তুরস্কের ইস্তাম্বুলে দেশটির অন্যতম ঐতিহাসিক ও বিশ্বখ্যাত নীল মসজিদ (সুলতান আহমেদ মসজিদ) পরিদর্শন করেছেন পোপ লিও চতুর্দশ। শনিবার সকালে তুরস্ক সফরের তৃতীয় দিনে তিনি প্রথমবারের মতো কোনো মুসলিম উপাসনালয়ে প্রবেশ করেন। ক্যাথলিক চার্চের প্রধান হওয়ার পর এটি তাঁর প্রথম মসজিদ সফর।
মসজিদে প্রবেশের আগে পোপ লিও সম্মানসূচকভাবে জুতা খুলে ফেলেন। এরপর মসজিদের ইমাম, ইস্তাম্বুলের মুফতি এবং প্রধান মুয়াজ্জিন তাঁকে বিশাল আঙিনা ও প্রার্থনাস্থল ঘুরিয়ে দেখান। ১০ হাজারেরও বেশি মুসল্লি ধারণক্ষমতা সম্পন্ন এই স্থাপত্যে ঘুরে দেখতে দেখতে পোপ লিও বেশ হাসিখুশি ছিলেন এবং গাইডদের সঙ্গে কথাও বলেন।
মুয়াজ্জিন আশকিনতুনকা জানান, সফরের সময় তিনি পোপকে প্রার্থনার সুযোগ দেন। তবে পোপ লিও জানান, তিনি শুধু মসজিদের পরিবেশ দেখতে এবং অনুভব করতেই এসেছেন।
ভ্যাটিকান এক বিবৃতিতে জানায়, পোপ লিও “গভীর শ্রদ্ধা ও মনোযোগের সঙ্গে” মসজিদটি ঘুরে দেখেন এবং এটিকে আন্তধর্মীয় সম্প্রীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা হিসেবে দেখেন।
পরিদর্শনের সময় একটি মজার ঘটনাও ঘটে। বের হওয়ার সময় পোপ দেখেন যে তাঁকে এমন একটি দরজা দিয়ে নেওয়া হচ্ছে যেখানে লেখা আছে “No exit” বা “এখান দিয়ে বের হওয়া নিষেধ।” তিনি হাসতে হাসতে বিষয়টি উল্লেখ করলে মুয়াজ্জিন উত্তরে বলেন, “আপনাকে বের হতেও হবে না, আপনি চাইলে এখানে থাকতে পারেন।”
তুরস্ক ও লেবানন সফরের অংশ হিসেবে পোপ লিও আগামী রোববার পর্যন্ত তুরস্কে অবস্থান করবেন। পোপ হওয়ার আগে বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে খুব বেশি পরিচিত না হওয়ায় তাঁর এই প্রথম বিদেশ সফর ঘিরে আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হয়েছে।
নীল মসজিদটি সুলতান আহমেদ প্রথমের শাসনামলে ১৭শ শতকে নির্মিত হয়। এর নীল সিরামিক টাইলস ও অটোমান স্থাপত্যশৈলীর জন্য এটি বিশ্বজুড়ে বিখ্যাত।
এই সফরে পোপ লিও আগের দুই পোপের মতো আশেপাশের বিশ্ব ঐতিহ্য হাগিয়া সোফিয়ায় যাননি। ২০২০ সালে হাগিয়া সোফিয়া পুনরায় মসজিদে রূপান্তরিত হলে ভ্যাটিকানসহ আন্তর্জাতিক মহলে সমালোচনা উঠেছিল।
তবে নীল মসজিদ পরিদর্শনের মধ্য দিয়ে পোপ লিও মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক জোরদার করার বার্তা দিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
সূত্র: আল-জাজিরা

