ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলায় এক প্রবাসীকে নির্মমভাবে হত্যা করে তার লাশ পুড়িয়ে ফেলার চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (৫ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ৮টার মধ্যে উপজেলার বান্দুরা ইউনিয়নের নয়ানগর এলাকায় এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়।
নিহতের নাম জুয়েল (৩৫)। তিনি নয়ানগর গ্রামের মৃত আজহার ও লায়লার ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন প্রবাসে থাকা জুয়েল সম্প্রতি দেশে ফেরেন। দেশে ফেরার পর থেকেই তার স্ত্রী ঝুমা বেগম (২৫)–এর সঙ্গে পারিবারিক কলহ চলছিল। শনিবার (৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় সেই পারিবারিক বিরোধের জেরে ঝুমা বেগম ও অজ্ঞাতনামা কয়েকজন সহযোগী মিলে পরিকল্পিতভাবে জুয়েলকে গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে হত্যার আলামত গোপন করতে ঘরে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। প্রতিবেশীরা ধোঁয়া ও আগুনের গন্ধ পেয়ে চিৎকার করলে এলাকাবাসী এগিয়ে আসে এবং নবাবগঞ্জ থানায় খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে ও নিহতের লাশ উদ্ধার করে। সংবাদ পেয়ে প্রাথমিক অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ অভিযুক্ত স্ত্রী ঝুমা বেগমকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়।
গ্রেফতারকৃত ঝুমা বেগম উপজেলার নয়নশ্রী ইউনিয়নের পুরান তুইতাল গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের মেয়ে। প্রায় আট বছর আগে তার সঙ্গে নিহত জুয়েলের বিয়ে হয়।
নয়নগর এলাকার বাসিন্দারা জানান, জুয়েল ছিলেন শান্ত, পরিশ্রমী ও ভদ্র স্বভাবের মানুষ। প্রবাসে কঠোর পরিশ্রমের অর্থে তিনি দেশে ফিরে নতুনভাবে সংসার গড়ার চেষ্টা করছিলেন। এমন মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডে এলাকায় নেমে এসেছে শোক ও ক্ষোভের ছায়া। লাশ পুড়িয়ে প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা স্থানীয়দের মধ্যে ভয় ও ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। তারা দ্রুত দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
নবাবগঞ্জ থানার ওসি মমিনুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। নিহতের স্ত্রীকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, পারিবারিক দ্বন্দ্বের জেরেই হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে। তিনি আরও জানান, নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেফতারে অভিযান চলছে। প্রাথমিক আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে এবং ডিজিটাল ফরেনসিকসহ প্রতিবেশীদের সাক্ষ্যের ভিত্তিতে মামলার রহস্য উদঘাটনে পুলিশ কাজ করছে।

