সিলেটে সাদাপাথর লুটপাটে জড়িত প্রভাবশালীদের নাম আলোচনায় থাকলেও গ্রেপ্তার তো দূরের কথা, তাঁদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত মামলা হয়নি। তবে পুলিশ বলছে, পাথর লুটের ঘটনায় যাঁরা শনাক্ত হচ্ছেন, তাঁদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে, গতকাল শনিবার সদর ও গোয়াইনঘাট উপজেলায় অভিযান চালিয়ে ২ লাখ ৬৫ হাজার ৫০০ ঘনফুট পাথর উদ্ধার করেছে যৌথ বাহিনী। এর বাইরে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায়ও অভিযান হয়। গত চার দিনে তিন উপজেলায় সাড়ে ৪ লাখ ঘনফুট পাথর উদ্ধার হয়। সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ বলেন, লুট হওয়া পাথর উদ্ধারে যৌথ বাহিনী অভিযান চালাচ্ছে। লুটে জড়িত ব্যক্তিদের একটি প্রাথমিক তালিকা পুলিশ, র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী করেছে। এখন যাচাই–বাছাই করে প্রকৃত দোষী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করার কাজ চলছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একজন কর্মকর্তা জানান, পাথর লুটপাটকারীদের তালিকায় লুটপাটে পৃষ্ঠপোষক হিসেবে রাজনৈতিক দলের নেতা ও এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি থেকে শুরু করে সরাসরি জড়িত ব্যক্তিরা আছেন। পাশাপাশি লুটপাটে ব্যবহৃত বারকি নৌকার মালিক এবং পাথর ক্রয়-বিক্রয়ে সম্পৃক্ত ব্যক্তিরাও আছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রাথমিকভাবে তৈরি করা ১০৩ জনের একটি নামের তালিকা গতকাল কাছে এসেছে। তাৎক্ষণিকভাবে এটি ঘেঁটে ৪৬ জনের পরিচয় বের করা হয়েছে। লুটে তাঁদের জড়িত থাকার বিষয়টি স্থানীয় একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। পরিচয় নিশ্চিত হওয়া ৪৬ জনের মধ্যে ২০ জনই স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মী। এ ছাড়া তালিকায় কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ১৩ জন নেতা-কর্মী আছেন। এ তালিকায় বিএনপির ৬ জন নিষ্ক্রিয় নেতা–কর্মী আছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন সংগঠক এবং একজন সাংবাদিকের নামও আছে। বাকি পাঁচজন নির্দলীয়। সিলেটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে একটা তালিকা তৈরি হয়েছে। এটি যাচাই–বাছাই শেষে চূড়ান্ত করা হবে। এরপর দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত সব পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তবে যেসব অভিযুক্ত শনাক্ত হচ্ছেন, তাঁদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।’
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় সাদাপাথর লুটের ঘটনায় গতকাল ভোরে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত শুক্রবার হওয়া খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরোর একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাঁদের আদালতে পাঠানো হয়।