুলনায় বেশি করে চাল মজুদ করছেন। শুধু চাল নয়, পেঁয়াজ ও রসুন প্রতিকেজিতে দাম বেড়েছে ২০ থেকে ৩০ টাকা। এ ছাড়াও ডাল,মরিচ,আলু,তেল, মসলাসহ অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম কিছুটা বেড়েছে।
এরমধ্যে দিনাজপুরের বাহাদুর বাজারে সব ধরনের চালে দাম বেড়েছে ৬ থেকে ৮টাকা। আর বস্তা প্রতি দাম বেড়েছে ৪’শ থকে ৫’শ টাকা। মিনিকেট,নাজির সাইল,স্বর্ন, গুটি স্বর্ণ,আঠাইশসহ বেড়েছে, সব ধরনের চালে দাম। করোনা ভাইরাসে লডাউনের আতঙ্কে মানুষ বেশি করে চাল কিনছে।
খুচরা বিক্রেতার বলছেন: পাইকাররা চালের দাম বাডিয়ে দেয়ায় বেশি দামে চাল বিক্রি করতে হচ্ছে তাদের।
সরেজমিনে দেখা যায়, দেশী পেঁয়াজ দু’দিন আগে বিক্রি হয়েছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে। আর বর্তমানে সেই পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬৫ টাকায়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বাজারে মানুষের উপস্থিত ও ক্রয় বেড়ে গেছে প্রচুর। মানুষের ধারণা, করোনা ভাইরাসের কারণে লকডাউন হলে বাজার-ঘাট,যানবাহন চলাচল সব বন্ধ হবে। প্রয়োজনের আর পাওয়া যাবে না খাদ্য। এ কারনেই কেনাকাটার হিড়িক বেড়েছে। আর এই সুযোগে চাল সহ খাদ্য সামগ্রীর দাম বাডিয়ে দিয়েছে মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা।
তবে বাজার মনিটরিং অব্যাহত রয়েছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে। অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানানো হয়েছে।
নেত্রকোনা শহরের মেছুয়া বাজারের পুরনো কিছু ব্যাবসায়ী সিন্ডিকেট করে দুই তিন দিনেই পেয়াজ ৪০ থেকে ৭০ থেকে ৮০ টাকায় নিয়ে গেছে। আলু রসুনসহ বিভিন্ন জিনিসের দাম বেড়েছে। সেইসাথে চিনিতে প্রতি কেজি পাঁচ টাকা দশ টাকা বেড়ে গেছে।
একই চিত্র জেলার মদন, মোহনগঞ্জ, দুর্গাপুর, বারহাট্টা, কেন্দুয়া, পুর্বধলা, আটপাড়া সহ সব উপজেলার গ্রামের বাজারগুলোতেও।
নেত্রকোনা চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মো. আব্দুল ওয়াহেদ বলেন, আগামী রবিবার থেকে প্রশাসনকে বলবো মোবাইল কোর্ট করতে। এছাড়া কিছুই করার নেই।
এদিকে, টাঙ্গাইল পৌর এলাকার বিভিন্ন বাজারে পেয়াজসহ বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দাম বেশি নেয়ায় ৪ অসাধু ব্যাবসায়ীকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করেছেন টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক।
টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলাম জানান, সারা বিশ্বে করোনা ভাইরাস মহামারী আকার ধারন করেছে। আমাদের দেশেও ইতিমধ্যে অনেকে আক্রান্ত হয়েছে। প্রবাসীদের হোম করোন্টাইনে থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সূত্র : এটিএন বাংলা, সময় টিভি ও চ্যানেল আই