ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক, এইউজেডনিউজ২৪: প্রাণঘাতী ভাইরাসে গেল ২৪ ঘণ্টায় নিউইয়র্কে ৪ বাংলাদেশিসহ মারা গেছেন আড়াইশো। সবমিলে ৩০ বাংলাদেশিসহ যুক্তরাষ্ট্রে প্রাণহানি ৩ হাজার ছাড়িয়েছে। মাদ্রিদের অ্যালমুদিনা সিমেট্রি। মা কে শেষ বিদায় জানাতে কফিনের সঙ্গে কেবল মেয়ে। ইতালি-স্পেনসহ দেশে দেশে করোনায় মৃত্যুবরণকারীদের শেষকৃত্যে এমন করুণ দৃশ্য। শেষ বিদায়ের আয়োজনে ২ জনের বেশি অংশ নেয়ার অনুমতি নেই।
আক্রান্তের দিক দিয়ে চীনকেও ছাড়িয়েছে স্পেন। এ অবস্থায় দেশটির সব নার্সিং হোমে চলছে জীবাণুনাশক স্প্রে।
বিশ্বজুড়ে এতদিন করোনাকে কেবল বয়স্কদের জন্য ঝুকিপূর্ণ বলা হলেও, ইউরোপের দেশে দেশে বাড়ছে তরুণদের আক্রান্তের সংখ্যাও। প্রাণও হারিয়েছেন বেশ কয়েকজন। ইতালির অ্যান্ড্রি নেপোলি; রোমের কাসালপালোক্কো কভিড-থ্রি হাসপাতালে ১৪ই মার্চ থেকে শয্যাশায়ী তরুণ আইনজীবী অ্যান্ড্রি নেপোলি।
অ্যান্ড্রি নেপোলি বলেন, ‘আত্মনিয়ন্ত্রণ, বাইরে বের না হওয়া, কারণ এটি মারাত্মক ছোঁয়াচে। যার চিকিৎসাও নেই। এটা আপনাকে এতটাই দুর্বল করবে, যা কল্পনাও করতে পারবেন না। এক রুমে একাকি আমি, কেবল দিনে দুবার চিকিৎসক আসেন।’
সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে প্রাণহানি বেড়েই চলছে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে। মৃত্যুর মিছিল বাড়ছে বাংলাদেশিদেরও। প্রাণহানির তালিকায় আছেন সাংবাদিকও। নিউইয়র্ক ছাড়াও মিশিগান এবং নিউজার্সিতে কয়েকজন বাংলাদেশি প্রাণ হারান কোভিড-নাইনটিনে।
নিউইয়র্কের হাসপাতালগুলোতে কোভিড-নাইনটিন আক্রান্তের উপচেপড়া ভিড়। এ অবস্থায় অন্য রোগীদের চিকিৎসায় নিউইয়র্কে আনা হয়েছে মার্কিন নৌবাহিনীর ‘দি ইউএসএনএস কমফো’ নামে ১ হাজার শয্যার ভাসমান হাসপাতাল। যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে তৈরি হচ্ছে নতুন নতুন ফিল্ড হাসপাতাল।
নিউইয়র্কের মেয়র বিল তে ব্লাসিও বলেন, ‘নিউইয়র্কবাসী নিজেদের নিঃস্ব ভাবছেন। তারা শঙ্কায় আছেন ভবিষ্যৎ নিয়ে। নগরবাসীকে আশ্বস্ত করতে চাই, আপনার একা নন; জাতি আজ আপনাদের পাশে রয়েছে।’
যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও দক্ষিণ কোরিয়াসহ ৭৩ দেশের নাগরিকদের জাপান প্রবেশ এবং জাপানিদের এসব দেশ সফরে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে মেক্সিকোজুড়ে।
ইরানেও থামছেই না প্রাণহানি। এক সহকর্মী আক্রান্তের পর আইসোলেশনে গেছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে সৌদির পর ক্রমেই খারাপ হচ্ছে কাতার ও আরব আমিরাতের পরিস্থিতি।
তুরস্কেও বাড়ছে আক্রান্ত ও প্রাণহানি। মিয়ানমারে প্রথম একজনের প্রাণহানির খবর মিলেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইমার্জেন্সি প্রোগ্রামের নির্বাহী পরিচালক ডা. মাইকেল রায়ান বলেন, ‘লকডাউনসহ সামাজিক দূরত্ব কমানোর মাধ্যমে বিভিন্ন দেশে আক্রান্তের হার কমছে। আমরা আশাবাদী ইতালি ও স্পেন ধীরে ধীরে স্থিতিশীল হয়ে আসছে।’
ভারতে সোমবার রেকর্ড ২ শতাধিক মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। দিল্লিতে তাবলীগের ইজতেমায় অংশ নেয়া ৬ মুসল্লী মারা গেছেন করোনায়। একই অবস্থা পাকিস্তানেও। দেশটির হায়দরাবাদে তাবলীগের ইজতেমায় অংশ নেয়া ৩৬ জনের শরীরে মিলেছে ভাইরাস।সূত্র : চ্যানেল ২৪