জানা অজানা ডেস্ক, ২৩ নভেম্বর, ২০১৯ইং, এইউজেডনিউজ২৪: সংযুক্ত আরব আমিরাতের ডেরা দুবাই, বার দুবাই, আবুধাবি, শারজাহ, ফুজিরা এবং রাসুল কিমায় অন্তত ৪০-৪৫টি বাঙালি ড্যান্স বার রয়েছে। বাংলাদেশ থেকে পাঠানো তরুণীদের মূলত এসব বাঙালি বারে কাজ করতে নেওয়া হয়।
ড্যান্স বারে কাজ দেওয়ার নামে তরুণীদের সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইসহ বিভিন্ন শহরে পাচারে সক্রিয় রয়েছে বেশ কয়েকটি সংঘবদ্ধ চক্র। এদের প্রধান লক্ষ্য নিম্নবিত্ত পরিবারের তরুণীরা। তাঁদের অসহায়ত্বকে পুঁজি করে সেখানে নিয়ে যৌন পেশায়ও বাধ্য করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, এসব চক্রের অনেকে রাজধানী ও আশপাশের জেলায় নাচের স্কুল (ড্যান্স স্কুল) খুলে এই নারী পাচারে যুক্ত রয়েছে। তারা একেক জন তরুণীকে বিদেশ যেতে রাজি করানো বাবদ ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা পায় আরব আমিরাতে থাকা মূল চক্রের কাছ থেকে। এসব তরুণীদের মূলত তিন মাসের পর্যটক ভিসায় পাঠানো হয়।
তরুণীদের সংগ্রহ, পাসপোর্ট করানো, ভিসা সংগ্রহ, বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন পার করানো এবং আরব আমিরাতে ‘ড্যান্স বারে’ পৌঁছে দেওয়া পর্যন্ত সবখানে এই চক্রের লোক রয়েছে। বারে নৃত্য করার নাম করে নেওয়া হলেও এদের অনেককে যৌন পেশায় বাধ্য করানোর অভিযোগ রয়েছে। এক শ্রেণির ট্রাভেল এজেন্সিও এই পাচার কাজে জড়িত রয়েছে। সরকারি একটি সংস্থার প্রাথমিক অনুসন্ধানে এমন অন্তত ৫০ জনের নাম পাওয়া গেছে, যারা এভাবে তরুণীদের পর্যটন ভিসায় দুবাই, আবুধাবি, শারজায় পাঠানোতে যুক্ত রয়েছে।
আরব আমিরাতে এভাবে গিয়েছিলেন, দেশে ফিরে আসা এমন বেশ কয়েকজন তরুণীর সঙ্গে এ প্রতিবেদকের কথা হয়েছে। তাঁরা বলছেন, পরিবারে আর্থিক অনটন রয়েছে, অল্প বয়সে বিয়ের পর তালাক হয়েছে এবং পোশাক কারখানায় কাজ করেন; এমন মেয়েরা সবচেয়ে বেশি এসব পাচারকারীর খপ্পরে পড়ছেন। সংযুক্ত আরব আমিরাতের ডেরা দুবাই, বার দুবাই, আবুধাবি, শারজাহ, ফুজিরা এবং রাসুল কিমায় অন্তত ৪০-৪৫টি বাঙালি ড্যান্স বার রয়েছে। বাংলাদেশ থেকে পাঠানো তরুণীদের মূলত এসব বাঙালি বারে কাজ করতে নেওয়া হয়।
দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ক্লাবগুলোতে এসব তরুণীদের পাঠানো হয়। তবে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর থেকে এ সংখ্যা বেশি। গত এক বছরে অন্তত তিন থেকে চার শ মেয়ে এভাবে তিন মাসের পর্যটন ভিসায় আরব আমিরাতের ড্যান্স বারে গিয়েছেন বলে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে। এর মধ্যে একই তরুণী একাধিকবারও গেছেন, এমনও আছে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের অভ্যন্তরীণ সিদ্ধান্তে ২০১২ সালের আগস্ট থেকে বাংলাদেশের পেশাজীবীদের ভিসা দেওয়া বন্ধ রয়েছে। পর্যটক ভিসা পাওয়াও সহজ নয়। কিন্তু ‘ড্যান্স বারে’ কাজ করে ফিরে আসা কয়েকজন তরুণী জানিয়েছেন, তাদের ভিসা পাওয়ার বিষয়ে তেমন প্রতিবন্ধকতা নেই। তিন মাস পর দেশে ফিরে এসে এরা কিছুদিন পর আবারও তিন মাসের পর্যটক ভিসা নিয়ে আরব আমিরাতে যাচ্ছেন। তাঁদের ভাষ্যমতে, নিম্নবিত্ত পরিবার থেকে গিয়ে চাকচিক্যময় জীবনে গিয়ে অনেকেই দেশে ফিরে খাপ খাওয়াতে পারেন না। তাই শুরুতে জোর করে যৌনকর্মী হিসেবে কাজ করালেও পরে অনেকেই দেশে ফিরে আবারও সেখানে যাচ্ছেন অর্থের কারণে।
