প্রতিবছর ১৫ মার্চ বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস পালিত হয়। এ বছরও বিশ্বের অন্যান্য দেশে গুরুত্ব দিয়ে দিনটি পালন করা হবে। তবে এবার জাতীয় দিবসের তালিকায় না থাকায়, দেশে ভোক্তা অধিকার দিবস পালন করা হচ্ছে না।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলীম আখতার খান বৃহস্পতিবার যুগান্তরকে বলেন, উপদেষ্টা পরিষদ এবার জাতীয় দিবসে দিনটি তালিকায় না রাখায়, দেশে ভোক্তা অধিকার দিবস পালন করা হচ্ছে না। তিনি বলেন, ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস। এটা মাত্র একটি দিন। আর ভোক্তার জন্য প্রতিদিনই ভোক্তা অধিকার দিবস। কারণ ভোক্তা প্রতিদিনই ঠকছেন।
এদিকে সিন্ডিকেটের বাজারে প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছেন ভোক্তা। অসাধুর কারসাজিতে হঠাৎ নিত্যপণ্যের দাম নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। এমনকি কিছু পণ্য করা হচ্ছে উধাও। পাশাপাশি জীবনরক্ষাকারী ওষুধ বিক্রিতেও নানা ছলচাতুরী করা হচ্ছে। আর এতসব প্রতারণা মেনে নিয়েই নিজেদের অসহায়ত্ব প্রকাশ করছেন ভোক্তা।
কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এসএম নাজের হোসাইন যুগান্তরকে বলেন, বিপ্লবী সরকারের এমন সিদ্ধান্তে আমরা হতাশ। প্রতিদিন ভোক্তা ঠকছেন। আমরা প্রতিদিন ভোক্তার স্বার্থ নিয়ে কথা বলছি। দিবসটি ঘিরে অধিকারবঞ্চিত ভোক্তার কথা সরকারের কান পর্যন্ত পৌঁছানো যেত।
তিনি বলেন, দিবসটি রাখার জন্য আমরা সচিব বরাবর আবেদনও করেছিলাম। যেখানে বিশ্বের অন্যান্য দেশ গুরুত্ব দিয়ে দিনটি পালন করবে, আর আমাদের দেশে দিবসটি রাখা হয়নি। এতে ভোক্তারা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন।
এ বছর দিবসটি না থাকায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কোনো ধরনের কর্মসূচি রাখেনি। প্রতিদিনের মতোই অধিদপ্তরের কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের নাম কয়েক বছর আগেও ব্যবসায়ীদের জানা ছিল না। নৈরাজ্যের বাজারে তাদের অধিকার সংরক্ষণে আইন হলো, সেই আইনের আলোকে ২০০৯ সালে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরও হলো। মাঝখানে চলে গেছে ১৬ বছর।
প্রাপ্ত তথ্য বলছে, ভোক্তার স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য গঠিত এই অধিদপ্তর কার্যত দেশের ১৭ কোটি মানুষের জন্য কাজ করতে এক প্রকার ব্যর্থ। ১০৮ জন কর্মকর্তা দিয়ে সমগ্র দেশে অভিযান পরিচালনা করার বাস্তবসম্মত কোনো সুযোগও নেই। এর মধ্যে ঢাকায় আড়াই কোটি মানুষের জন্য কর্মকর্তা রয়েছেন মাত্র পাঁচ থেকে ছয়জন।