চাঁদপুর প্রতিনিধি: ফরিদগঞ্জ এআর পাইলট মডেল সরকারি হাইস্কুলের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের নিয়ে দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হলো ব্যতিক্রমী সংগঠন বাঁধন ৭৯। এই উপলক্ষে গতকাল বর্নাঢ্য শোভাযাত্রা ও সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের মাধ্যমে সংগঠনের দিনের নানা কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। তার পর শুরু শিক্ষাজীবনের নানা স্মৃতি নিয়ে আড্ডা। এর আগে সকালে তাদের প্রাণের বিদ্যাপীঠ ফরিদগঞ্জ এআর মডেল সরকারি হাইস্কুল মাঠ থেকে শোভাযাত্রা যাত্রা শুরু হয়। এটি ফরিদগঞ্জ বাজার প্রদক্ষিণ করে। পরে প্রেস ক্লাবে গিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় মিলিত হয়।
বাঁধনের সহ-সভাপতি, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ফরিদ আহমেদ রিপনের সঞ্চালনায় ও সাবেক সচিব ড. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন, প্রকৌশলী মহেশ চন্দ্র শর্মা, নোয়াখালী জেলা রেজিস্ট্রার শাহাজাহান সর্দার, প্রধান শিক্ষক রফিকুল আমিন কাজল, সমাজসেবক কামাল হোসেন মিয়াজী।
এসময় ৭৯ ব্যাচ বাঁধন সংগঠনের সভাপতি সাবেক সচিব ড. শাহাদাত হোসেন বলেন, বাঁধনের মূল লক্ষ্য হচ্ছে, আগামী দিনে সামাজিক নানা কর্মকাণ্ড নিয়ে যেন পথ চলতে পারে। তার জন্য ১৯৭৯ সালে যারা এসএসসি পাশ করেছে তাদেরকে ঐক্যবদ্ধ করা। একই সঙ্গে তার জীবনের প্রতিষ্ঠা পাওয়ার নির্মাণ গাঁথুনি তুলে ধরেন। এই জন্য প্রয়াত শিক্ষক আবুল কাশেমের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তিনি। কারণ, একজন কৃষকের ছেলে এই শাহাদাত হোসেনকে ফসলের মাঠ থেকে তুলে এনে শিক্ষায় আলোয় আলোকিত করেছিলেন এই আবুল কাশেম স্যার। এসময় প্রয়াত কাশেম স্যার সহ প্রতিষ্ঠানটির অন্যান্য শিক্ষকদের স্মরণ করে সরকারের সাবেক সচিব ডক্টর সাহাদাৎ হোসেন আবেগঘন পরিবেশে জীবনে মানুষ হওয়ার কথা বলেন, জমিজিরাত থাকার পরও বাবা ছিলেন একজন সাধারণ কৃষক। কিন্তু পরিবেশ প্রতিবেশ অনুকূলে না থাকায় শিক্ষার আলো থেকে অনেকটাই বঞ্চিত হওয়ার উপক্রম। ফলে অকালে ঝরে যাওয়া প্রদীপ থেকে আলোর মুখ দেখলাম সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে চাকুরী পেয়ে। সৃষ্টি কর্তার পরেই যার পুরো অবদান ছিলো প্রয়াত কাশেম স্যারের। আরেক গল্প তুলে ধরেন শাহজাহান সরদার। কীভাবে চা দোকানি বাবার সহায়তা করেও আলোকিত আরেকজন মানুষ হলেন তিনি।
সংগঠনটির সহ-সভাপতি গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ফরিদ আহমেদ আবেগঘন মুহূর্তে বলেন, বাবা মরহুম কলিম উল্যাহ মিয়াজীর বড় সন্তান হিসেবে নিজেকে ধন্য মনে করেছি এই প্রিয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশুনা করতে পেরে। বাবা এআর পাইলট হাইস্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সেক্রেটারী থাকা কালীন স্কুলটির উন্নয়নে যৎসামান্য অবদান ছিলো। তার আদর্শে আজ আমি নিজেকে ধন্য মনে করি এই প্রিয় বিদ্যাপীঠের একজন সাবেক ছাত্র হিসেবে। তাই আগামীতে বাঁধন ৭৯ সংগঠনটির প্রত্যেক সদস্যকে নিয়ে কাঁধে কাঁধ মিলে এগিয়ে যেতে বাকী দিনগুলোতে। তাদেরকে নিয়ে কিছু দিতে চাই নতুন প্রজন্মকে।
অনুষ্ঠানে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মহেশ শর্মা বলেন, আমাদের মধ্যে একই ক্লাসে পড়াশোনা করা প্রতিটি মানুষকে একই প্লাটফর্মে নিয়ে আসা হবে। সেই জন্য বাঁধনের সৃষ্টি। তাই চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ এআর পাইলট সরকারি হাইস্কুল থেকেই তা ছড়িয়ে দিতে চাই সারা দেশে।
এদিকে, শনিবার সকাল ১০টা থেকে শুরু হওয়া ব্যতিক্রমধর্মী এমন আয়োজনের সমাপ্তি ঘটে রাত ঠিক ১০টায়।