ইসরায়েলে বড় আক্রমণের ঘোষণা দিয়েছে লেবাননের প্রতিরোধ যোদ্ধাদের সংগঠন হিজবুল্লাহ। জুলাই মাসে বৈরুতে সংগঠনটির শীর্ষ কমান্ডারকে হত্যার প্রতিক্রিয়ায় এই ঘোষণা দিয়েছে যোদ্ধারা। খবর খালিজ টাইমস।
রোববার (২৫ আগস্ট) ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহ বলেছে, তারা প্রচুর সংখ্যক ড্রোন এবং রকেট দিয়ে ইসরায়েলে আক্রমণ শুরু করেছে। এদিন ইসরায়েলের অন্তত ১১টি সামরিক ঘাঁটি ও ব্যারাক লক্ষ্য করে তিন শতাধিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে তারা। এ হামলায় ড্রোন ব্যবহারের কথাও জানিয়েছে লেবাননের প্রতিরোধ গোষ্ঠীটি। হামলার পর লেবাননের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হামলার প্রথম ধাপ সফলভাবে সম্পন্ন করেছে।
মাদ্বীন টেলিভিশনের খবরে আরও বলা হয়, লেবাননের পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকা আল জালিল থেকে ইসরায়েলের একাধিক অঞ্চলে ৭০টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে হিজবুল্লাহ।
এদিকে লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল বাহিনী। পৃথক হামলায় অন্তত তিনজন নিহত এবং দুইজন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। বার্তা সংস্থা আনাদুলু জানিয়েছে, লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খিয়ামে একটি গাড়িতে ড্রোন হামলায় একজন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া টিরি গ্রামে ইসরায়েলের হামলায় দুজন নিহত হন। তবে নিহত ব্যক্তিদের সম্পর্কে বিস্তারিত কোনো তথ্য দেয়নি তারা।
হিজবুল্লাহর পক্ষ থেকে সংগঠনটির মিত্র শিয়া আমালের এক যোদ্ধা নিহত হওয়ার কথা জানানো হয়েছে। সংগঠনটি বলেছে, নিহত ব্যক্তির নাম আয়মান কামাল ইদ্রিস। তিনি জাতীয় ও জিহাদি দায়িত্ব পালন করছিলেন। তবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যে তিন ব্যক্তির নিহত হওয়ার তথ্য দিয়েছে, তাদের মধ্যে কামাল আছেন কি না, তা জানা যায়নি।
অন্যদিকে হিজবুল্লাহ’র হামলার পর ইসরায়েলে ৪৮ ঘণ্টার জরুরি অবস্থা জারি করেছে দেশটি। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট এই ঘোষণা দিয়েছেন বলে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমের বরাতে জানিয়েছে আল জাজিরা। এতে বেসামরিক নাগরিকদের জন্য সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে কিছু নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে জনসমাগত সীমিত এবং নির্ধারিত এলাকায় চলাফেরা না করতে বলা হয়েছে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট বলেছেন, আত্মরক্ষার জন্য যা যা করা দরকার, ইসরায়েল তা করবে। তার কথায়, “ইসরায়েলের নাগরিকদের বিরুদ্ধে আসন্ন হুমকিকে নস্যাৎ করার জন্য আমরা লেবাননে সুনির্দিষ্ট হামলা চালিয়েছি। আমরা বৈরুতের কার্যক্রম ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছি এবং আমাদের নাগরিকদের রক্ষা করার জন্য সব উপায় ব্যবহার করতে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।”
এদিন দক্ষিণ লেবানন থেকে আসা রকেটগুলোকে গুলি করার পাশাপাশি ইসরায়েলে সতর্কতামূলক সাইরেনও বেজে ওঠে। একইসঙ্গে দেশের বেশ কয়েকটি এলাকায় বিস্ফোরণের শব্দও শোনা গেছে। ইসরায়েলের ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডম অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা বলেছে, তারা সারা দেশে উচ্চ সতর্কতায় রয়েছে। তবে অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবার তথ্যমতে, এসব হামলায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।