বিএনপি ও জামায়াত—দুই দলই আগামী নির্বাচনে এনসিপিকে সঙ্গে রাখতে চায়।
বিএনপি কোনো আসনে ছাড় দিলেও যদি দলটির স্বতন্ত্র প্রার্থী দাঁড়িয়ে যান, তাহলে এনসিপির প্রার্থীদের জিতে আসা কঠিন হবে।
জামায়াতের সঙ্গে জোট বা সমঝোতায় গেলে এনসিপির গায়ে একটি নির্দিষ্ট মতাদর্শের ‘ট্যাগ’ লাগতে পারে।
বিএনপি বা জামায়াতের সঙ্গে নির্বাচনী জোটে গেলে লাভ-ক্ষতি কী হতে পারে, তা নিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নির্বাহী কাউন্সিলের সভায় আলোচনা হয়েছে। সভায় নেতাদের একটি অংশ জামায়াতের সঙ্গে নির্বাচনী জোটে যাওয়ার ব্যাপারে মত দিয়েছে। কেউ কেউ বিএনপির সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতায় যাওয়ার পক্ষে কথা বলেছেন। তবে নির্বাহী কাউন্সিলের সভায় অংশ নেওয়া বেশির ভাগ নেতা বিএনপি ও জামায়াতের বাইরে তৃতীয় কোনো জোট করে নির্বাচনে যাওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন।
নির্বাচনী জোটের হিসাবনিকাশ নিয়ে নির্বাহী কাউন্সিলের সভায় আলোচনা হওয়ার বিষয়টি এনসিপির একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। গত শুক্রবার বিকেল সাড়ে চারটা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সভা হয়। এনসিপির নির্বাহী কাউন্সিলের সদস্য এখন ৫১ জন। দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্যসচিব আখতার হোসেনসহ বেশির ভাগ নেতা শুক্রবারের সভায় অংশ নেন।
সভায় অংশ নেওয়া নেতাদের মধ্যে ছয়জনের সঙ্গে কথা বলেছে। তাঁরা বলেছেন, বিএনপি ও জামায়াত—দুই দলই আগামী নির্বাচনে এনসিপিকে সঙ্গে রাখতে চায়। বিএনপি বা জামায়াতের সঙ্গে কোনো নির্বাচনী জোট বা সমঝোতায় গেলে লাভ–ক্ষতি কী হতে পারে, তা নিয়ে নেতারা মতামত দিয়েছেন। বিএনপি ও জামায়াতের বাইরে তৃতীয় কোনো জোটে যাওয়া নিয়েও সভায় কথা হয়েছে।
‘নির্বাহী কাউন্সিলের সভায় নির্বাচনকেন্দ্রিক তৎপরতার পাশাপাশি সাংগঠনিক কার্যক্রমে মনোযোগ দেওয়ার কথা হয়েছে। আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহীদের সঙ্গে কথা বলে শিগগিরই দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করবে এনসিপি
এনসিপির মিডিয়া সেলের সম্পাদক মুশফিক উস সালেহীন
আলোচনার বিষয়বস্তু সম্পর্কে ওই নেতারা বলেন, বিএনপি কোনো আসনে ছাড় দিলেও যদি দলটির স্বতন্ত্র প্রার্থী দাঁড়িয়ে যান, তাহলে এনসিপির প্রার্থীদের জিতে আসা কঠিন হবে। এর ফলে বিএনপির সঙ্গে জোট বা সমঝোতায় গেলে এনসিপির কতটা লাভ হবে, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। আবার জামায়াতের সঙ্গে জোট বা সমঝোতায় গেলে এনসিপির গায়ে একটি নির্দিষ্ট মতাদর্শের ‘ট্যাগ’ লাগতে পারে। এটি দীর্ঘ মেয়াদে এনসিপির রাজনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। এনসিপির ‘মধ্যপন্থী’ চরিত্র প্রতিষ্ঠিত করতে হলে বিএনপি ও জামায়াতের বাইরে তৃতীয় জোটে থাকাই ভালো হবে—বিভিন্ন নেতার বক্তব্যে এসব বিষয় এসেছে।
সভায় অংশ নেওয়া এনসিপির মিডিয়া সেলের সম্পাদক মুশফিক উস সালেহীন বলেন, ‘নির্বাহী কাউন্সিলের সভায় নির্বাচনকেন্দ্রিক তৎপরতার পাশাপাশি সাংগঠনিক কার্যক্রমে মনোযোগ দেওয়ার কথা হয়েছে। আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহীদের সঙ্গে কথা বলে শিগগিরই দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করবে এনসিপি।’