এ বছরের ২৯ মে দুবাই ভিত্তিক সংবাদপত্র গালফ নিউজে প্রকাশিত এক সংবাদে বলা হয়, দুবাই পুলিশ চারজন অপ্রাপ্তবয়স্ক বাঙালি তরুণীকে একটি নাইটক্লাব থেকে উদ্ধার করেছে। পাসপোর্টে ভুল তথ্য দিয়ে তাদের প্রাপ্তবয়স্ক দেখানো হয়েছিল। নাচের কথা বলে তাদের নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তাদের পাসপোর্ট বানিয়ে দেওয়া এবং সেখানে নিয়ে যাওয়ার খরচ এক ব্যক্তি বহন করেন। এই চারজনের একজন জানিয়েছিল তাঁর পরিবার গরিব। তাদের জন্য উপার্জন করতে নাচের প্রস্তাবে রাজি হয়েছিল। কিন্তু সেখানে যাওয়ার পর প্রতি মাসে অন্তত তিনজন সেবাগ্রহীতার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করতে তাকে বাধ্য করা হয়।
নিম্নবিত্ত পরিবারের মেয়েরা
সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ফিরে আসা যাদের সঙ্গে এ প্রতিবেদকের কথা হয়েছে, তাঁদের বয়স ১৬ থেকে ২২ বছরের মধ্যে। অনেকেই থাকেন বস্তিতে। সংগত কারণে পরিচয় প্রকাশ করা যাচ্ছে না।
নারায়ণগঞ্জের একটি বস্তি থেকে যাওয়া ১৯ বছরের এক তরুণী এই কাজে যুক্ত হওয়ার বর্ণনা দিতে গিয়ে এ প্রতিবেদককে বলেন, সাত-আট বছর আগে তিন ভাইবোনকে রেখে তাঁর বাবা অন্যত্র বিয়ে করেন। এরপর তাঁদের মা পোশাক কারখানায় কাজ করে তাঁদের বড় করেন। মা অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে পরিবারের হাল ধরতে হয়। তিনি পোশাক কারখানায় কাজ নেন। কিন্তু তা দিয়ে সংসার চলছিল না। তখন বস্তির এক তরুণী তাঁকে দুবাই যাওয়ার বিষয়টি জানান।
সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পড়া এই তরুণী জানান, ২০১৮ সালের নভেম্বরে অনিক সরকার নামে এক যুবকের মাধ্যমে তিনি প্রথম আরব আমিরাতের ‘ড্যান্স ক্লাবে’ যান। তিন মাস থেকে ফিরে আসেন। এরপর এই বছরের মাঝামাঝিতে আরেকবার গিয়েছিলেন। নাচের কথা বলে নেওয়া হলেও একপর্যায়ে যৌন পেশায় বাধ্য করা হয়।
ঢাকার একটি বস্তিতে বসবাসকারী ১৮ বছর বয়সী আরেক তরুণী জানান, প্রেম করে পছন্দের এক যুবককে তিনি বিয়ে করেছিলেন। বিয়ের পর তার পরিবারের কাছ থেকে টাকা নিতে শুরু করে সেই ছেলে। একপর্যায়ে স্বামী বিদেশ চলে যায়। তাঁকে চলার জন্য কোনো টাকা দেয় না। নিজের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তরুণী কাজের সন্ধানে ছিলেন। তখন পাড়ার এক মেয়ে তাঁকে দুবাইয়ে কাজের কথা বলে। পরিচয় করিয়ে দেন দুবাই থাকা মহিউদ্দিন নামে এক যুবকের সঙ্গে। তাঁর মাধ্যমে তিনি দুবাই যান। মাসিক আয়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে না পারায় এক মাসে বারের মালিক তাঁকে বেতন দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দেয়। পরে তাঁকে যৌন পেশায় বাধ্য করা হয়।
