স্পোর্টস ডেস্ব, ২২ অক্টোবর (এইইউজেডনিউজ২৪)- ক্রিকেটারদের ধর্মঘট বিষয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন মঙ্গলবার বলেছেন, বাংলাদেশের ক্রিকেটকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র চলছে। তিনি বলেন, ‘তারা (ক্রিকেটার) খেলতে চাইলে খেলবে, না খেলতে চাইলে আমার কিছু করার নাই।’
১১ দফা দাবিতে ক্রিকেটারদের ধর্মঘট ডাকার পরেরদিন বোর্ডের পরিচালকদের সাথে জরুরি বৈঠকে বসেন বিসিবি বস।বৈঠক শেষে মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামের সংবাদ সম্মেলন কক্ষে নাজমুল হাসান বলেন, ‘যে দাবিগুলো চাইলেই পাবে সেগুলো আমাদের না বলে সরাসরি বয়কটে যাওয়া পূর্বপরিকল্পিত একটা ব্যাপার। যে জিনিসগুলো ওরা চাইলেই পাবে সেগুলো আমাদের কাছে চাচ্ছে না কেন?’
তিনি বলেন, ‘তাদের (ক্রিকেটার) দাবিগুলো আমরা দেখেছি। আমরা শকড, কারণ তারা এই দাবিগুলো নিয়ে আগে আমাদের কাছে আসেনি। তারা আমাদের কাছে আসতে পারতো, আমরা তাদের সব দাবি মেনে নিতাম।’
কিছু গোষ্ঠী বিশ্বে বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভাবমূর্তি নষ্টের ষড়যন্ত্র করছে এবং তারা শীর্ষ ক্রিকেটারদের বোর্ডের বিপক্ষে যেতে উসকানি দিচ্ছে, বলেন বিসিবি সভাপতি।
টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার পর থেকে ভারতে গিয়ে এখনও কোনো পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলতে পারেনি বাংলাদেশ। এখন যখন প্রথম সিরিজ খেলতে যাবে ক্রিকেটাররা, তার আগ মুহূর্তে এ আন্দোলন। পাপন বলেন, ‘ভারতে পূর্ণাঙ্গ সিরিজে এই প্রথম যাচ্ছে। এত কষ্ট করে একটি ফুল সিরিজ ভারত থেকে আসলো। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু হচ্ছে এবং প্রথম খেলাটাই ভারতের সাথে। অথচ তার আগেই তারা বলে দিলো, আমরা খেলবো না।’
পাপনের কাছে মনে হচ্ছে, এসবই পূর্বপরিকল্পিত। তিনি বলেন, ‘ঠিক এমন সময়টাতেই ধর্মঘট ডেকে ক্যাম্পে যোগ না দিয়ে তারা কি করতে চাচ্ছে, এটা আমাদের কাছে পরিষ্কার। যা যা জিনিস ওরা চাইলেই পাবে, তবুও আমাদের কাছে আসলো না। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে এটা পুরোপুরি প্রি-প্ল্যানড। ওরা আমাদের কাছে দাবি না দিয়ে মিডিয়ায় বলেছে। তারা আপাতত সাকসেস। তারা আমাদের কাছে দাবি না দিয়ে আগেই খেলা বন্ধ করেছে। এটা কোনো পূর্বপরিকল্পনার অংশ।’
কখন থেকে এই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে? পাপনের ধারণা বিসিবির এক পরিচালক (ক্যাসিনো ইস্যুতে) গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই এই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের এক ডাইরেক্টর এরেস্ট হওয়ার পর থেকেই সবার টার্গেটে পরিণত হয়েছি আমি নিজে এবং আমার বোর্ড। তারা প্রথমে চেষ্টা করেছে নানাভাবে আমাদের ক্ষতি করার। আমাদের আক্রমণ করে যদি বাইরে পাঠানো যায়, বোর্ডকে নিষিদ্ধ করার চেষ্টা করছে। ওটাতে তারা সফল হয়নি। এখন সেকেন্ড স্টেপ চলছে। যদি কোনোভাবে ভারত সফরটা মিস করা যায়, তাহলে বড় ধরনের একটা সমস্যায় পড়তে পারি।’
পাপনের বিশ্বাস এটা ষড়যন্ত্রেরই অংশ। তিনি বলেন, ‘তারা (ক্রিকেটাররা) কেন আমাদের কাছে কিছু না চেয়ে খেলা বন্ধ করলো? ক্যাম্পেও যোগ দেবে না। সবই ষড়যন্ত্রের অংশ। বাংলাদেশ ক্রিকেটকে ধ্বংস করে দিতে চাচ্ছে।’
পাপনের ধারণা ক্রিকেটাররা সবাই জেনে-বুঝে এ আন্দোলনে যোগ দেয়নি। তিনি বলেন, ‘ক্রিকেটার যারা আছে তাদের বেশিরভাগই ক্রিকেটকে ভালোবাসে এবং দেশকে ভালোবাসে। দেশের ক্রিকেটপ্রেমীরাও। আমার বিশ্বাস, অধিকাংশ খেলোয়াড়ই জেনে বুঝে যোগ দেয়নি। হয়তো দু-একজন জড়িত। তাদের খুঁজে বের করতে হবে।’