স্পোর্টস ডেস্ক: আগের দুই ম্যাচে উভয় দলের জয় একটিতে। তাই শেষ ম্যাচটি পরিণত হয়েছিল অঘোষিত ফাইনালে। ম্যাচের আগেই বেশ রোমাঞ্চিত ছিল বাংলাদেশ। কারণটা শেষ ম্যাচ সেঞ্চুরিয়ন বলে। আফ্রিকায় লাল-সবুজের ঝাণ্ডা গেড়ে তার প্রমাণও দিলেন তামিম-সাকিবরা। যে আফ্রিকায় জয় পায়নি বাংলাদেশ সেখানে ২-১ এ সিরিজ জয় করলো তারা। সাকিব দেশ ছাড়ার আগে বলেছিলেন অন্তত একটি ম্যাচে জয় চান। কিন্তু দেশকে পুরো সিরিজ জয়ের আনন্দে ভাসাল পুরো টিম টাইগার্স। তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে প্রোটিয়াদের মাটিতে প্রথম জয়ের স্বাদ পাওয়ার পরই ইতিহাস হাতছানি দিয়ে ডাকছিল সাকিব, তামিম, তাসকিনদের। সেটারই ষোলকলা পূরণ করল বাংলাদেশ।
আজ তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে সেঞ্চুরিয়নে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৯ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারাল টাইগাররা। এর মধ্যে দিয়ে প্রথমবারের মতো প্রোটিয়াদের বিরুদ্ধে তাদেরই মাটিতে সিরিজ জিতল লাল-সবুজের দল।
তাসকিনের দুর্দান্ত বোলিংয়ে নাস্তানাবুদ হওয়া দক্ষিণ আফ্রিকা টাইগারদের সামনে মাত্র ১৫৫ রানের টার্গেট দাঁড় করাতে সক্ষম হয়। জবাবে ব্যাট করতে নেমে অনেকটা আয়েসি ঢংয়েই ব্যাট করতে থাকে তামিম ইকবাল ও লিটন দাস। একের পর এক বাউন্ডারিতে রান বেড়েছে তরতরিয়ে। তাতে পাওয়ারপ্লে শেষেই ৫৮ রান তুলে ফেলে তামিম ইকবালের দল।
মাত্র ৫২ বলেই নিজের অর্ধশত রান পূরণ করেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল। এরপর ১২৭ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ৪৮ রানে ফিরে যান লিটন দাস। এরপর জয়টা ছিল মাত্র সময়ের ব্যাপার। সাকিবকে সাথে নিয়ে ৯ উইকেটের বড় জয় নিশ্চিত করে বাংলাদেশ। তামিম ইকবাল অপরাজিত থাকেন ৮৭ রানে এবং সাকিব আল হাসান অপরাজিত থাকেন ১৭ রানে।
এর আগে, টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। ম্যাচের শুরু থেকেই বেশ ফুরফুরে মেজাজে ছিল টাইগাররা। প্রথম ওভারেই শরিফুলের বলে কট-বিহাইন্ডের আবেদন করে বাংলাদেশ শিবির। তবে আল্ট্রা-এজে একটি রিভিউ হারায় বাংলাদেশ।
এরপর ম্যাচের সপ্তম ওভারে প্রথম ব্রেকথ্রু এনে দেন মেহেদি হাসান মিরাজ। লং-অফে মাহমুদুল্লাহর কাছে সহজ ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন ডি কক। ৪৬ রানে প্রথম উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা।
ম্যাচের ১২.৩ ওভারে তাসকিনের বলে কাইল ভেরেইনা ফিরে যান। এরপর আবারও তাসকিনের আঘাত। এবার বাংলাদেশকে হুমকি দিতে থাকা ম্যালানকে ফিরিয়ে দারুণ এক ব্রেকথ্রু এনে দেন তাসকিন। ৬৯ রানে তিন উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে যায় প্রোটিয়ারা।
এরপর সাকিব আল হাসানের দুর্দান্ত ডেলিভারিতে ৪৬ রানে প্রথম উইকেট হারানো দক্ষিণ আফ্রিকা ৭১ রানে হারায় চতুর্থ উইকেট। ফিরে যান দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা।
দক্ষিণ আফ্রিকাকে তাদের বাউন্সারের স্বাদ দিল বাংলাদেশ! আগের দিন বাড়তি বাউন্সে পুড়েছিল বাংলাদেশ, আজ এখন পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানদের পোড়াচ্ছেন বাংলাদেশের বোলাররা। র্যাসি ফন ডার ডুসেনকে বাড়তি বাউন্সেই ‘চুপ’ করিয়ে দিয়েছেন শরীফুল। ১৯ ওভারের মধ্যেই দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসের অর্ধেক শেষ করে দিয়েছে বাংলাদেশ। এবার শরিফুলের শিকার হন ফন ডার ডুসেন।
এরপর শুধুই তাসকিনময় সেঞ্চুরিয়ন। একে একে প্রটিয়াদের পাঁচ উইকেট তুলে নিয়ে একরকম বাংলাদেশের ইতিহাস গড়ার পথটা বোলারদের পক্ষ থেকে একাই করেন তাসকিন। তাসকিনের পাঁচ উইকেটের সাথে সাথে দক্ষিণ আফ্রিকা হারায় ৮ উইকেট। এরপর মাত্র ১৫৪ রানেই গুটিয়ে যায় প্রোটিয়ারা।