এই তরুণী জানান, তিন মাস থেকে তিনি দেশে ফিরে আসেন। কিন্তু সেখানকার জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়ে যাওয়ায় দেশে এসে তিনি খাপ খাওয়াতে পারছেন না। আশপাশের লোকজনও কানাঘুষা করছে। তাই আবারও সেখানে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন।
যাওয়ার প্রক্রিয়া
‘ড্যান্স বারে’ কাজ করে দেশে ফিরে আসা কয়েকজন তরুণীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আরব আমিরাতে যাওয়ার বিষয়টি কয়েক ধাপে সম্পন্ন হয়। যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলে দেশে থাকা এজেন্টরা মেয়েদের ছবি ‘ড্যান্স বারের’ মালিকদের কাছে পাঠান। সেখান থেকে পছন্দ করলে তাদের পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়। কখনো কখনো নতুন মেয়েদের দেখতে বার মালিকেরা তাদের প্রতিনিধিকে এ দেশে পাঠান। এরপর তাদের পাসপোর্ট করে দেওয়া হয়।
তিন মাস থেকে ফিরে আসা এক তরুণী জানান, আরব আমিরাতে যাওয়া-আসার পুরো খরচ বহন করেন ‘ড্যান্স বারের’ মালিকেরা। যাওয়ার আগে তাদের অগ্রিম ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। পৌঁছানোর পর তাদের একটি কক্ষে রাখা হয়। প্রতি কক্ষে ১০-১২ জন থাকেন। থাকা-খাওয়ার খরচ ‘ড্যান্স বারের’ মালিক বহন করেন।
আরেক তরুণী জানান, বাসা থেকে ‘ড্যান্স বারে’ তাঁদের গাড়িতে করে নেওয়া হয়। রাত নয়টা থেকে তিনটা পর্যন্ত বারের ‘ড্যান্স ফ্লোরে’ তাঁদের নাচতে হয়। কাজ শেষে আবার গাড়িতে করে বাসায় ফিরিয়ে দেওয়া হয়। বাসায় তাঁদের তালাবদ্ধ করে রাখা হয়। বাসা ও ড্যান্স বারের বাইরে আর কোথাও তাঁদের যাওয়ার সুযোগ নেই। কদাচিৎ তাঁদের বাইরে ঘুরতে নেওয়া হয়।
বেঁধে দেওয়া লক্ষ্যমাত্রা এবং যৌন পেশা
ড্যান্স বারে কাজ করে ফিরে আসা এই তরুণীরা জানান, আরব আমিরাতের বাঙালি ড্যান্স বারগুলোতে খদ্দরদের বড় অংশই প্রবাসী বাঙালি। বারের সবকিছু চলে টোকেনের ভিত্তিতে। বারে ঢুকতে ৫০ দিরহাম (প্রায় ১১৫০ টাকা) দিয়ে টোকেন কিনতে হয়। সেবাগ্রহীতা পছন্দের কোনো তরুণীকে নাচতে বললে সে জন্য ওই তরুণীকে টোকেন দিতে হয়। প্রতি টোকেনের দাম ৫০ দিরহাম। বারের মালিকের প্রতিনিধি সেই টোকেনগুলো সংগ্রহ করেন এবং সংশ্লিষ্ট তরুণীর নামের পাশে সংখ্যা লিখে রাখেন।
প্রতি তরুণীর মাসিক বেতন ধরা হয় ৫০ হাজার টাকা। আর এই বেতন পেতে হলে তাঁকে সেবা গ্রহীতাদের কাছ থেকে মাসে কমপক্ষে তিন শটি টোকেন পেতে হয়। যা বাংলাদেশি টাকায় তিন লাখ ৪৫ হাজার টাকার মতো। কোনো মেয়ে যদি তিন শ টোকেনের বেশি সংগ্রহ করতে পারেন তাহলে আনুপাতিক হারে তাঁর বেতনও বাড়ে। তিন শ টোকেনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে না পারলে ওই মাসের বেতন দেওয়া হয় না।
ভুক্তভোগী কয়েক তরুণী জানান, ড্যান্স বারে কাজ করার প্রথম শর্ত হলো চেহারা ভালো হতে হবে। অনেক মেয়েই ঠিকমতো নাচ পারেন না। তাঁরা মাসে তিন শ টোকেনও সংগ্রহ করতে পারেন না। তখন ‘ড্যান্স বারের’ মালিকেরা তাঁদের জোর করে সেবাগ্রহীতার সঙ্গে বাইরে পাঠান। আর সেবাগ্রহীতারা তখন ২০ থেকে ৩০টি টোকেন ড্যান্স বারের মালিকের কাছ থেকে কিনে নেন।
