সারাদেশ ডেস্ক : বান্দরবানের আলীকদম উপজেলার ৫ নম্বর কুরতকপাতা ইউনিয়নের মাংরতম পাড়া, ম্যানলিউপাড়া এবং সমথং পাড়ায় গত কয়েক দিন ধরে ব্যাপক আকারে কলেরার প্রাদূর্ভাব দেখা দিয়েছে। বর্তমানে এসব পাড়াসমূহে মুরং জনগোষ্ঠীর শতকরা প্রায় ষাট ভাগ মানুষ কলেরায় আক্রান্ত হয়ে মূমুর্ষ অবস্থায় জীবন-যাপন করছেন। আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে বেশ কয়েকজন নারী ও পুরুষ ইতোমধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কলেরা প্রাদূর্ভাবের শুরু থেকেই আলীকদম সেনা জোনের টহল দলের মাধ্যমে আক্রান্ত পাড়াগুলোতে নিয়মিতভাবে বিশুদ্ধ পানি, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, খাবার স্যালাইন ও প্রয়োজনীয় ঔষধ বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়। এছাড়া গত ১৪ জুন এসব এলাকায় সামরিক ও বেসামরিক চিকিৎসক দল পাঠানো হয় এবং একটি ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপন করা হয়।
এলাকার স্বাস্থ্য পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়াতে জনসাধারণের সুচিকিৎসার জন্য সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের আওতাধীন সদর দপ্তর ৬৯ পদাতিক ব্রিগেডের উদ্যোগে গতকাল বুধবার (১৬ জুন) জিএসও-২ (ইন্ট)-এর নেতৃত্বে আবারো ওই দূর্গম এলাকায় বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টার যোগে জরুরী স্বাস্থ্যপরিস্থিতি মোকাবেলায় বিপুল সংখ্যক জীবনরক্ষাকারী ঔষধ, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, কলেরা স্যালাইন, খাবার স্যালাইনসহ প্রয়োজনীয় অন্যান্য ঔষধ এবং শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানি পাঠানো হয়েছে।
এছাড়াও দূর্গত এলাকা থেকে তিন জন মুমূর্ষ রোগী- রেং অং ম্রো (১১), মাংলাই ম্রো (৫) ও ওয়াই চাদ ম্রো (৫৫)-কে হেলিকপ্টার যোগে বান্দরবান সেনানিবাসস্থ হেলিপ্যাড এ নিয়ে আসা হয় এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য বান্দরবান সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।
পরিস্থিতিতি বিবেচনা করে দূর্গতদের সহায়তায় প্রয়োজন অনুযায়ী সব ধরনের সহায়তার জন্য ২৪ পদাতিক ডিভিশনের ৬৯ পদাতিক ব্রিগেড সর্বদা প্রস্তুত রয়েছে।
সেনাসূত্র জানায়, সেনাবাহিনী যে পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত সকল ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর যেকোন আপদকালীন সময়ে তাদের পাশে থেকে সর্বাত্মক সহায়তা দিয়ে আসছে এটি তারই একটি দৃষ্টান্তমূলক উদাহরণ। সেনাবাহিনী ভবিষ্যতেও পার্বত্য এলাকার ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীসহ সব জাতি ও ধর্মের মানুষের পাশে থেকে তাদের জীবনমান উন্নয়ন এবং তাদের যে কোন প্রয়োজনে সবসময় নিরলস ভাবে কাজ করে যাবে।