আইন ও আদালত ডেস্ক: কয়েক হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে অভিযুক্ত প্রশান্ত কুমার হালদার (পি কে হালদার) একটি একাউন্টেই ২২৭ কোটি টাকা ঘুষ নিয়েছেন বলে জানিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সহযোগীদের ঋণ দিয়ে ঘুষ হিসেবে এ টাকা তার ব্যাংক এশিয়ার ধানমন্ডি শাখার একটি একাউন্টে এসেছে। দুদকের উপপরিচালক গুলশান আনোয়ারের তদন্তে এমন তথ্য এসেছে। সোমবার সকালে এমন তথ্য জানিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
তদন্ত সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, তদন্তে আরও দুর্নীতির তথ্য বেরিয়ে আসবে। এরই মধ্যে ইন্টারন্যাশনাল লিজিংসহ চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা ঋণের নামে লোপাটের তথ্য পেয়েছে দুদক। পিকে হালদার এবং তার সহযোগীরা এসব দুর্নীতিতে জড়িত ছিলেন। ঋণ জালিয়াতির ঘটনায় দুদক এ পর্যন্ত ৩৬টি মামলা করেছে। আরও একডজন মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
এর আগে, কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকা লোপাট করে পালিয়ে থাকা প্রশান্ত কুমার হালদারকে পশ্চিমবঙ্গ থেকে গ্রেপ্তার করে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা। দিনভর কলকাতা ও উত্তর ২৪ পরগনার অন্তত ১০টি জায়গায় অভিযান চালায় দেশটির তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট-ইডি।
ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা বলছে, বাংলাদেশ থেকে হুন্ডির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা পাঠিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় পিকে হালদারের জমি-বাড়ি কেনার খোঁজ পেয়েছেন তারা।
প্রাথমিক তথ্যে ভারতে পিকে হালদারের ২০ থেকে ২২টি বাড়ি রয়েছে। এসব সম্পদ গড়ে তুলতে তাকে সহযোগিতা করেছে তার আয়কর আইনজীবী ভারতের সুকুমার মৃধা। তাকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শনিবার (১৪ই মে) পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগর থেকে গ্রেপ্তারের পর বাংলাদেশের হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ মামলার মূলহোতা পি কে হালদারকে ভারতের একটি আদালতে তোলা হয়। পরে আদালতের বিচারকরা তাকে মঙ্গলবার পর্যন্ত ইডি হেফাজতে পাঠিয়ে দেন।
পি কে হালদার এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক। এই দুই প্রতিষ্ঠান ছাড়াও আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তদন্ত শুরু করার পর তিনি কানাডায় পালিয়ে যান বলে ধারণা করা হয়েছিল। ২০১৯ সালের ২৩শে অক্টোবর বেনাপোল বন্দর দিয়ে পালিয়ে যান পিকে হালদার।