যুক্ত কিছু নাচের স্কুল
তরুণীদের ভাষ্যমতে, ড্যান্স বারে কাজ করে ফিরে আসা তরুণীরা পরে অন্যদের উদ্বুদ্ধ করে ভালো উপার্জনের আশ্বাস দিয়ে। এরপর তাদের এজেন্ট বা চক্রের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেন। এ জন্য মাথাপিছু কমিশন পান।
এই বক্তব্যের সূত্র ধরে ঢাকার কয়েকটি কথিত ‘ড্যান্স স্কুলে’ খোঁজ-খবর করা হয়। এর মধ্যে অনিক সরকার নামে যে যুবকের কথা ওই তরুণীরা জানিয়েছে তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহে। লেখাপড়া করেছেন পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত। তিনি একটি প্রতিষ্ঠানে নাচ শেখেন। এক সময় দুবাই যান। সেখান থেকে ফিরে এসে নিজেই নাচের প্রতিষ্ঠান খোলেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে নাচের স্কুলের সঙ্গে যুক্ত এক ব্যক্তি বলেন, নৃত্য শেখানোর নাম করে এই যুবক দীর্ঘদিন ধরেই অপেক্ষাকৃত কম বয়সী তরুণীদের মেয়েদের দেশের বাইরে পাঠাচ্ছেন। তাঁর চলাফেরাও বেশ বিলাসী।
ভুক্তভোগী কয়েকজন তরুণী জানান, নারায়ণগঞ্জের ‘গাঙচিল ড্যান্স ফ্লোর’ এবং ‘তারার মেলা নৃত্য একাডেমি’ এর শিক্ষক মো. আকতার হোসেনও মেয়েদের বাইরে পাঠানোর সঙ্গে যুক্ত। ওই দুই প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন ছাত্রও একই কাজে যুক্ত বলে অভিযোগ আছে।
আকতারের একটি মুঠোফোন নম্বর সংগ্রহ করে যোগাযোগ করলে তাঁর স্ত্রী মৌসুমি ফোনটি ধরেন। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, ছয় দিন আগে অনিক নামে আকতারের পরিচিত এক ছেলে তাঁকে ডেকে নেন। এরপর থেকে তাঁর ফোন বন্ধ। বাসায়ও ফেরেননি। তাঁর কাছ থেকে অনিকের মুঠোফোন নম্বর সংগ্রহ করে দেখা যায় এই অনিক ‘এডিসি অনিক ড্যান্স কোম্পানির’ সেই অনিক সরকার। তার মুঠোফোন যোগাযোগ করে সেটিও বন্ধ পাওয়া গেছে।
এই ঘটনা খোঁজ করতে গিয়ে জানা যায় বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরেও আছে। নারায়ণগঞ্জে র্যাব-১১ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলেপ উদ্দিন এ প্রতিবেদককে বলেন, এ বিষয়ে তারাও খোঁজ-খবর নিচ্ছেন। বাংলাদেশে এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত দু জায়গায়ই নারী পাচারকারী বিভিন্ন চক্রের বিষয়ে তাঁরা তথ্য পেয়েছেন।
এই কর্মকর্তা জানান, তাঁরা তথ্য পেয়েছেন যে, পাচারের শিকার মেয়েদের পাসপোর্ট, ভিসা থেকে শুরু করে যাতায়াত ও বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন পার হওয়ার যাবতীয় খরচ আরব আমিরাতের বার মালিকেরা বহন করে থাকে। এ জন্য প্রতিটি জায়গায় চক্রের লোকজন রয়েছে।
এ বিষয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও মানবাধিকার কর্মী সুলতানা কামাল বলছেন, এটা পুরোপুরি আদিম ব্যবসার মতো। সভ্য সমাজে এটা চিন্তা করা যায় না। মেয়েদের অসহায়ত্বকে পুঁজি করে পুরো বিষয়টি ঘটছে। সূত্র : দেশে বিদেশে ও প্রথম আলো