জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা ও বিশ্বজুড়ে ক্রমবর্ধমান জ্বালানির চাহিদা পূরণের জন্য পারমাণবিক শক্তিকে একটি নিরাপদ, পরিচ্ছন্ন ও টেকসই বিকল্প হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ওয়ার্ল্ড নিউক্লিয়ার অ্যাসোসিয়েশন প্রকাশিত এক প্রতিবেদন বলা হয়েছে, সারা বিশ্বে পারমাণবিক বিদ্যুতের ব্যবহার বাড়ছে। ২০২৪ সালে সারা বিশ্বে প্রায় ৪৪০টি পারমাণবিক চুল্লি থেকে মোট ২ হাজার ৬৬৭ টেরাওয়াট–ঘণ্টা বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়েছে। এই বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ বিশ্বব্যাপী মোট বিদ্যুতের চাহিদার প্রায় ৯ শতাংশ পূরণ করেছে। ওয়ার্ল্ড নিউক্লিয়ার অ্যাসোসিয়েশনের মহাপরিচালক সামা বিলবাও ই লিওন বলেন, ২০২৪ সালে পারমাণবিক শক্তি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের নতুন রেকর্ড হয়েছে। এটি প্রমাণ করে, এই শিল্প বেশ এগিয়ে গেছে। বৈশ্বিক জ্বালানি ও জলবায়ু রক্ষার জন্য এই রেকর্ডকে প্রতিবছর আরও বড় পরিসরে এগিয়ে নিতে হবে। ওয়ার্ল্ড নিউক্লিয়ার অ্যাসোসিয়েশনের ওয়ার্ল্ড নিউক্লিয়ার পারফরম্যান্স রিপোর্ট ২০২৫ অনুযায়ী, ২০২৪ সালে পারমাণবিক শক্তি থেকে বিদ্যুতের সর্বোচ্চ উৎপাদন হয়েছে।
এশিয়ার বিভিন্ন দেশে ছোট–বড় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত এক দশকে বিশ্বব্যাপী চালু হওয়া ৬৮টি চুল্লির মধ্যে ৫৬টিই এশিয়ার বিভিন্ন দেশে নির্মিত হয়েছে। বর্তমানে নির্মাণাধীন ৭০টি চুল্লির মধ্যে ৫৯টিই এশিয়ায় অবস্থিত। এই পরিসংখ্যান থেকে বলা যায়, ভবিষ্যতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের গতি আরও বাড়বে।
ওয়ার্ল্ড নিউক্লিয়ার অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য বলছে, বিশ্বব্যাপী বিদ্যুৎ উৎপাদনের সবচেয়ে বড় উৎস কয়লা ও গ্যাস। পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র কোনো গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন করে না বলে পরিচ্ছন্ন শক্তি উৎস হিসেবে বিবেচিত হয়। পরিবেশবাদী সংগঠন ফ্রেন্ডস অফ দ্য আর্থের তথ্যমতে, পারমাণবিক শক্তি জলবায়ু সংকটের একটি ধীর ও ব্যয়বহুল সমাধান। তেজস্ক্রিয় বর্জ্য মানুষ ও বন্য প্রাণীর জন্য বিপজ্জনক হলেও সাম্প্রতিক সময়ে জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমাতে ও কার্বন নির্গমন সীমিত করার জন্য অনেক দেশই পারমাণবিক শক্তির দিকে ঝুঁকছে।