রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ, সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচন পেছানোর প্রতিবাদে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইসলামী ছাত্রশিবির মনোনীত ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’। তারা বলছে, একটি বিশেষ দলের প্রেসক্রিপশন বাস্তবায়ন করেছে নির্বাচন কমিশন। রাকসু নির্বাচন করতে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি দলের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চায়। জাতীয়তাবাদবাদী শিক্ষক ফোরামের দলীয় সিদ্ধান্তে আবারও নির্বাচন পেছানো হয়েছে বলেও অভিযোগ তুলেছে তারা।
আজ সোমবার রাত ৯টার দিকে রাকসুর কোষাধ্যক্ষের কার্যালয়ে সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের সভাপতি ও সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোটের ভিপি প্রার্থী মোস্তাকুর রহমান (জাহিদ)। তিনি বলেন, ‘রাকসু নির্বাচন করতে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি দলের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চায়। তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতেই আজকের এই পরিস্থিতি। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এমন প্রহসন কোনোভাবেই কাম্য নয়। অনেক প্রার্থী রাকসু নির্বাচন করতে গিয়ে নিয়মিত ক্লাস পর্যন্ত করতে পারেননি, অনেক সময়, শ্রম ও অর্থ ব্যয় করে শিক্ষার্থীরা প্রচরণা চালিয়েছেন। সব বিষয়কে উপেক্ষা করে একটি দলের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে প্রশাসন শিক্ষার্থীদের অবমূল্যায়ন ও পক্ষপাতিত্বমূলক আচরণ করেছে।’
মোস্তাকুর রহমান আরও বলেন, ছাত্রদল হলে প্যানেল দিতে পারেনি। এ কারণে নির্বাচন ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে ২৫ সেপ্টেম্বরে পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আজ আবারও পরিকল্পিতভাবে পোষ্য কোটা ইস্যুকে সামনে এনে ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খল পরিবেশ তৈরি করা হলো, শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের হেনস্তা করার ঘটনা ঘটল। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সিন্ডিকেট মিটিং অনুষ্ঠিত হলো এবং তদন্ত কমিটি গঠিত হলো। কিন্তু অবাক করার বিষয় এই যে সব বিষয় উপেক্ষা করে শিক্ষক-কর্মকর্তা হেনস্থাকে সামনে এনে ক্যাম্পাসে কর্মবিরতি ঘোষণা করা হলো। পোষ্য কোটা, শিক্ষক নির্যাতন, শার্টডাউন ইত্যাদি ইস্যু সামনে এনে রাকসুকে বানচাল করতে বিএনপিপন্থী শিক্ষক, নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে বলে অভিযোগ করে ছাত্রশিবির মনোনীত প্যানেলের এই ভিপি প্রার্থী আরও বলেন, এর আগে ডাকসু ও জাকসুতে বিএনপি ও ছাত্রদল নির্বাচনকে বানচাল এবং ফলাফলকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে নানাবিধ ষড়যন্ত্র লিপ্ত হয়েছিল। এখানেও জাতীয়তাবাদবাদী শিক্ষক ফোরামের দলীয় সিদ্ধান্তে আবারও রাকসু নির্বাচন পিছিয়ে গেল।
নির্বাচন পেছানোর ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে মোস্তাকুর রহমান বলেন, ‘তারপরও আমরা বিশ্বাস করি যে শিক্ষার্থীরা থমকে যাবেন না, রাকসু আদায়ের মাধ্যমে প্রতিনিধি নির্বাচিত–বাছাই করে সব ষড়যন্ত্রের জবাব দেবেন এবং ক্যাম্পাসকে দলীয় লেজুড়বৃত্তি থেকে মুক্ত করে শিক্ষার্থীবান্ধব ক্যাম্পাস উপহার দেবেন।’ সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি মুজাহিদ ফয়সাল বলেন, নির্বাচন কমিশন ২৫ সেপ্টেম্বর নির্বাচন করার বিষয়ে দৃঢ় ছিল। এরপর নির্বাচন কমিশনের কথা শুনবেন তাঁরা। নির্বাচন কমিশন যদি তাদের সিদ্ধান্ত থেকে সরে না আসে, তাহলে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
এদিকে সংবাদ সম্মেলন শেষে রাকসুর কোষাধ্যক্ষের কার্যালয়ের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে ছাত্রশিবির। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন আবাসিক হল প্রদক্ষিণ করছে। মিছিল শেষে তারা শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বরে সমাবেশ করবে।